পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कांडिन्क বেলা বাড়িতে লাগিল, তখনও মং-বার দেখা নাই। সকলে অস্থির হইয়া উঠিল। আত্মীয়স্বজন, অতিথি-অভ্যাগত, কৰ্ম্মচারিবর্গ, দাস-দাসীতে গৃহ পরিপূর্ণ। বিবাহের সমস্ত উদ্যোগই পূর্ণোদ্যমে চলিতেছে। কিন্তু এ সমস্তই যাহার জন্য তাহারই যে দেখা নাই! শিবহীন যজ্ঞের মত সবই পণ্ড হইয়া যায় যে ? তাহার হইল কি, কোথায় গেল ? কামাল সাহেব ধৈর্য্যহার হইয়া পড়িলেন। চারিদিকে পরিচিত বন্ধুবান্ধবের গৃহে লোকজন মং-বার খোজে চলিল । মং-বার সন্ধান মিলিল না। তখন শহরের এদিকে-ওদিকে, এ-রাস্তায় সে-রাস্তায়, মসজিদে, চায়ের দোকানে, লোক ছুটিল। তবুও মং-বার দেখা মিলিল না। অমঙ্গলের আশঙ্কায় বৃদ্ধ পিতার প্রাণ র্কাপিয়া উঠিল। তাহার একমাত্র পুত্র, আজ এই বিবাহের দিনে করিল কি—কোথায় গেল ? সাত-পাচ ভাবিয়া শেষে পুলিসে খবর দেওয়া হইল । বেলা গড়াইয় পড়িল । তবুও মং-বার দেখা নাই । আনন্দোৎসব নিরানন্দে পরিণত হইতেছে —বিবাহ-বাটতে কাহারও মুখে হাসি নাই, কাহারও মুখে কথা ফুটিতেছে না, সমস্ত নীরব। কেবল মাঝে মাঝে কোন অনুসন্ধানকারী ফিরিয়া আসিলে তাহাকে ঘিরিয়! লোকজন কোলাহল করিতেছে। বিবাহের আনন্দস্থলে এ যেন নিশীথে নিস্তব্ধ শ্মশানভূমে থাকিয়া থাকিয় নিশাচর পার্থীর গমনধ্বনি কানে আসিতেছে । সংবাদ সাকিনার কর্ণে পৌছিল। কিন্তু সে চীৎকার করিল না, অবসয় হইয়া পড়িল না। এক বিন্দু জল কেহ তাহার চোখে দেখিতে পাইল না। অনেক ক্ষণ সে শুধু স্তব্ধ ইষ্টয়া বসিয়া রহিল। তার পর ধীরে ধীরে সে উঠিল ; প্রসাধন করিল, অঙ্গরাগ সমাপন করিয়া এক-একটি করিয়া অলঙ্কার পরিল। বিবাহের পূর্ণসাজে সজ্জিত হইয়া ঘরের বাহিরে আসিল । পিতা তাহার কন্যাকে দেখিয়া কপালে করাঘাত করিয়া বসিয়া পড়িলেন । ধীরে সাকিনা পিতার কাছে আসিয়া হাত ধরিয়া তাহাকে উঠাইল ; বলিল, “বাবা, দুঃখ করে না ; ওঠ।” শোকে মুহমান পিতা হায় হায় করিয়া উঠিলেন ; ইতাশার স্বরে বলিলেন, “এ তুই আমায় কি দেখালি, ম, ły, বঞ্চিত 噶飞 কি সাজে এলি ? কেন আর আমার দুঃখ বাড়াস্ মা ?— কোথায় গেল সে,—সে কি আর আসবে ?” সাকিন স্থিরস্বরে বলিল, “বাব, আমার মন বলছে, তিনি আসবেন।--তিনি আসবেনই- -এ জেনেও কি আমি চুপ, ক'রে বসে থাকৃতে পারি, বাবা ?” বৃদ্ধ পিতা শিশু বালকের মতই ফুকারিয়৷ কাদিয়া উঠিলেন। 豪 蒲 事 體 ম-খিন জাগিয়া উঠিয়া দেখিল টুর্ন অঙ্গ চলিয়া গিয়াছে। সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিল। এই তাহার জীবন—তাহার জীবনের অবলম্বন। টুন-অঙ্গ, আজ জুয়াড়ী, পুলিস তাহার পিছু ঘুরিতেছে—যে-কোন মুহূৰ্ত্তে তাহার এই অবলম্বন বাতাসে তৃণপণ্ডের মত উড়িয়া যাইতে পারে। প্রকাশ্যে সে লোকসমাজে মুখ দেখাইতে পারে না, নিশার অন্ধকারে সে চোরের মত পলাইয়া যায়, তাহারই ভরসায় তাহাকে চিরজীবন কাটাইতে হইবে । অতিদুঃখে ম-থিনের হাসি পাইল । নিজের অবস্থা সম্যক্ উপলব্ধি করিয়া সে ভাবিতে লাগিল —সত্যই কি টুর্ন অঙ্গ-এর ভরসায় তাহার সমস্ত জীবন চলিবে ? সে ভরসার আস্থা কতটুকু ? তাহাকে বিশ্বাস কি ? আজও যে তাহার উপর সস্তুষ্ট নয়-কাল রজনীর অত কাতর অনুনয় ষে উপেক্ষা করিতে পারিয়াছে, সে যে কখন কি করিয়া বসে, তাহার ঠিক কি ? তাহার উপর তাহার জীবনবৃত্তি তাহাকে চারিদিক হইতে বিপন্ন করিতেছে। এ অবস্থায় হতাশ হইয়া সে কি না করিতে পারে ? না, এ ভাবে থাকা হইবে না। এই আজন্মের চিরপরিচিত ভূমি তাহাকে ছাড়িতে হইবে। এই জীবনদায়িনী মৃত্তিক, বর্ণগন্ধে ভরা আকাশ-বাতাস, সৰ্ব্বস্তুতি-বিজড়িত বাসগৃহ, স্নেহময়ী জননীর কোল ছাড়িয়া সে চলিয়া যাইবে—এমন স্থানে, যেখানে কেহ তাহাকে চেনে না, কেহ তাহার কথা ভাবে না—যেখানে সে আগস্তুক, অতিথি মাত্র । চারিদিকে চাহিয়া চাহিয়া মাখিন আজ প্রথম এমন করিয়া জন্মভূমির কথা ভাবিতে পারিল—আশপাশের দৃষ্ট অদৃষ্ট প্রত্যেক জিনিষের প্রতিই তাহার বড় মায়া হইতে লাগিল । কিন্তু, ছাড়িতেই যে হইবে অতি নিঠুরের মত সে এত স্নেহের আকর্ষণ ছিন্ন করিবে। তবে যাইবার পূৰ্ব্বে একবার