পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مساواتيN& প্রবাসী $N98R লোকাৰ্ণে কনফারেন্সে পোল্যাণ্ডের প্রতিনিধি এই স্বাদেশিকতাকে মানবপ্রীতিদ্বারা বিস্তৃত করিবার প্রস্তাব botton of ol of olfowo, ‘Love of country must be augmented by the love of humanity’ কিন্তু তা হয় নাই, কারণ ক্ষুদ্র স্বার্থের আবেষ্টনীর মধ্যে বন্ধাবস্থায় শোচনীয় আত্মহত্যাই বোধ হয় ইউরোপের বিধিলিপি। বিগত মহাযুদ্ধের পর হইতে পৃথিবীতে স্বার্থ ও শক্তি সমন্বয় জন্ত জাতিসঙ্ঘের সমস্ত চেষ্টাই একে একে ব্যর্থ হইয়াছে আস্তরিকতার অভাবে এবং ক্ষুদ্র স্বার্থ ও নীচ অভিসন্ধির প্রভাবে । জার্মান যুদ্ধের পূর্ব সময়ের তুলনায় সমর-সম্ভারের অতিবৃদ্ধি ভাবী মহাপ্রলয়ের পূর্বাভাসরূপে সমগ্ৰ জগতকে সন্ত্রস্ত করিয়া রাখিয়াছে। বিগত মহাসমরের মধ্যেই মনীষিবৃন্দ এই ক্রমবর্ধমান শোণিত-পিপাসার চুড়ান্ত বিকাশ অনুমান করিয়াছিলেন। এমন কি দার্শনিক বার্গসোর দ্যায় ব্যক্তিও আশ্বস্ত হৃদয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছিলেন যে, মহাযুদ্ধের পর পৃথিবীময় ধর্থের বন্য প্রবাহিত হইবে। কিন্তু এখন দেখা ধাইতেছে যে, মহাসমরের অজস্ৰ শোণিতক্ষয়ের পর সামান্ত বলাধানের ফলেই ইউরোপের হিংস্র প্রকৃতিতে আবার ভীষণতম সমর-প্রেরণা দেখা দিয়াছে। ভাবী-সংঘর্ষের ব্যাপকতা ও ভীষণতার পরিকল্পনায় বিশ্বের মনীষিমণ্ডল শিহরিয়া উঠিয়াছেন। নানা ছন্দে উচ্চারিত র্তাহাদের সাবধান বাণী কিছুতেই এই প্রলয়ঙ্করী মৃত্যুমাদকতার সমৃদ্ধবেগ সংযত করিতে পারিতেছে না। সৰ্ব্বাপেক্ষা আশঙ্কা ও নিরাশার কথা এই যে, পাশ্চাত্য সভ্যতার অতপণীয় ভোগলালসার বিরুদ্ধে পৃথিবীময় যে প্রতিক্রিয়া চলিতেছে, তাহাতেও সংঘর্ষমূলক স্বাতন্ত্র্যের ভাবই প্রাধান্ত লাভ করিয়াছে। এই সব আন্দোলনের সাফল্যেও কোনরূপ ভাবাস্তরের আশা নাই। প্রাণপ্রবাহের স্বাভাবিক উৰ্দ্ধগতি প্রতিরুদ্ধ হইয়াছে বলিয়া বেলাহত সমুদ্রতরঙ্গের মত প্রতিহত প্রাণশক্তি অসহ ক্রদনে গতিপথ খুজিতেছে। সকলদিকে বস্তুর পাষাণু-প্রাচীরে বাধাপ্রাপ্ত হইয় প্রাণধৰ্ম্ম কবি গাহিয়াছেন, চতুর্দিকে মোর, একি কারাগার ঘোর ; বস্তুর ভারে প্রপীড়িত হইয়া কবিলম্রাট রবীন্দ্রনাথ লিখিয়াছেন, t ‘দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর, লও যত লৌহ লোষ্ট্ৰ কাষ্ঠ ও প্রস্তর, ছে নব সভ্যতা ! হে নিষ্ঠুর সর্বগ্রাসী, দাও সেই তপোবন পুণ্যচ্ছায়ারাশি, গ্লানিহীন দিনগুলি, সেই সন্ধ্যাস্নান, সেই গোচারণ, সেই শাস্ত সামগান, নীবার ধাস্তের মুষ্টি, বল্কল বসন, মগ্ন হয়ে আত্মমাঝে নিত্য আলোচন মহাতত্ত্বগুলি ! পাষাণ পিঞ্জরে তব, নাহি চাহি নিরাপদে রাজভোগ লব ; চাই স্বাধীনতা, চাই পক্ষের বিস্তার বক্ষে ফিরে পেতে চাই শক্তি আপনার, পরাণে পশিতে চাই ছিড়িয়া বন্ধন অনন্তু এ জগতের হৃদয়স্পগনে।” প্রবৃত্তির অতি-মস্থনে এই যে মৃত্যুগরল উৎপন্ন হইয়াছে, মহেশ্বরের সস্তান ভিন্ন কাহারা স্বেচ্ছায় এই কালকূট পান করিয়া স্বষ্টি রক্ষা করিবে ? দগ্ধ বিশ্বের উপর হৃদয়ের স্নিগ্ধত ঢালিয়া কাহারা উহাকে শীতল করিবে ? জীবনের বিশ্বরূপ জুলিয়, বাহিরে এই যে মানুষ—ধনের, জ্ঞানের, গুণের, শক্তির সহস্ৰ ব্যবধান রচনা করিয়া মৃত্যুর পথে চলিয়াছে, সমস্ত মায়িক বৈষম্যের অন্তরের সেই মহান ঐক্যকে আবিষ্কার করিবার সাম্যবাদী সাধকগণ কোথায় ? যাহারা এই ইহকালসৰ্ব্বস্ব জড়বাদের প্রবর্তক, কামতন্ত্রের নিলজ সাধনা ও মিথ্যা মন্ত্রের বিমূঢ় উপাসনা-পদ্ধতি প্রচলিত করিয়াছিল তাহার চলিয়া গিয়াছে। ইহার বর্তমান নিষ্ঠাবান অল্পবৰ্ত্তকগণও অসংখ্য সমস্ত দায়স্বরূপ রাখিয়া একদিন চলিয়া যাইবে । কিন্তু আজিকার নিরপরাধ যুবকের ভবিষ্যৎ জীবন অকারণে সকল শাস্তি ও আনন্দ হইতে বঞ্চিত হইয়া কেবল এই সব সমস্তার সমাধান চেষ্টায়ই বিড়ম্বিত হইবে । অধিকার ও দায়িত্ব অভিন্ন পদার্থ। একের অভাবে অন্যের কোনই অর্থ থাকে না । উত্তরাধিকারসূত্রে বর্তমানের এই সব জটিলতার দুর্ভোগের দায়িত্ব যখন যৌবনের, তখন এই অবাঞ্ছনীয় অবস্থার প্রতিকারাধিকারও তাহার স্বতঃসিদ্ধ । আজ বিশ্ব-মহাযৌবনের এই সহজ অধিকারকে শান্ত ও সংযতভাবে প্রয়োগ করিবার সময় আসিয়াছে । বৃহতের সহিত সংযোগসূত্র হারাইয়াই মানুষ আজ দীনহীন হইয়া পড়িয়াছে, মানুষের সর্বতোমুখী জহংস্তুের মধ্যেই অপ্রধান এখন প্রাধান্ত লাভ করিয়াছে এবং তাহাতেই প্রধানের প্রাধান্তও নষ্ট হইয়াছে। ইহারই নাম বিপৰ্য্যয় ।