পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাত্তম ডাকিয়া লইয়া সম্প্রদানের আসরে লইয়া গেলেন। বড়কর্তা উহাকে প্রণাম করিয়া দলিলখানি হাত দিয়া বলিলেন– এটি দয়া করে আপনাকে গ্রহণ করতেই হবে । দক্ষিণে—দক্ষিণে— জেতু, দক্ষিণে নিয়ে এস। ছোটকৰ্ত্ত একটি টাকা বড়কর্ভার হাতে দিলেন। গোসাইজীকে দক্ষিণা দিয়া বড়কর্তা আবার প্রণাম করিলেন । গোসাই দলিলখানা পড়িতে আরম্ভ করিল। ও-দিকে তখন কন্যা সভাস্থ হইয়াছে। সম্প্রদান চলিয়াছে। পাত্ৰকৰ্ত্ত হাসিয়া বলিলেন—বেয়াই মশায় বিবাহ হয়ে গেল, তাই সাহস করছি দেখাতে। দেখুন, একথানা পত্র দেখুন, বেনামী পত্র আপনাদের এখান থেকেই কে লিখেছে। কুটিল লোকে একটা জায়গায় সরল লোকের কাছে হেরে যায়—তারা ভাবে সবাই বুঝি সব কথা গোপন ক’রে রাখে। আপনি যে আমাকে সব কথা বলেছেন তা বেচার বুঝতে পারে নি । একখানা খাম বাহির করিয়া তিনি চৌধুরী-কর্তার হাতে দিলেন। ছোটকৰ্ত্তাও পাশ হইতে ঝুঁকিয়া পড়িয়া চিঠিখান পড়িতে আরম্ভ করিলেন। হুরেকেই ধীরে ধীরে সরিয়া পড়িল—সে মনে মনে চিঠিখানা যেন আবৃত্তি করিতেছিল— মহাশয়, আপনারা মহম্বংশোদ্ভূত, তাই আপনাদের কল্যাণার্থে জানাই—চৌধুরীবাবুরা আপনাদের সঙ্গে প্রতারণা করিয়াছেন। কস্তাটি স্বন্দরী হইলেও ব্যাধিগ্রস্ত, পায়ে ইটুর উপরে শ্বেতকুণ্ঠ আছে। ইতি । চৌধুরীকর্তা বিবর্ণ পাংগুমুখে বলিলেন—বেয়াই— ভগবান— পাত্ৰকৰ্ত্তা বাধা দিয়া বলিলেন—আপনি ত আমায় পোড়া দাগের কথা বলেছেন বেয়াই-ও আমি বিশ্বাস ত করি নি । ब्र७ौन छन्जंशों ՆՖՊ ছোটকৰ্ত্ত বলিয়া উঠিলেন—একই হাতের লেখা—সেজ বৌঠাকরণকেও এমনি এক বেনামী পত্র দিয়েছে- যে আপনার বাড়ির তালা ভেঙে— । কই সে পত্ৰখানা । ছোটকৰ্ত্তার পাশে দাড়াইয়া গোসাই চিঠিখান দেখিয়াছিল, সে বিস্ময়ে হতবাক হইয়া গেল। ছোটকৰ্ত্তা পত্ৰখানা মুড়িতে মুড়িতে বলিলেন—কার হাতের লেখা সন্ধান করতে হবে । বড়কর্তা বলিলেন—ন, ও পত্র পুড়িয়ে দাও। গোসাইয়ের মনে একটা কথা জাগিয়া উঠিল—সে সে-কথাটা কাহাকে বলিবে তাঁহাই ভাবিতেছিল। অবশেষে সে আসিয়া ভাণ্ডারে উপস্থিত হইল। ঘনশুমে তাহাকে দেখিবামাত্র বলিল—শুতুন ত মশায়। গোসাই বলিল—আরে কাগুটা গুনেছ ? এ কিন্তু ভাই তোমার ওই—। রূঢ়ভাবে বাধা দিয়া ঘনতাম বলিল—না, এ কাও আপনার—আমরা জানতে পেরেছি—হরে— মানে, কোন লোক বললে আমাকে । অকল্পিত রূঢ় আঘাতের আকস্মিকতায় গোঁসাই যেন অচেতনের মত অবসর হইয় গেল। সে শূন্তদৃষ্টিতে ঘনশ্বামের দিকে চাহিয়া রহিল। তার পর ধীরে ধীরে সে বিবাহ-বাড়ি ত্যাগ করিয়া পথে নামিল । গভীর অন্ধকারের মধ্যে আকাশের নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে চাহিয়া সে ধীরে ধীরে চলিতেছিল। চোখে তাহার জল আসিল । এমন জঘন্ত হীন মিথ্যা মানুষের বিরুদ্ধে—হায় রে সংসার । কাল কিন্তু ঘনশুমের ভুল ভাঙিয়া দিতে হইবে—এ ওই দেখিতে ভালমানুষ পোষ্ট-মাষ্টারের কাজ—নিজের ভাইয়ের সঙ্গে বিবাহ দিবার জন্ত— নিশ্চয় ওই ! ওই লোকটাই পত্র দিয়াছে ! দত্ত