পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ বর্তমান সভ্যতা ও ক্ষয়রোগ ጬግ ইংলণ্ডে রোগীর মঙ্গলের জঙ্গও একটি গিনিপিগ হত্যা করিতে হইলে বহুপ্রকার চেষ্টা করিতে হয় ও বহু আইন মানিয়া চলিতে হয় । সম্ভবতঃ, সভ্য দেশে মানুষের প্রাণ অপেক্ষা গিনিপিগের প্রাণের মূল্য বেশী। সভ্য জগতে শিশুজীবনের প্রারম্ভ এইরূপ। শিশু রোগাক্তাস্ত হইয়া রহিল। যখন যৌবন আসিল, তখন আর একবার তাহাদের অদৃষ্ট পরীক্ষার অবসর আসিল। এই দ্বিতীয়বার যদি তাহারা অধিক পরিমাণে জীবাণু গ্রহণ করিতে পারে, অথবা অনাহার, অসংযম, অতিপরিশ্রম, দুঃখ, শোক, দূষিত বায়ু, স্বৰ্য্যালোকের অভাব প্রভৃতির দ্বারা শরীরের রোগনিবারণী শক্তি এমনভাবে লোপ করিতে পারে যে, শৈশবে প্রথম যে-রোগ আক্রমণ করিয়াছিল কিন্তু শরীর তাহাকে দমন করিয়া রাখিতে পারিয়াছিল তাহ পূর্ণ বিক্রমে পুনরায় আক্রমণ চালায়, তাহা হইলে আমরা তাহাদের শরীরে ক্ষয়ুরোগের যে সৰ্ব্বজনপরিচিত রূপ, তাহার প্রকাশ দেখিতে পাই। আমাদের দেশের স্ত্রীজাতির অনেকের পক্ষে ইহা এক অশুভ কাল । তাহারা তখন অন্তরূপ জীবনে পদার্পণ করিতেছে । আর ক্ষয়ুরোগের সর্বাপেক্ষ অধিক বিক্রম জীবনের এই সন্ধিক্ষণেই । যাহার সেই কাল অতিক্রম করিতে পারিল, তাহারা যদি পরে সম্পূর্ণ নিরাপদ হইতে পারিত, তবুও কিছু মঙ্গল ছিল। কিন্তু তাহ অসম্ভব । শৈশবেই যাহার অঙ্কুর শরীরে স্থান পাইয়াছে, শারীরিক কিঞ্চিত্মাত্র ক্রটি পাইলেই তাহার বিস্তার আরম্ভ হইবে । শৈশবাবস্থায়ই অধিকসংখ্যক লোক এই ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়। তাহার দ্বিতীয় আক্রমণ নির্ভর করে দেশের স্বাস্থ্যসহায়ক প্রতিষ্ঠান এবং তাহাদের কার্যকলাপের উপর । যে দেশে স্বাস্থ্যরক্ষাকাৰ্য্য ভালভাবে অনুষ্ঠিত হয়, কৰ্ম্মীগণ প্রেরণা লইয়া কাজ করেন, সে দেশে দ্বিতীয় ও প্রধান আক্রমণ সহজে ঘটিতে পারে না । ষে দেশে উহার শৈথিল্য যত বেশী সে দেশে ক্ষয়রোগের বিস্তারও সেই পরিমাণে অধিক । কি উপায়ে উহার গতি শমিত করা সম্ভব, র্যাহাদের উপর ইহার ভার গুস্ত র্তাহারা তাহা ভালরূপেই জানেন। একটু লোকপ্রীতি ও একটু বেণী উৎসাহ লইয়া কাৰ্য্য করিলে উই'র গতি ষে প্রশমিত হুইবে সে-সম্বন্ধে কোনও সন্দেহ নাই। কেননা প্রতি দেশেই ইহা ক্রমে কমিয়া আসিতেছে । তথাপি একবার উপায়গুলি বিবৃত করিব, এবংতাহ তথাকথিত সভ্যতার মাপকাঠিতে সৰ্ব্বাপেক্ষা সভ্যদেশ যে আমেরিকা তাহার বুহত্তম শহর নিউইয়র্কের বৃহত্তম ক্ষয়রোগ-শিক্ষাকেজের অধ্যাপক প্রফেসার এডলফাস ক্লফের ভাষায় প্রকাশ করিব, “সৰ্ব্বপ্রথমেই জনসাধারণকে ক্ষয়রোগ নিবারণ সম্বন্ধে শিক্ষাদানের অধিকতর চেষ্টা করিতে হইবে । ক্ষয়রোগগ্ৰস্ত জনকজননীকে বুঝাইতে হইবে যে রোগের সক্রিয় অবস্থায় সস্তানজনন অনুচিত। সস্তানগণকে মাতৃদুগ্ধ দানের প্রেরণা মাতার মনে জাগাইতে হইবে। কৈশোরে শ্রমিকের কার্ষ্য দেশের পথে অমঙ্গলজনক বলিয়া বর্জন করিতে হইবে। স্কুলে পুরাতন শিক্ষাপ্রণালী উচ্ছেদ করিয়া নূতন ঈষৎ পরিবৰ্ত্তিত গ্যারী প্রণালী প্রবর্তন করিতে হইবে এবং তৎসহিত উন্মুক্ত বায়ুতে অধিক সংখ্যক ক্লাস হওয়ার ব্যাবস্থা থাকিবে। কারখানার আবহাওয়া স্বাস্থ্যজনক করিতে হইবে। বস্তিসমূহ এবং বাসকক্ষগুলি পর্যবেক্ষণ করিয়া দেখিতে হইবে উহু স্বাস্থ্যের গ্লানিজনক কিনা। লোকহিতৈষণ লইয়া এবং রাষ্ট্র-শক্তির সাহায্যে চেষ্টা করিয়া গ্রামে চাষীর জীবন স্বথ ও শান্তিময় করিয়া তুলিয়৷ জনসাধারণকে শহর হইতে গ্রামে যাইতে উৎসাহিত করিতে হইবে । শ্রমিক-সাধারণের বীমা করা বাধ্যতামূলক করিতে হইবে "* দেশে নানা সমস্তা। কিন্তু কীটপতঙ্গ ও জীবাণুর সহিত অবিরত সংগ্রাম করিয়া আমাদের জীবনধারণ অসম্ভব হইয়া উঠিতেছে। সম্ভবতঃ কেবল মাত্র মানবকে ধ্বংস করায় কি মানবের শক্তির শ্লাঘা ? ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কীট, পতঙ্গ, জীবাণু অলক্ষ্যে আনন্দ করে, করতালি দেয়, মানবের শক্তিকে উপহাস করে। অদৃশু দশক প্রকৃতিদেবী মহানন্দে দেখিতেছেন মদোন্মত্ত সিংহকে মশক বিনাশ করিয়া যাইতেছে। আমাদের কি করিবার কিছুই নাই ?

    • Among the first things, we must have a more intensive antituberculosis education among the masses. We must teach tuberculous parents not to procreate while actively diseased; encourage breast-feeding; do away with child labor as a curse of the nation; replace the old type of school curricula by a modified Gary System, including more open air classes; improve factory hygiene. We must institute sanitary supervision of tenement and lodging, encourage migration from city to country, by making farm life more profitable and attractive through wise statesmanship and philanthropy. Compulsory insurance of all working people.”