পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوادوي —বসই না বাপু একটু। উমার হান্তদীপ্ত মুখ দেখিতে যেমন ভাল লাগে, তাহার ৰৌতুকম্ভর কণ্ঠস্বর শুনিতে তেমনি বেদন বোধ হয়। অরুণ ভাবে, কেন এ অভিনয় । উমা ফ্লার্ট নয়, সে জানে। সে প্রেমের অভিনয় করিবে না। অরশ ফ্লার্টিং সহ করিতে পারে না। প্রেমের অবমাননা ! উমার এই সহজ সৌহার্দ্য, তরুশীদ্বয়ের কৌতুকলীলাও সে চায় না। কিন্তু উমা ডাকিলে, ছুটিয়া আসিতে হয়। অরশ ধীরে বারান্দার কোণে বেতের চেয়ারে বসে। প্রথমে উমাই কথাবাৰ্ত্ত আরম্ভ করে, অরুণ দু-চারটি কথায় উত্তর দেয় মাত্র । তার পর তাহার মনে সাড়া পড়িয়া যায়। উমার সকল কথার প্রতিবাদ করিতে ইচ্ছা করে। সে অনর্গল কথা কহিতে আরম্ভ করে, সাহিত্য, সমাজ, মানবসভ্যতা নানা বিষয়ে বক্তৃতা স্বরু করে । উমা প্রতিবাদ করে না, তর্ক করে না, চুপ করিয়া শোনে, শুনিতে শুনিতে ক্লাস্তি লাগিলে হাসিয়া ওঠে। তখন অরুণের চেতনা হয়, উমা হয়ত তাহার কথাগুলি পাগলের প্রলাপরুপে উপভোগ করিতেছে। এখন অরুণ আর মুখচোরা, শান্ত ছেলেটি নাই, সে প্ৰগলভ, অকারণে তর্ক জুড়িয়া দেয়। উমা হাসিয়া বলে, বাবা, অরুণ আজকাল কি বকৃতেই পার। রাঙা সরু ঠোঁট দুইটির ফাকে দাতগুলি মুক্তার মত ঝিকিমিকি করিয় ওঠে। অরুণ উমার উপর রাগিয়া উঠতে পারে না, সে একটু বিরক্তির সহিত বলে, না, এ বিষয়ে তোমার সঙ্গে আলোচনা করে লাভ নেই, তুমি কিছু গুনছ না, বুঝতেও চেষ্টা করছ না । —মেয়েমানুষের বুদ্ধি, আমরা কি অত বুঝতে পারি ? —দেখ, সব বিষয়ে ঠাট্টা ক'রো না। —আচ্ছ, তুমি বলছ ডষ্টয়ভস্কি হচ্ছেন টুর্গনিভের চেয়ে বড় লেখক। এখন আমার যদি টুৰ্গনিভকে বেশী ভাল লাগে, আমি কি করব বল— —উটয়ভস্কিকে বোঝবার চেষ্টা কর। যিনি "ক্রাইম্‌ এও পানিশমেণ্টে”র মত বই লিখতে পারেন— —কই, “ইডিয়ট” বইখানা আমায় দিলে না ? প্রবাসী SNP8's. —আমি চাই তুমি নিজের ইচ্ছায় পড়, আমি বলছি বলে তুমি পড়বে কেন ? —আহা রাগ কর কেন । উমার সহিত কথাবার্তা ঠিক ঝগড়ায় না হইলেও এরূপ একটা কথা-কাটাকাটিতে শেষ হয়। উমা যখন সকরুণ চোখে অরুণের দিকে তাকায় তার পর মৃদ্ধ হাসে, গওদেশ রাঙা হইয় ওঠে, অরুণ মুগ্ধ হইয়া যায়। তাহার অন্তরের তাপ জুড়াইয়া যায়। বস্তুত: উমার সহিত এইরূপ কথা-কাটাকাটির পর তাহার বুক হইতে যেন একটা বোঝা নামিয়া যায়। বর্ষণমুক্ত নিৰ্ম্মল আকাশের মত তাহার হৃদয় অপূৰ্ব্ব পুলকে ভরিয়া ওঠে। অকারণে পথে পথে বহুক্ষশ ঘুরিয়া সে বাড়ি ফেরে । এ ক্ষণিক শাস্তি । অন্তরাকাশ জুড়িয়া আবার কাল মেঘ ঘনাইয়া আসে। শ্রাবণের বর্ষণমুখর রাত্রি নিদ্রাহীন, বেদনাময় ৷ মাঝে মাঝে অরুণের সন্দেহ জাগে । তাহার এ প্রেম অলীক মায়া । উৰ্ণনাভের মত তাহার তরুণ মন এ কোন রঙীন জাল রচনা করিয়া চলিয়াছে। এ জাল ছিন্ন করিয়া ८न भूङ श्हेउ छाश किस्त्र वित्याशै श्हेब ७ीबाब्र भउ প্রাণশক্তি বুঝি তাহার নাই। মন্ত্রমূখের মত এ প্রেমমায়াজালে জড়িত থাকিতে ভাল লাগে। ইহার বেদনাও স্বমধুর। এ যৌবনস্বপ্ন যদি টুটা ধায়, তাহার জীবন যে শূন্ত, ব্যর্থ নিরর্থক হইয়া যাইবে। অরুণের সত্তার এক অত্যাশ্চৰ্য্যকর বিবৰ্ত্তন আরম্ভ হইল । এক দিকে সে প্রেমস্বপ্নমুণ্ড ভাবলোকবাসী, আবার সে তর্কবিলাসী, বিশ্লেষণপ্রবণ তীক্ষধী, জাপন বুদ্ধি দিয়া সকল মত বিচার করিতে, যাচাই করিতে চায় । এ বিচারবুদ্ধি বিপ্লবী। তাহার জীবনের সরল বিশ্বাস, দৃঢ় প্রত্যয়গুলি ভাঙিয়া যাইতে লাগিল। ঈশ্বরের সত্যতা সম্বন্ধে অরুণ কোনদিন সন্দেহ করে নাই, এখন সে বাণেশ্বরের অপেক্ষাও জোর-গলায় বলিল, ঈশ্বর নাই, অন্ততঃ তোমরা ধাঁহাকে ঈশ্বর বল তিনি নাই। দেখা যাইত, ক্লাসে বা কমন্‌-কমে বা কলেজের সম্মুখে দেবদারুবৃক্ষচ্ছায়াচ্ছন্ন পথে দাড়াইয়া যেকোন স্বল্পপরিচিত