পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ծՆ প্রবাসী SNరీకిష్ని অসহায় ভাব মনে আজ মমতা জাগাইয়া দিল ; বলিল, “ভয় তাহা মনে রাখে না । স্বামী ফেলিয়া দিয়া বিভ্রান্তের মত সে কি, বোন, আমি আছি।” এদিক-ওদিক ঘুরিয়াছে। যেমন করিয়া হউক, ম-খিনকে “তাই বল, ভাই, তাই বল" বলিয়া মা-পিন্‌ শয্যার উপর উঠিয়া বসিল ; ট্রন-অঙ্গ-এর হাত দুখানি নিজের দুৰ্ব্বল হাতে ধরিয়া বলিল, “আজ প্রতিজ্ঞা কর, ভাই, আমি তোমার বোন, আর শুধু তুমি আমার ভাই, আর কোন সম্বন্ধের কথা যেন তোমার মনে না আসে।” মুহূৰ্ত্তে ট্রন-অঙ্গ-এর মন বিদ্রোঙ্গী হইয়া উঠিল ; কণ্ঠস্বর ঘথাসাপ্য কোমল রাথিয়া বলিল, “এত দিল আশা দিয়ে শেষে নিরাশ করা কি তোমার ভাল হবে, ম-পিন ? তুমি ভাল হয়ে ওঠ ; তার পরে এ-সব কথা চিস্ত ক'রো। তখন দেখবে, সব পরিষ্কার হয়ে গেছে ।” “ত। আর হয় না, ভাই !”—বলিয়৷ মা-থিন করুণ হাসিল ; বলিল, “আমি ত তোমার কাছেই চিরকাল আছি, ভাই ! তবে কেন তুমি নিরাশ হবে ? --অন্য সম্বন্ধটাই কি এত বড় সম্বন্ধ ?” টুন-অঙ্গ, কথা কহিল না। হতাশার স্বরে ম-খিন পুনরায় কছিল, “আমি বরাধর জানি, ভাই, বিয়ে আমার অদুষ্টে নাই।” ক্ষুব্ধ হাস্তে টুন্‌-অঙ্গ, উত্তর দিল, “তাই বুঝি এই শয়তানটাকে আবার ভোলাবার জন্যে ফাদ পেতেছিলে ?” "সে কথা তুলে যাও, ভাই ।” বলিয়া অতি ব্যগ্রভাবে মা খিন নিজের ব্যথিত দৃষ্টি তাহার মুখের উপর রাপিয়া বলিল, “আর আমার উপর কোন রাগ অভিমান রেখে না। আমি প্রতিজ্ঞ করছি, ভাই, এত দিন যেমন ছটি ভাই বোনে আমরা ছিলাম তেমনি চিরকাল থাকবে। এ জীবনে কাউকে কখনও বিয়ে করবো না ।" টুন অঙ্গ ক্ষুণ্ণ মনে বসিয়া রহিল ; অবশেষে মুস্পষ্ট স্বরে কহিল, “তোমার প্রতিজ্ঞা আমার মনে থাকৃবে, ম-থিন!” কিছুক্ষণ পরে তাহাকে অপেক্ষাকৃত স্বস্থ ও নিদ্রিত দেখিয়া ট্রন-অঙ্গ, চুপি চুপি এদিক-ওদিক্‌ চাহিয়া অতি সন্তপণে বোধ করি বা তাহার জুয়ার আডডার উদ্দেশে বাহির হইয়া গেল । সে রান্ত্ৰি মং-বার কেমন করিয়া কাটিল সে নিজেই সে খুজিয়া বাহির করিবে, তাহাকে তাহার চাই –জগংংসার অতল জলে ডুবিয়া যাকৃ-তাহার কিছু যায় আসে না । রাত্রিশেষে ঘুরিতে ঘুরিতে সে কোন এক সময় বাড়ির কাছাকাছি আসিয়া পড়িয়াছে। তখন উধার পূর্বারাগ কেবল আকাশে ফুটিয় উঠতেছে ; প্রভাত-পার্থীর সবে কাকলী গাহিয়া উঠিতেছে। মং-বার মনে হইল, বাড়িতে নিদ্রার স্তব্ধত ভাঙিয়া কৰ্ম্মের কোলাহল আরম্ভ হইয়াছে। মনে পড়িল-আজ তাহার বিবাহোৎসব। মুহূৰ্ত্তেই মনটা অত্যন্ত বিরূপ হইয় গেল। মা, সে ওই বন্দীশালায় প্রবেশ করিবে না। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়িল-— সাকিনাকে । আঙ্গ, নির্দোস, সরলা বালিক !—কিন্তু, হায়! মধু-বার মন যে বিধাতা অন্যরূপ গড়িয়াছেন ?—সে কি করিবে ? —ন, একবার মা-পিনকে দেখিতে হইবে। বড় অসহায়া, অভাগিনী সে —দেখিতে হইবে নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া সে কেমন আছে -—মং-বা নিজের প্রাণ দিয়াও তাঙ্গার দুঃখ দূর করিবে -কিন্তু, কিন্তু সাকিনাকে সে ব্যথা দিবে কেমন করিয়া ? মং-বা আবার চলিল—চলার যেন আর বিরাম নাই। প্রান্তর বহিয়৷ মং-ব' পাশ্ববৰ্ত্তী বনের মধ্যে প্রবেশ করিল। তিন্তিড়ী, আমলকী, আম্র, জম্বু, দেবদারু ও অন্যান্য বনজাত বৃক্ষলতাগুল্মে বনস্থলী অন্ধকার ; মধ্যে মধ্যে সরু সরু পায়ে চলার পথ আঁকিয়া-বাকিয়া এদিক-ওদিক গিয়াছে —দারুণ পরিশ্রমে, মানসিক উদ্বেগে, মং-বার চরণ টলিতে লাগিল-- সে আর চলিতে পারে না। একটা পায়ে চলার পথের পাশে বৃহৎ এক বটবৃক্ষমূলে মং-বা বসিয়া পড়িল—চিস্তার সে বিরাম চায় ! অমনি ভোরের শীতল বাতাস মায়ের মত স্নেহকরস্পর্শে তাহার সমস্ত জালা জুড়াইয়া দিল—মং-ব ঘুমাইয়া পড়িল । প্রভাতে বাড়ির লোকে যখন মং-বাকে দেখিতে পাইল না, তখন সকলেই চিস্তিত হইয়া পড়িল। প্রথমে মনে করিল, সে হয়ত কোথাও বেড়াইতে গিয়া থাকিবে । কিন্তু ক্রমে