পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাস্তুন সেবাশ্রম-সভঘ গয়ায় আসিয়া অবধি ষাত্ৰিগণের প্রতি পাণ্ডাদের অত্যাচার অনেক পরিমাণে কমিয়াছে এবং যাত্রীদের অনেক বিষয়ে স্থবিধা হইয়াছে। সেই রাত্রেই বরাবরের জন্য গাড়ী ঠিক করিয়া রাখা গেল। সেভন-সিটার । বরাবর পাহাড় ঘুরাইয়া আনিবে। ভাড়া বারো টাকা লইবে । পরদিন সকাল প্রায় সাতটার সময় আমরা মোটরে বরাবর-গুহা দেখিতে রওনা হইলাম। গাড়ী শহর ছাড়াইয়া রামশিলা-পাহাড়ের পাশ দিয়া পাটনা জাহানাবাদের রাস্তা ধরিয়া চলিল। রাস্তার দুধারে গম, যব, অড়হর প্রভৃতির ক্ষেত। তাহারও ওধারে একদিকে বালুকাময় শীর্ণকায়া ফন্তু এবং অন্য দিকে পাটনা-গয়া লাইন। গয়া হইতে পাঁচ-ছয় মাইলের পর রাস্ত বেশীর ভাগই কঁচা । তাহার উপর আবার বর্ষার সময় গরুর গাড়ী চলিয়া গভীর খাল কাটিয়া গিয়াছে। গাড়ীর চাকা একবার তাহার মধ্যে পড়িলে ঝাকানির অন্ত নাই । চড়িয়া মনে হইতেছিল, বিহারে শুধু এক কেন, যে-কোন যানেই প্রতিমুহূৰ্ত্তে গড়াগড়ি যাওয়ার ষোল-আনা সম্ভাবনা আছে । তবে ভাগ্যগুণে ড্রাইভার নিপুণ হওয়ায় সে সম্ভাবন কাৰ্য্যত ঘটে নাই। এইরূপে প্রায় বার মাইল আসিয়া আমরা পাটনার রাস্ত ছাড়িয়া বেলা-ষ্টেশনের পাশ দিয়া পূৰ্ব্বদিকে চলিলাম। এ রাস্তা আরও খারাপ। স্থানে স্থানে গাড়ী উ ইবার ভয় হইতে লাগিল। দূরে বরাবর গিরিশ্ৰেণী দেখা ধঠ ত লাগিল। প্রায় ছয় মাইল গিয়া উত্তরে এক রাস্ত পাওয়া পেল । ধারে কাঠফলকে লেখা আছে, “টু দি বরাবর এণ্ড না জুনী কেভস্-টু মাইল্‌স।” সৈই রাস্ত ধরিয়া যখন পা ড়ের তলদেশে গিয়া পৌছিলাম তখন বেল প্রায় আটট। এই নে গুহাসকল পাহারা দিবার জন্য সরকার কর্তৃক নিযুক্ত এক চাপরাসী থাকে। সে সব গুহা দেখাইয়া দিতে “ পা, আমাদের নিজেদের পথপ্রদর্শক থাকায় আমরা তঃ র সাহায্য লই নাই। সম্মুখেই এক ছোট ঝর্ণ। দুই পাশে পাহাড় উঠিয়া বরাবর পাহাড়ের প্রাচীন গুহ। সাতঘরোয়ার সম্পূর্ণ গুহ। • প্রবেশ-পথটির ডান দিকে অশোকের লিপি আছে । ՆՑՊ গিয়াছে। মধ্যে বড় বড় পাথরের ফাটলের মধ্য দিয়া ফুল কুল শব্দে ক্ষীণকায় জলধারা নামিয়া আসিয়া তলায় এক কুণ্ডে পড়িতেছে। এই ঝর্ণার নাম পাতালগঙ্গা, জল পরিষ্কার ও মুম্বাছ । এই প্রসঙ্গে বলিয়া রাখা ভাল যে যদি কেহ ভবিষ্যতে এই সকল গুহা দেখিতে আসেন তবে যেন বরাবর পাহাড়, পাতালগঙ্গা যাইবেন বলিয়া গাড়ী ঠিক করেন। নচেৎ গাড়ীওয়ালা তাহাকে এই পাহাড়ের উন্টাদিকে হাতিয়াভোর নামক স্থানে লইয়া যাইতে পারে। তথা হইতে এখানে আসিতে গেলে অনেকটা চড়াই ভাঙিয়া আসিতে হুইবে ও বহু শ্রম পণ্ড হইবে। ঝর্ণর পাশ দিয়া পশ্চিম দিকে পথ পাহাড়ের উপর চলিয়া গিয়াছে। ছিক দিন পূৰ্ব্বে কোন উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী আসিয়াছিলেন বিসমোরিয়া গুহ বলিয়া পৰ্ব্বতগাত্রে স্থানে স্থানে ধাপ কাটা হইয়াছে। তাহাতে উপরে উঠতে কিছু সুবিধা হইয়াছে। আমরা উঠিতে আরম্ভ করিলাম। চারিদিকে কেবল বড় বড় পাথর। মাঝে মাঝে বন্ত ফুল, বৈঁচি প্রভৃতি কঁাটাগাছের ঝোপ । জঙ্গল বলিতে কিছু নাই। এইরূপে প্রায় এক শত ফুট উঠিয়া আমরা এক বিস্তৃত অধিত্যকায় আসিয়া পৌছিলাম। ইহার চারিদিকে পাহাড় উঠিয়াছে। দূরে উত্তর-পশ্চিমে বরাবর গিরিশ্ৰেণীর সৰ্ব্বোচ্চ শৃঙ্গে সিদ্ধেশ্বরনাথ শিবের মন্দির। নীচে হইতে তাহা ছোট সাদা বিন্দুর মত দেখাইতেছিল। সেই রাস্তায় আরও কিছু দূর গিয়া সম্মুখে মুপিয়া বা দরিদ্র কাস্তার (আধুনিক নাম কৰ্ণ চৌপার ; গুহার দ্বার