পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مسواتي (NC প্রবাসী SNこ8ミ দেশের স্থূলকায়া মহিলাগণ র্যারা সুন্দর গড়নের পক্ষপাতী, তারা এই রকম হাত-নাড়া অভ্যাস করে দেখতে পারেন। কলের সমস্ত মহিলা-এমিক সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পৰ্য্যন্ত সমানে কাজ করছে। মধ্যে জলযোগের জন্য বোধ হয় দু-এক ঘণ্টা বিশ্রামের সময় দেওয়া হয়। ফ্যাক্টরীর অধ্যক্ষ কিছু সদ্যঃপ্রস্তুত বিস্কুট আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। এর স্বাদ সাধারণ বিস্কুট থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের। লগুনের জেরাভ ষ্ট্রীটের সোফিস রেস্তরণ নামে এক হোটেল আছে। এই হোটেলের অধ্যক্ষ যিনি ছিলেন তিনি মুসলমান, তার নামে এই রেস্তর। সোফিস রেস্তর নাম দিয়ে তার বিধবা ইউরোপীয়ান স্ত্রী এখন চালাচ্ছেন। এখানে ওয়েটাররা সকলেই ভারতবর্ষীয় মুসলমান। মাছের কালিয়া, কারী, পাতুড়ী, মাংসের কোপ্ত কাবাব, সামীকাবাব, বিরিয়ানী পোলাও, লুচী, দু-রকমের চপ, রুটা পরটা জিলিপী ও ছানার পিঠা সব তৈরি হয়। সব জিনিষ খুব গরম গরম দেয়, ব্যবহার খুব ভদ্র। আমরা এক দিন গরম কচুরী ও বেগুন-চিংড়ী তরকারী খেয়েছি। রান্না মন্দ নয়। এই হোটেলে খেতে গিয়ে দেখেছি যতটা খেতে পারব আশা ক'রে টেবিলে বসেছিলুম, তার সিকি ভাগও খেতে পারলুম না। দুখানা রুটি খেয়েই পেট যথেষ্ট ভরে গেল। কিন্তু আমাদের দেশে যে-সব সাহেব চাকুরী করতে আসেন তাদের কারি ভাত খেয়ে খেয়ে মুখের তার এমন হয়েছে, যে, এখানে এসে তাদের আর এ দেশের খাওয়া পছন্দ হয় না। আমি যেদিনই এই হোটেলে খেতে যে তুম, ভারতবর্ষীয় লোক অপেক্ষা এই ধরণের সাহেবমেমের ভীড় ও খাওয়ার আগ্রহ বেশী দেখেছি। আমাদের চার জনের খাওয়া তাদের এক জনকে খেতে দেখেছি। এখানে খাওয়ার খরচা একটু বেশী পড়ে। জন-পিছু চার শিলিং (অর্থাৎ দু-টাকা বারো আনা ) ক'রে ত বটেই। আমরা এক দিন ক্রয়ডন, ঈষ্টবোর্ণ ও ব্রাইটন দেখে এসেছি। ক্রয়ডন থেকে এরোপ্লেনে লোকে করাচী পর্যন্ত যায়। ঈষ্টবোর্ণ ও ব্রাইটন সমুদ্রের ধারের জায়গা। ঢেউয়ের লাফালাফি নেই, সমুদ্র কিছু ম্যাদামার-গোছের। লোকে এখানে সান-বাথ করবার জন্য আসে । একদিন কেন্থি জ বেড়াতে গেলুম। দশ-বারোটি কলেজ নিয়ে এই কেন্থিজ বিশ্ববিদ্যালয়। কিংস কলেজ, ইম্যামুয়েল কলেজ, ডাউনিং কলেজ ইত্যাদি দেখলুম। ছাত্রদের প্রতি কড়া আদেশ জারি করা অাছে রাত্রি দশটার পর প্রকাশ, রাজপথে বেরুলে হোষ্টেলের অধ্যক্ষের কাছে তার জন্ম: জবাবদিহি করতে হয়। সাতার, ফুটবল, দৌড়বীপ ইত্যাদিতে কেন্থিজ সৰ্ব্বদাই উৎসুক। কিংস কলেজ ইংলণ্ডেল রাজা অষ্টম হেনরী নিৰ্ম্মাণ করেন। এখানে ইংরেজ কবি বায়রন, টেনিসন প্রভৃতি সকলেই শিক্ষালাভ করেছিলেন। এখানে এদের ছবি আছে। লণ্ডনে প্রায় সব সময় টিপ টপ ক'রে বৃষ্টি হয়। রোদ খুব সামান্তই পাওয়া যায়। যেনি রোদ বেরোয় সেদিন এ-দেশের বড় শুভদিন, ছোট ছেলে-মেয়েরা বগল-কাটা জামা পরে মাঠে বেড়াতে যায়। বড়রা সব কাজকৰ্ম্ম ফেলে যেখানে একটু রোদ পায় সেইখানেই চিৎপাত হয়ে শুয়ে সান-বাথ করে, মাঝারি প্রেমিক ও প্রেমিকার জলের উপর নৌকা-বিহারে যান, আর নবীনাদের ত কথাই নেই, অর্থাৎ লোক যত রকমে পারে আমোদ ক’রে নেয়। কয়েক দিন পর-পর একটু চড় রোদ হওয়াতে গরম বোধ হ’তে লাগল। রাস্তায় এ-সময় হাপি-বয় ধরণের আইসক্রিম-গাড়ীর যাতায়াতের সীমা ছিল না। এই সামান্ত গরমেই লোকে অস্থির হয়ে উঠল, খবরের কাগজে খুব বড় বড় হরফে হিট ওয়েভ’ সম্বন্ধে লেখালিথি স্বরু হ’ল। সাতারের পোষাকের দোকানে খুবই কার্টুতি । মেয়ে-পুরুষ সকলেই রীজেণ্ট পার্কের জলাশয়ে সারাদিন সাতার দিলে । একটি মেয়ে এক দিন গরম সহ করতে না পেরে প্রকাপ্ত দিনের আলোতে ট্রাফালগার স্কোয়ারের ফোয়ারার জলে নামে । পুলিস তাকে ধরেছিল শুনেছি। এক দিন এখানকার কিউ গার্ডেনে বেড়াতে গিয়েছিলুম। দেখতে আমাদের বোটানিক্যাল গার্ডেনের মত, চতুদিকে ফুলের খুব বাহার, একটি প্যাগোড়াও আছে। লণ্ডন শহর থেকে প্রায় ত্রিশ মাইল দূরে একটি পশুশালা আছে। এটির নাম হুইপ স্লেড জুলজিক্যাল গার্ডেন। পশুপক্ষীদের সব খোলা রাখা হয়েছে। এটি দেখতে সারাদিন কেটে গিয়েছিল । বেশ দেখবার জিনিষ। বেশী শীতের সময় শুনলুম জন্তুজানোয়ারগুলিকে লণ্ডন শহরের রীজেণ্ট পার্কের পশুশালায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রীজেণ্ট পার্কের পশুশালা দেখেছি, মন্দ নয় । এখানে বাঘ ও সিংহকে খাবার দেবার সময় কাচা