পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ সমর্থ হয় । খনিজ তেল বন্ধ হইলে যুদ্ধের জন্য ব্যবহৃত ইটালীর জাহাজ, মোটর লরি ও আরোহী গাড়ী, এরোপ্লেন ও ট্যাঙ্ক অচল হইবে । কিন্তু ইটালীর তেল প্রাপ্তি বন্ধ করিলে ইটালী যুদ্ধ করিবে (প্রধানতঃ ব্রিটেন ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ) বলিয়াছে। তাঁহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিলে শেষ পৰ্য্যন্ত ইটালীর হারিবার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ইটালীর এরোপ্লেনের সংখ্যা খুব বেশী। সুতরাং শেষে যাহাঁই ঘটুক, সদ্যসদ্য ইটালী ব্রিটেন ও ফ্রান্সকে বিব্রত করিতে সমর্থ। বোধ হয় এই কারণে ব্রিটেন ও ফ্রান্স লীগের মারফৎ ইটালীর উপর খুব চাপ দিতেছে না। খুব চাপ না দিবার আরও কিছু কারণ আছে। ইটালী জামেনী হাঙ্গেরী ও অষ্ট্রিয়ার মারফৎ তেল পাইতে পারে। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সহিত ইটালীর যুদ্ধ ঘটিলে জামেনী ইটালীর পক্ষ অবলম্বন করিতে পারে | খনিজ তেল আমেরিকায় ও রাশিয়ায় খুব বেশী উৎপন্ন হয়। তাহারা যে ব্যবসাবুদ্ধি ছাড়িয়া দিয়া ইটালীর বর্বরতা নিবারণকল্পে ইটালীকে তেল জোগান বন্ধ করিবে এরূপ আশা হয়ত করা যায় না । ধৰ্ম্মনীতি ও আধ্যাত্মিকতার দ্বারা অতুপ্রাণিত ও চালিত মানুষ সব সভ্য দেশেই আছে, কিন্তু এরূপ কোন দেশ এখনও দেখা যায় নাই, যাহার অধিবাসী জাতি ও তাহার গবন্মেণ্ট ধৰ্ম্মনীতি ও আধ্যাত্মিকতার খাতিরে স্বাৰ্থত্যাগ করিতে ও আপনাদিগকে বিপন্ন করিতে প্রস্তুত। সমগ্র মানবসমাজের উন্নতি হইতে হইতে ভবিষ্যতে এরূপ জাতি এবং গবন্মেটিও দেখা দিবে, এই আশা পোষণ করা যাইতে পারে। “বঙ্গীয় শব্দকোষ” আমরা পূৰ্ব্বে কয়েক বার এই বৃহৎ বাংলা অভিধানথানির পরিচয় দিয়াছি ও প্রশংসা করিয়াছি । গত মাসে ইহার উনত্রিংশ খণ্ড ও ৯২০ পৃষ্ঠা পৰ্য্যন্ত প্রকাশিত হইয়াছে। তাহতে “কুলা” শব্দটি পৰ্য্যস্ত ব্যাখ্যাত হইয়াছে। ইহা পূৰ্ববং পাণ্ডিত্য ও যোগ্যতার সহিত সংকলিত ও সম্পাদিত হইতেছে, শাস্তিনিকেতনের ভূতপূৰ্ব্ব অধ্যাপক এবং বর্তমানেও তথাকার অধিবাসী পণ্ডিত শ্ৰীযুক্ত হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় ইহার রচয়িতা ও প্রকাশক। র্তাহার নিকট ইহা বিবিধ প্রসঙ্গ—পৌষের নানা সভাসমিতি (P¥yo(: পাওয়া যায়। ইহার উৎকর্ষ ও প্রয়োজনীয়তা হেতু সমুদয় বিদ্যালয়, কলেজ, বঙ্গের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষিত বাঙালী গৃহস্থের ইহা ক্রয় করিয়া ব্যবহার করা উচিত। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বঙ্গের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ও কলেজে শিক্ষা দেওয়া হয় । এই জন্য এইরূপ একটি অভিধান এই সকল প্রতিষ্ঠানে থাকা আবশ্বক। সম্পূর্ণ হইলে ইহা বাংলা ভাষার বৃহত্তম অভিধান হইবে । কংগ্রেসের ইতিহাস অন্ধুদেশের অন্যতম কংগ্রেস-নেতা শ্ৰীযুক্ত পট্টভি সীতারামায়া ইংরেজীতে কংগ্রেসের যে ইতিহাস লিথিয়াছেন, তাহা বৃহৎ গ্রন্থ। মূল গ্রন্থখানিই হাজার পৃষ্ঠার উপর। তদ্ভিদ স্বচী, কতকগুলি পরিশিষ্ট এবং কংগ্রেসের সভাপতি বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদের লিখিত উপক্রমণিকাতেও প্রায় দেড় শত পৃষ্ঠা লাগিয়াছে । সমুদয় কংগ্রেস-সভাপতির চিত্রও ইহাতে আছে। ইহাতে বিস্তর প্রয়োজনীয় তথ্য আছে। যে কেহ আধুনিক ভারতবর্ষের রাষ্ট্রনীতিসম্বন্ধীয় আন্দোলন ও প্রচেষ্টার বিষয়ে জ্ঞানলাভ করিতে চান, এই বহিটি তাঁহার কাজে লাগিবে। এরূপ বৃহৎ পুস্তকের দাম কেবল আড়াই টাকা রাখায়, ইহাকে ساحة যথাসম্ভব স্থলভ করা হইয়াছে বলিতে হইবে। পৌষের নানা সভাসমিতি আগে পৌষ মাসের দ্বিতীয় তৃতীয় সপ্তাহে ভারতবর্ষে যে-সকল সভাসমিতির অধিবেশন হইত, তাহার মধ্যে কংগ্ৰেসই ছিল সকলের চেয়ে বড় । ১৯২৯ সালে লাহোরে কংগ্রেসের যে অধিবেশন হয় এবং যাহাতে পূর্ণস্বরাজ কংগ্রেসের লক্ষ্য বলিয়া ঘোষিত হয়, তাহাতে স্থির হয়, যে, কংগ্রেসের অধিবেশন অতঃপর শীতকালে না হইয়া ফেব্রুয়ারির শেষে বা মাচ্চ মাসের গোড়ার দিকে হইবে। কিন্তু এ বৎসর ংগ্ৰেস-জয়ন্তী হওয়ায় পৌষেও কংগ্রেসওয়ালার উদ্যোগিতা দেখাইয়াছেন। তা ছাড়া নানা দেশী রাজ্যে, প্রদেশে ও শহরে অন্য বহু সভাসমিতির অধিবেশন হইয়া গিয়াছে । সকলগুলির কার্য্যকলাপের আলোচনা, মাসিকপত্রের কথা দূরে থাকৃ, দৈনিক পত্রের পক্ষেও অসাধ্য হইলেও একটা কথা বলা যায়, যে, দেশে এত রকমের সভাসমিতির অধিবেশন সজীবতার লক্ষণ ।