পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झiक्खन्र জন্মস্বত্ব g●● গুইবার ঘর ছুখানা বেশ বড় আছে, একখানায় তাহারা মাতা ও কন্যায় থাকিবেন, অন্তখানি স্বরেশ্বরের জন্ত প্রস্তুত করা হইল। মমতা বলিল, “ভালই হ’ল মা, বাবার ঘরটা অনেক দূরে, না হলে আমরা ঘরে বসে একটু মন খুলে কথাও বলতে পারতাম না ।” যামিনী মেয়ের কথার উত্তরে শুধু হাসিলেন। তাহার পর বলিলেন, “খোকার ঘরটা বড় ছোট হ’ল, ও তাই নিয়ে আবার হৈ চৈ না করে।” ভাই সম্বন্ধে মমতার সহানুভূতির যথেষ্ট অভাব ছিল। সে স্বন্দর নাসিক কুঞ্চিত করিয়া বলিল, “তা কি করা যাবে এখন । তার ভাল না-লাগে ত সে সামনের মহলে গিয়ে থাক।” যামিনী বলিলেন, “ত কি আর হয় ? একলা ঐ সব কৰ্মচারীদের মধ্যে থাকতে পারবে কেন ?” তাহার পর রান্নার পালা। নায়েব-মহাশয়ের হুকুমে মাছ-মাংস, দুধ-ঘি, যেখানে যাহা সংগ্রহ করা গিয়াছে, সবই নিৰ্বিচারে তাহার লোকেরা আনিয়া হাজির করিয়াছে। যামিনী খানিকখানিক নিজেদের জন্ত রাখিয়া বাকী লোকজনদের মধ্যে বিতরণ করিয়া দিলেন, কারণ এত জিনিষ এক রাত্রে খাইবার ক্ষমতা তাহদের কয়জনের একেবারেই ছিল না। সঙ্গের ঠাকুর উনান ধরাইয়া রান্নাবাল্লার যোগাড় করিতে লাগিল। দাসীরা তাহার সাহায্য করিতে লাগিল। মমতা মাঝে মাঝে মায়ের কাছে আসিয়া জুটিতেছিল, আবার থাকিয়া থাকিয় বারান্দায় বাহির হইয়া যাইতেছিল বা ছাদে উঠিয়া বসিতেছিল। অন্ধকার হইয়া আসিতেছে, বাহিরে কিছু একটা বড় দেখা যায় না। তবু এই ক্ষীণ আলোতেই চোখ বিস্ফারিত করিয়া মমতা কাহাকে যেন আবিষ্কার করিতে চেষ্টা করিতেছিল। কোথায় সে আছে কে জানে ? কাছারি-বাড়ির পরেই আমলা ও পাইকদের পাড়, তাহার পর আসল গ্রামের আরম্ভ। এই গ্রামখানির পরে আরও কত গ্রাম পরে পরে চলিয়া গিয়াছে। কোথায় তাহারা আছে কে মমতাকে বলিয়া দিবে। জিজ্ঞাসাই বা লে কোন লজ্জায় কাহাকে করিবে ? ছায়া ত এই জায়গায়ই নাম করিয়াছিল। কিন্তু এত দিন কি স্বেচ্ছাসেবকের দল একই স্থানে আছে ? না কাজের ঠেলায় অন্ত কোন দিকে চলিয়া গিয়াছে ? ছায়াকে কি অমর চিঠিপত্র লেখে? কে জানে ? তাহা হইলে ছায়ার কাছে কিছু খবর মিলিলেও মিলিতে পারে। কিন্তু তাহাকেই বা খোলাখুলি আমরের কথা কি করিয়া জিজ্ঞাসা করা ধায় ? নীচে হইতে মূখী ঝি চীংকার করিয়া উঠিল, “দিদিমণি নীচে নেমে এস, মা-ঠাকরুশ ডাকছেন।” মমতা নীচে নামিয়া গেল। ঘরদোর ইহারই ভিতর বেশ গোছান বাসযোগ্য হইয়া উঠিয়াছে। যেন মৃন্ময়ী প্রতিমার মধ্যে প্রাণসঞ্চার হইয়াছে। কে বলিবে যে ইহা বহুকাল-পরিত্যক্ত পোড়ো বাড়ি ? মানুষের কণ্ঠস্বরের এমন এক বিচিত্র শক্তি আছে ষে মুহূৰ্ত্তের মধ্যে মাটির সূপকে সে আনন্দের নিকেতনে পরিণত করিতে পারে। যামিনী বলিলেন, “কোথায় একলা গিয়েছিলে মা, অন্ধকারে ? এ সাপথোপের দেশ, এখানে সাবধানে চলাফেরা করতে হয়। অন্ধকারে কখনও কোথাও যেও না ।” মমতা হাসিয়া বলিল, “একটু ছাদে উঠেছিলাম মা । সাপ যে সত্যি কোথাও ছাড়া অবস্থায় ঘুরে বেড়ায়, তা কেমন যেন আমার বিশ্বাসই হয় না। কলকাতায় ত চিড়িয়াখানা অীর সাপুড়ের থলি ছাড়া সাপ কখনও দেখি নি ।” - যামিনী হাসিয়া বলিলেন, “এখানেও বেশী না দেখতে হ'লেই ভাল। অনেক বছর এ দিকে আসি নি, কিন্তু সাপের উৎপাত ছিল তা এখনও মনে আছে।” সদরে এতক্ষণ ধরিয়া স্বরেশ্বরের দরবার চলিতেছিল, এখন বোধ হয় তাহা ভাঙিয়া গেল । আলো-হাতে চাকর র্তাহাকে আগ বাড়াইয়া আনিতে চলিল স্বজিতেরও এতক্ষণ কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। এ-সব ব্যাপার তাহার কাছে একেবারেই নূতন, তাই গভীর মনোযোগ সহকারে সে এতক্ষণ সব ব্যাপার দেখিতেছিল। সভা ভাঙিয়া যাওয়ায় সেও চলিয়া আসিল । ক্লাস্তিতে সুরেশ্বরের শরীর একেবারে ভাঙিয়া পড়িতেছিল, স্ত্রীর খুং ধরিবার মত শক্তিও তাহার অবশিষ্ট ছিল না। ঘরে আলো জলিতেছে এবং পরিপাটী করিয়া বিছানাপাত৷ আছে দেখিয়াই তিনি বৰ্ত্তিয়া গেলেন । তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুইয়া, কাপড় বদলাইয় গুইয়া পড়িলেন। খাবারও