পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাৰ্ত্তন প্রসাহিত্য সম্মেলন দ্বারা এই উদ্দেশু কিয়ং পরিমাণে সাধিত হয় । আমাদের এই সম্মেলনের প্রবাসী নামের বিরুদ্ধে যা-কিছু বলা যাইতে পারে, স্বৰ্গীয় অতুলপ্রসাদ সেন মহাশয় ইহার গোরখপুরের অধিবেশনে তাহার সভাপতির অভিভাষণে সূ"ক্ষেপে তাহা প্রায় সমস্তই বলিয়াছিলেন, কিন্তু প্রবাসী নামটারও যে কিছু সার্থকতা আছে, তাহা তিনি মানিতে বধ্য হইয়াছিলেন । র্তাহার নিজের কথাই উদ্ধৃত করি । উদ্যান-সম্মেলনে মহিল-বিভাগের নেত্রী শীমঠা হেমন্তকুমারী চৌধুরীর্ণ ও হার কস্ত। সদিচ আমরা বাঙ্গাল দেশের বাইরে বাস করি, তবু নিজেদের প্রব দা বলতে আমি সঙ্কোচ করি । ভারতে বাস ক'রে ভারতবাসী বিংশকে পরবাসী কি ক'রে বলবে ? সেটা বড়ই অশোভন । তাই আমি প্রথম থেকেই প্রবাসী আখ্যার বিরোধী। একবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের * আমার এ-সম্বন্ধে কথা হয় ; তিনিও "প্রবাসী নামের পক্ষপাতী ধন ; আমি জিজ্ঞাস করেছিলাম বহির্বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন’ বললে কি কম হয় ; তিনি বলেছিলেন—বেশ ভাল কথা, বহির্বঙ্গ-সাহিত্য* নি’ বলতে পার অথবা বিজেতর সাহিত্য-সম্মেলন’ বলতে পার । *ি আমাদের এ সম্মেলনের একাধিক বার নাম পরিবর্তন হয়েছে, ই আমি এ-বিষয়ে পরিচালকবর্গের দৃষ্টি আকর্ষণ করিছি। তবে এ-ক’ বলতেই হবে, "প্রবাসী নামটা চলে গেছে, কেমন যেন ছাড়ানো * - । প্রবাস কথাটার মানে হয়ে দাড়িয়েছে বাঙ্গাল দেশের বাইরে । ধর্ণ" নামে যত কিছুই আপত্তি উথাপন করি না কেন, এ-কথা স্বীকার ***ই হবে বাঙ্গাল দেশ আমাদের আপন দেশ, আমাদের মাতৃভূমি, ** 1: ভাষা আমাদের মাতৃভাষ: । প্রতি বৎসর এ সম্মেলন আমাদের ***াটি নুতন করে যেন মনে করিয়ে দেয়। এ দেশকে আমরা وان لإصد وجهة প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন רצף আপন দেশ বলে মনে করব, কিন্তু জন্মভূমি যে সকল দেশের চেয়ে আপন তা ভুললে চলবে কেন? তাতে এ দেশকে একটুও অবজ্ঞা করা হয় না । আমরা অনেক স্ত্রীলোককে ‘মা’ বলে সম্বোধন করি, তাতে মাতৃত্বের গৌরব বৃদ্ধি পায়, কিন্তু যে মা পেটে ধরেছে সে মা কিন্তু অস্ত মাদের চেয়ে একটু পৃথক, সে জননী, শুধু মা নয়। বাঙ্গালী জননী, এ-কপাটি মনে রাখা বড় দরকার । উদ্যান-সম্মেলনে কাৰ্য্যকরী সম্ভার সভাপতি রায়বাহাদুর খ্ৰীযুক্ত অমৃতলাল বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন আমার দেশের কয়েকটি ভাই আমাদের তাদের নবজাত পত্রিকার জন্য একটি কবিতা বা গান লিখে পাঠাতে বিশেষ করে অনুরোধ করেছিলেন। ওখন আমার দেশের গ্রামখনির কথা মনে পড়ে গেল । সেই পদ্মানদীর ধার, সেই থোল মাঠ, পোলা প্রাণ, পাপীর গান, বকুল ফুল, হরির লুটের বাতাস, মায়েদের ভালবাস, ছেলেদের সঙ্গে খেলা, সব মনে পড়ে গেল। আমার সেই মিষ্ট দেশটি আমার চোখের সামনে আমার প্রাণের সামনে ভাসতে লাগল,ভাল করে মনে হ’ল আমি ভুলি নি ভুলিনি আমার দেশমাতাকে যদিও প্রায় পয়ত্রিশ বৎসর সে গ্রামখনিতে যাই নি। দুর দেশে থাকলে কি হবে, মীর টান বড় টান। যদিও এ-দেশও আমাদের দেশ, এ-দেশেই আমরা অনেকে ঘর বেঁধেছি, নান কাজে এ-দেশেই নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছি, এ-দেশের লোকদের বড় আপন মনে হয়, তাদের স্নেহ করি, তাদের স্নেহ পাই, তাদের সেবা করে আনন্দ পাই, কৃতাৰ্থ হই, হয়ত এ-দেশেই ছাইটুকু রেখে যাব, তবু—তবু—সেই যে বড় বড় নদীর দেশ, বর্ধ ও ঝড়ের দেশ,