পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক মতই বাক হাসি হাসিয়া বলিল, “বন্ধু, আমি তোমার ব্যথার ব্যথ, তোমার দুঃখে সমবেদন জানাতে এসেছি।” মং-বা জিজ্ঞাসা করিল, “তার মানে ?” —মানে অতি সোজা। অর্থাৎ তুমি হতাশ প্রেমিক, আমিও তাই। তবে পার্থক্য এই যে, তোমার আশা কোনদিনই পূর্ণ হবে না ; আমার আশা শীঘ্রই সফল হবে। —বটে ? —ই, ঠিক তাই । মা-খিন তোমার উপর বড় বিরূপ । কোনদিন তোমার নাম পৰ্য্যস্ত মুখে আনতে বারণ করেছে। আর সে আমায় বিয়ে করবে বলেছে । —বিয়ে করবে তোমায় ? —কেন, তোমার বিশ্বাস হয় না ? কিন্তু বাস্তবিকই সে বলেছে বিয়ে করবে—তবে একটু অপেক্ষা করতে হবে, সূত দিন না বেশ টাকা-পয়সা হাতে জমে। তার পর সে সব ভেবে দেখবে । হাঃ হাঃ করিয়া মং-বা হাসিয়া উঠিল,-“ত হ’লে ত সবই ঠিক হয়ে গেছে—কবে হবে বিয়ে ?” মং-বার পরিহাসে ট্রন-অঙ্গ,কিছু উষ্মার স্বরেই জবাব দিল, “হবে, শীগগিরই—যেদিন হবে, তুমিও জানতে পারবে।” সহাস্তে মং-বা জিজ্ঞাসা করিল, “টাকাপয়সাটা জম্বে কবে ?” —তাতেও দেরি হবে না । মী-পিন ত সেজন্যে খুব চেষ্টা করছে। আজকাল রোজই নাচের মুজরায় যাচ্ছে ।” “কি ?” মং-বা গর্জিয় উঠিল ; বলিল, “সে আবার নাচের ব্যবসা ধরেছে ? আমার এতটুকুও বিশ্বাস হয় না, টুন অঙ্গ, তুমি ঘোর মিথ্যাবাদী।” ট্রন-অঙ্গ, তেমনি মিটমিটি হাসিতে লাগিল, বলিল, "ল, বন্ধু, ভুল ; আমার উপর রাগ করা বৃথা । তোমার বিশ্বাস না হয়, এস। চাক্ষুষ প্রমাণ দেখিয়ে দেব।” দন্ত্রচালিতের মত মং-বা উঠিল। যেথায় বহুদিন পূৰ্ব্বে উজ্জল আলোকমালা শোভিত মঞ্চে মাখিনকে সে প্রথম দেপিয়ছিল, সেথায় আজও তাহাকে তেমনই আলোকিত ীিপমালার মধ্যে সজ্জিত দেখিতে পাইল । ৰ-খিন তখন গাহিতেছে ৰঞ্চিত “ওগে, ও দরদী বঁধু, শেষের সেদিন নয়নের জলে এসে দেখা দিও শুধু ; হে মোর দরদী বঁধু!” নৃত্যের তালে তালেসে যেন আপনাকে ঢালিয়া দিতেছিল; সঙ্গীতের মূর্ছনায় সে যেন আপনার সত্তা ভুলিয়া গিয়াছিল। পূজারিণীর প্রাণের নৈবেদ্য কাহার উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত হইতেছিল, তাহা সে-ই জানে । মং-ব জনতার পশ্চাতে দাড়াইয়া সমস্তই দেখিল, সবই শুনিতে পাইল । তাহার চক্ষুকৰ্ণ সমস্তই দেখিতেছে শুনিতেছে বটে, কিন্তু মস্তিক্ষে কোন ধারণাই আসিতেছে না। যেন কোন দূরাগত কণ্ঠস্বর বহু দিবসের অতীত স্মৃতি-- একসঙ্গে এক ঝাকে সমস্ত আনিয়া দিয়া তাহার মাথায় গণ্ডগোল পাকাইয়া দিল। সে তাহাতে শুধু স্তম্ভিত হইয়া দাড়াইয়া রহিল । সাম্নে কি হইতেছে, যদি কেহ তাহাকে জিজ্ঞাসা করিত, তখন হয়ত সে সে-কথার উত্তরই দিতে পারিত না ! - রাত্রি অধিক হইয়াছে -জনতা কমিয়া যাইতেছে। এমন সময় মা-খিন হঠাৎ মং-বাকে দেখিতে পাইল। কি হইয়া গেল তাহার মধ্যে কেহ জানিতে পারিল না। কিন্তু শরীরে যেন একটা প্রকাণ্ড ঝাকুনি দিয়া উঠিল—কণ্ঠস্বর বিরুত হইয়৷ গেল—উৰ্দ্ধালোড়িত হস্ত অবশ হইয়া পড়িল – চরণ থামিয়া গেল –থর থর কঁাপিয়া মা-থিন মঞ্চের উপর বসিয়া পড়িল । —সহসা অৰ্দ্ধপথে আনন্দের অবসান হইল । 舉 臺 籌 রাত্রিশেষে নিস্তন্ধ গৃহে ম-খিন ডাকিল, “ঢ়ন-অঙ্গ, ভাই ।” বড় দুৰ্ব্বল সে-শয্যা হইতে উঠতে পারে না-মাথাটা এখনও ঝিম্ ঝিম্ করিতেছে। অতি অসহায় দীনভাবে মা-খিন কহিল, “টুন্‌-অঙ্গ, ভাই, আমার সব শেষ হয়েছে।" শিয়রে নির্বাক্ বসিয়া টুন-অঙ্গ, । যদি সাধারণ অবস্থায় মা-থিনের এই আক্ষেপোক্তি সে আজ শুনিতে পাইত, তাহা হইলে বোধ হয় তন্মুহুর্তে তাহার বুকে ছুরি বসাইয়া দিতে এক বিন্দুও দ্বিধা করিত না। কিন্তু তাহার এই কাতর