পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مسواه) বড় সাধ হয়—ম-খিন চারিদিকে চাহিয়া দেখিয়া লইল কেল্লাহু তাহার প্রলাপ শুনিতে পাইতেছে কি না –সাধ হয়, শুধু একটিবারের জন্য মং-বাকে দেখিতে । বিধাতা সে ইচ্ছা পূর্ণ করিবেন কি ? ম-খিন উঠিল । ঘরের প্রত্যেকটি জিনিষ নাড়িয়াচাড়িয়া পেপিল । বাক্সপত্র খুলিল-কতক জিনিষ বাহির করিয়া একসঙ্গে করিল। বাকী জিনিষ ভাল করিয়া ঘুরাইয় ফিরাইয়া দেখিয়া আবার বাক্সের মধ্যে ভরিল । যাইবার উদ্যোগ আয়োজন সমাধা করিয়া বাহির হইল। রাস্তার ধারে একটা দোকানে কিছু খাঙ্গতে খাইতে মা-পিন্‌ ভাবিতে লাগিল—যাওয়া যায় কখন ? দিনে লোকজন নানা প্রশ্ন করিবে কোথায় যাইতেছে, কেন যাইতেছে ইত্যাদি। স্বতরাং দিন গেলে অন্ধকার পড়িয় আসার সঙ্গে সঙ্গে যাওয়াই ভাল। ঢুন অঙ্গ, যদিও আসে, একটু বেশী রাfত্রর আগে আসিবে না। সন্ধ্যাবেলাই তাহলে সব চেয়ে ভাল সময় । কিন্তু এখন এতটা সময় কি করি । মা-fখনের পা আপনিই চলিল—প্রায় সমস্ত শহরটাই প্রদক্ষিণ করা হইল। বেলা পড়িয়া আসিল –ঘুরিতে ঘুরিতে ম-খিন হাসপাতালের পাশে আসিল । এই সেই স্থান, যেখানে এক দিন তাহার সব কামনাই সার্থক হইয়াছিল। মা-থিন চাহিয়া দেখিল, ওই সেই ঘরের জানাল!—আজও তেমনই খোলা রহিয়াছে—আজও স্বয্যের শেষরশ্মি গাছের পাতার ফাক দিয়া তেমনই গবাক্ষপথে প্রবেশ করিয়াছে ! বিভ্রাস্তের মত চাহিয়া চাহিয়া ম-খিন চলিল । স্বয্যের আলে। আজ যেন বড় চোখে লাগে—লোকের দৃষ্টি তার দিকে যেন জিজ্ঞাস্থ হইয়া চাহিয়া আছে । খোল মাঠের পথ ছাড়িয়া মা-থিন নির্জন বনপথ ধরিল। বনের শীতল ছায়ায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম করিয়া আবার চলিল। চলিতে চলিতে বনের ওই ধারে বড় গাছটার তলায় কি দেখা যায় না? সভয়ে মাখিন পিছু হটিল । কিন্তু হটিয়া গিয় কৌতুহলবশে আবার দৃষ্টি বিস্ফারিত করিল। ওকি, একটা মানুষ না ? গুষ্ট ত তার চোখে মুখে স্থধ্যকিরণ পড়িয়াছে। সে আবার অগ্রসর হইল। মুখটা যেন চেনা যায়—তাই ত, এ ত তা’র সেই চিরপরিতচিত মুখ। যার জন্ত এত দিন সে বসিয়া আছে, যার জন্যে মনের মধ্যে সে প্রবাসী SNつ8ミ অহনিশ এত বেদন পোষণ করিয়াছে, যাকে আজ একটি বারের দেখা দেখিতে সে এত লালায়িত—এই ত চিরকামনার, চিরসাধনার, চিরবাস্থিত সেই মুখ ! ম-খিনের সারা গায় কাটা দিয়া উঠিল—উদ্বেগে সমস্ত বুক তোলপাড় করিতে লাগিল—উন্মাদিনী পথঘাট না মানিয়, কোন দিক্‌ না দেখিয়া চলিল। পায়ে কাট ফুটে, স্কন্ধলম্বিত উত্তরীয় লতাগুল্মে আটকাইয়া যায়, চরণ চলিতে চাহে ন-—তাহার সেদিকে ভ্ৰক্ষেপ নাই। যেথায় বটবৃক্ষমূলে নিদ্রিত মং-বার চোখে মুখে স্বৰ্য্যকিরণ আসিয়া পড়িয়াছে, তাহার পার্শ্বে গিয়া হাটু গাড়িয়া মা-খিন বসিয়া পড়িল । দুভিক্ষপীড়িত ভিক্ষুকের মত ক্ষুধিত দৃষ্টিতে তাহার মুখের পানে চাহিয়া রহিল। দেখিয়া দেখিয়া আশ যেন আর মেটে ন—মুপের উপর হইতে দু-একটা মশা মাছি তাড়াইয়া দিল—অতি যত্নে, অতি সাবধানে ললাটের স্বেদবিন্দু মুছাইয় দিল । শেষে, উদগত একটা দীর্ঘশ্বাস চাপিয়, ধীরে ধীরে মুখ বাড়াইয় চিরজন্মের মত সৰ্ব্বশেষ একটি চুম্বন দান করিল। স্বকোমল স্পর্শে বুঝি বা প্রাক্তনের অলক্ষ্যবিধানে, মং-ব জাগিয় উঠিল। নিদ্রাঘোরে চক্ষু মেলিয়, সম্মুখে ম-খিনকে প্রথম দেখিতেই, দুই ব্যগ্ৰবাহু মেলিয়া তাহাকে জড়াইয়া ধরিয়া বলিল, “মাখিন, ম-খিন, এতদিন কোথায় ছিলে ? —আমায় ফেলে এত দিন কোথায় ছিলে তুমি ?” সহসা পশ্চাৎ হইতে কে—হা:, হা: হা:,—অট্টহাসি হাসিয়া উঠিল। ঝটিতি বাহুমুক্ত হইয়া উভয়ে উঠিয়৷ দেখিল—আগন্তুক টুন-অঙ্গ । —বা, রতনে রতন, একেবারে সোনায় সোহাগা — কিন্তু আর নয়, আমার অশুভ গ্রহ, জীবনের শনি, পথের কণ্টক—তুমি আজ চিরকালের জন্য দূর হও। অতর্কিত মং-ব' বুঝিবার সময় পাইল না—বিদ্যুদ্বেগো টুন-অঙ্গ, দা উঠাইয়া সজোরে তাহার গায়ে কয়েকটা কোপ বসাইয়া দিল । উন্মত্ত টুন-অঙ্গ, উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল।–“চমৎকার প্রতিজ্ঞ তোমার মী-খিন, চমৎকার অভিনয়—কিন্তু আজ তোমার শেষমিলন—শেষ অভিনয় রজনী।” মাখিনকে