পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झोङ्घन्म জন্মস্বত্ব Ծն:Պ মেয়েদের বসিবার ঘর-রূপে ব্যবহার করা হইতেছে। বুরেশ্বরের ত বাহিরের বৈঠকখানা পড়িয়াই আছে। মুজিতের বসিবার ঘরের কোন প্রয়োজন হইবে না, কারণ এখানে তাহার বন্ধুবান্ধব কেহই নাই, এবং বসিয়া থাকিবার ইচ্ছাও বিশেষ নাই। যে ক'দিন বাধ্য হইয় তাহাকে এখানে থাকিতে হইবে, তাহা সে ঘোড়ায় চড়িয়া, মাছ ধরিয়া, এবং সাতার শিথিবীর চেষ্টা করিয়া কাটাইয়া দিবে বলিয়া স্থির করিয়াছে। মমতা চ খাওয়ার আয়োজনের দিকে চাহিয়া হাসিয়া বলিল, “মা এরা কি মনে করে আমরা রাক্ষস ? এত কখনও খাওয়া যায় ?” যামিনী বলিলেন, “এত যে খাই না তা তারা বেশ জানে। আদর-যত্ন করার আমাদের দেশে এই পদ্ধতি । যা দরকার তার দশ গুণ দিয়ে নষ্ট না করলে যথেষ্ট খাতির করা হয় না।” যামিনী বলিলেন, “ডাক্তার বাবু বেচার বেশ ও মহলে একঘরে হয়ে আছেন। তাকে কিছু খাবার পাঠিয়ে झेि " মমতা বলিল, “আগে ভজাকে জিগগেস কর যে তিনি উঠেছেন কি না।” চাকর খবর দিল যে ডাক্তার বাবু উঠিয়া হাত মুখ ধুইতেছেন। যামিনী ছোট ট্রেতে করিয়া চা ও জলখাবার পাঠাইয়া দিলেন । চ) খাওয়া শেষ করিয়া মা ও মেয়ে আবার ছাদে বেড়াইতে গেলেন। মমতা বলিল, “এলাম ত চলে, এখন দিনগুলো কি ক’রে যে কাটাই তাই ভাবছি। কলেজও নেই, পড়াও নেই, চেনাগুনা মানুষও নেই।” যামিনী বলিলেন, “মানুষ ঢের এসে জুটবে এখন তার জন্যে ভাবনা নেই, তবে তোর তাদের পছন্দ হবে কি ন৷ জানি না, ঠিক কলকাতার কলেজে-পড়া মেয়েদের মত তারা নয়। একটু বেলা হতে দে, তখন দেখিল।” মমতা বলিল, “এখানকার গ্রামের মেয়েরা ত? আমার, উাদের ভালই লাগে মা, তবে বিয়ে হয় নি গুনে তারা এমন আকাশ থেকে পড়ে যে তাতেই বিরক্ত লাগে।” ধামিনী হাসিয়া বলিলেন, “অত অল্পে বিরক্ত হ'লে চলবে কেন ? এখন ত সব জায়গায়ই মেয়েদের বড় বয়সে বিয়ে হয়, লোকের চোখে খানিক সয়ে গেছে । আমাদের কালে, আমরা যেখানে গেছি, লোককে একেবারে চমক লাগিয়ে দিয়েছি। এত বিশ্ৰী লাগত যে কোথাও যেতেই চাইতাম না।” এতক্ষণে পরিবারস্থ পুরুষগুলির যে নিদ্রাভঙ্গ হইয়াছে, তাহার প্রমাণ পাওয়া গেল। স্বরেশ্বর চাকরকে ডাকিতেছেন, মুজিতের সহচর কুকুরটিও একবার চেচাইয়া উঠিল তাহ প্রভূর লাথি খাইয়া কি অন্ত কোন কারণে, তাহা ঠিক বুঝা গেল না। যামিনী নামিয়া আসিলেন । স্বরেশ্বরের কাছে পান হইতে চুণ খসিবার জো নাই, তাহা হইলেই কুরুক্ষেত্র বাধিয়া যাইবে । স্বরেশ্বর উঠিয়া মুখ ধুইতেছেন, চাকর তাহার খাবার ঠিক করিতেছে। স্থানমাহাত্ম্য এমনই যে তিনিও সকালবেলাটায় অকারণেই একটু প্রসন্ন হইয়া আছেন। এমন কি যামিনীকে দেখিয়াও ভ্ৰকুঞ্চিত করিলেন না। মমতা জিজ্ঞাস করিল, “রাত্রে ভাল ক'রে ঘুম হয়েছিল ত বাবা ?” স্বরেশ্বর বলিলেন, “নৃতন জায়গায় তেমন কি আর ভাল ঘুম হয় ? দেখ না কত সকাল উঠে পড়েছি ? এর পর সারাদিন হাঙ্গাম পেয়াতে হবে।” যামিনী বলিলেন, “এক দিনেই বেশী বাড়াবাড়ি না করা ভাল ৷” স্বরেশ্বর বলিলেন, “বড়াবাড়ি করি কি আর সাধে ? একে প্রজারাই পাজি, তার পর এক দল কলকাতার ছোড়া এসে জুটেছে, তাদের উস্কবার জন্যে। সেগুলিকে আবার ঢিট করতে হবে।” ૨૨ স্বানাহার সারিতে একটু বেলা হইয়া গেল । এখানে ঝি-চাকরেও ঠিক সময়মত কাজ গুছাইয়৷ করিতে পারিতেছে না, মনিবরাও সারাক্ষণ ঘড়ির দিকে তাকাইয়া নাই, কাজেই সব কাজের সময়ই খানিক পিছাইয়া যাইতেছে। স্বরেশ্বর সকালে চা খাইয়া বাহির বাড়িতে