পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

qоо প্রবাসী S\లి8R বীর। গৌড় ব্রাক্ষণেরা বলেন, চণ্ডীদাস গৌড় ব্রাহ্মণ ছিলেন। বাকু ৷ সন ১৩৪১ সালের আযাঢ় মাসের "গৌড় প্রভা” পত্রিকায় শ্ৰীযুত সিদ্ধেশ্বর-চক্রবর্তী এই কথা লিখেছিলেন। ব্যাস ব্রাহ্মণদের মধ্যে বো, নামে এক গোত্র আছে। এই হতে তার করুন, বােড়ু চণ্ডীদাস-বড়ু চণ্ডীদাস। তিনি ১৩৩৩ সালের “প্রবাসী’তে “ছাতনায় চণ্ডীদাস” পড়েন নি। বড়ু শব্দ যে বটু শব্দ হতে এসেছে, তাতে সন্দেহ নাই । “কৃষ্ণকীর্তনে বোঢ় এই বিশেষণ কুত্ৰাপি নাই। বীর। চণ্ডীদাসের নিবাস ছাতনায় ছিল, একথা আট । দশ বৎসর মাত্র শুনছি। কৃষ্ণকীর্তনের সম্পাদক শ্ৰীযুত বসন্তরঞ্জন-রায়ের নিবাস বঁাকুড়া জেলা । তিনি কথাটা বিশ্বাস করেন না । বাকু । কিন্তু ইং ১৮৭২ সালে সরকারী প্রত্নদ্রব্য বিভাগের বেগলার সাহেব ছাতনায় চণ্ডীদাস লিখেছিলেন । *প্রবাসী" সম্পাদক শ্রযুত রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় যখন ইস্কুলের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তেন, তখন এক ইংরেজী রচনায় বাঁকুড়ার গৌরব বর্ণনায় লিখেছিলেন, যে চণ্ডীদাস বাজলাসাহিত্যের চসার', তিনি ছাতনাবাসী ছিলেন। ১৫ বৎসর পূর্বে ছাতন ইস্কুলের এক শিক্ষক শ্ৰীযুত কাস্তিচন্দ্র-সরকার “বাঁকুড়াদর্পণে” ছাতনায় চণ্ডীদাস-সম্বন্ধে কয়েকটা প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তিনি খ্রিষ্টান ছিলেন। দুঃখের বিষয়, তিনি গত। তার সংগৃহীত পুথীপত্রও গত। এর পূর্বে যাত্র-সম্প্রদায়ের অধিকারী নীলকণ্ঠ-মুখোপাধ্যায় ছাতনা দিয়ে যাবার আসবার সময় চণ্ডীদাসের জপের আসন পাটটি শত প্ৰণাম করতেন। তিনি চণ্ডীদাসকে সিদ্ধপুরুষ মনে করতেন। পাঁচ-ছয় বৎসর হ’ল শ্রীমৎ সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী বীরভূম ঘুরে ছাতনার নিকটে আশ্রম পেতেছেন। তিনি জেনেছেন, ছাতনা চণ্ডীদাসের জন্মস্থান। শুশুনিয়া পাহাড়ে র্তার যোগ-সাধনার আশ্রম ছিল। ১৩৮৭ শক হতে বৰ্ত্তমান ১৮৫৭ শক পর্যন্ত যে কথা পুর্থীতে শ্রুতিতে আছে, সেটা অবিশ্বাস করলে সংশয় ঘুঢ়বে না। বীর । তোমার কৃষ্ণসেনের অসাধ্য কম নাই। তিনি বীরভূমের নামুর গ্রামের নামটি চুরি করেছেন। বাকু। ছাতনায় নামুর নাম পুরাতন। রাজা হামীরউত্তর নাম্বর গ্রামের নাম যুবরাজপুর রেখেছিলেন। এতে মনে হয় নাম্বর বা নায়ুর নামের সংস্কৃত রূপ নন্দপুর ছিল। রাজনন্দ যুবরাজ। বিষ্ণুপুরের দিকে নাদুর, ছাতনার দিকে নলুআড় নামে গ্রাম আছে। নাদুর নন্দপুর। নন্দুআড়া নলুঙ্গ—ড়া, অর্থাৎ নন্দ নামে কোন লোকের তড়া। ডাঙ্গার নাম তড়া। যেমন, সাল তড়া, শাল বনের ডাঙ্গা । লোকে সাদৃপ্ত দেখেও পুরাতন নাম নূতনে প্রয়োগ করে। এর শত শত দৃষ্টান্ত আছে। ছাতনা নাচুরে কবি চণ্ডীদাস ছিলেন। বীরভূমে এক কবি চণ্ডীদাস নাম নিয়েছিলেন। হয়ত সে সূত্রে সেদেশে নামুর নামটিও গেছল । বীর । তোমার উদয়-সেনের পুখী, কৃষ্ণ-সেনের পুখী, পদ্মলোচনের পুখী, সৰ কৃত্রিম। বাকু। এ সব পুখী লুপ্ত হয় নাই। কামনা বর্জন ক'রে বিড়ে কষে দেখতে আপত্তি কি আছে ? বড়ু চণ্ডীদাস আর দ্বিজ চণ্ডীদাস মিশিয়ে ফেলে সংশয়ের স্বষ্টি হচ্ছে। সংশয়ের বিষয় ব্যক্ত না হ’লে তার নিরাস হতে পারে না ।