পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের নয়। দিল্লী অধিবেশনে স্বেচ্ছাসেবকগণ ধনিষ্ঠতর হয় ইহাই আমাদের এই সম্মেলনের প্রধান উদ্দেশ্য ও উপযোগিতা। এই জন্য প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন বঙ্গালী জাতির বিশেষ কল্যাণকর । বৎসর বৎসর গুণী জ্ঞানী, চিন্তাশীল ও বিদ্বান লোকের মেলামেশা ও আলোচনা হয়, আমরাও বিদুষী মহিলাগণের আগমনে জ্ঞান ও ধ,নন্দ লাভ করি এবং আগ্রহের সহিত আমরা এই মিলনের প্রত্যাশা করিয়া থাকি। আমরা জন্মভূমি হইতে যত দূরেই থাকে আমরা বাঙ্গালী । আমরা চাই আমাদের পুত্রকন্যারাও বাঙ্গালী হইবে, বাংলার প্রাণ হইতে, ভাবধার হইতে, তারা যেন বিচুত না হয়। এ বাংলা ভাষাকেই যেন তাহারা মাতৃভাষা বলিয়া মনে করে । যেন সুশিক্ষা দ্বারা তাহদের ধধ্যে যথার্থ মন্ত্র্যুত্ব জাগিয় ওঠে।” কলিকাতায় সম্মেলনের দ্বাদশ অধিবেশনের উদ্বোধন পলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ যাহা বলিয়াছিলেন তাহা সৰ্ব্বাপেক্ষ অধিক এই সৰ্ব্বাগ্রে স্মৰ্ত্তব্য । তিনি বলেন :– এমন এক দিন ছিল যখন বাংলা প্রদেশের বাহিরে বাংtলী প:িার দুই এক পুরুষ যাপন করতে করতেই বাংলা ভাষা ভুলে যেত। ** প যোগই অস্তুরের নাড়ীর যোগ,—সেই যোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন ং মানুষের পরম্পরাগত বুদ্ধিশক্তি ও ঈদয়বৃত্তির সম্পূর্ণ পরিবর্তন *: iয় । বাঙালীচিত্তের যে বিশেষত্ব, মানবসংসারে নিঃসন্দেহ তার ংক বিশেষ মূল্য আছে। যেখানেই তাকে হীরাই সেখানেই সমস্ত " জাতির পক্ষে বড়ো ক্ষতির কারণ ঘট সম্ভব। নদীর ধীরে যে if থাছে তার মাটিতে যদি বাধন না থাকে তবে তট কিছু কিছু করে ... পড়ে, ফসলের আশা হারাতে থাকে। যদি কোনো মহাবৃক্ষ সেই " গভীর অন্তরে দূরব্যাপী শিকড় ছড়িয়ে দিয়ে তাকে এটে ধরে, তা * স্রোতের আঘাত থেকে সে ক্ষেত্রে কুঞ্জ পায়। বাংল। দেশের

  • জৈকে তেমনি করেই ছায় দিয়েছে ফল দিয়েছে নিবিড় ঐক্য ও

ॐ স্থায়িত্ব দিয়েছে বংলা সাহিত্য । অল্প অtখাতেই সে খণ্ডিত হয় না । একদ আমাদের রাষ্ট্রপতির বাংলা দেশের মাঝখানে বেড়া তুলে দেবার যে প্রস্তাব করেছিলেন সেটা যদি অয়ে পঞ্চাশ বছর পূৰ্ব্বে ঘটত তবে তার অীশঙ্ক! আমাদের এত তীব্র আধাতে বিচলিত করতে পারত না । ইতিমধ্যে বাংলার মৰ্ম্মস্থলে যে অখণ্ড আত্মবোধ পরিস্ফুট হয়ে উঠেছে, তার প্রধানতম কারণ বাংলা সাহিত্য। বাংল! দেশকে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় খণ্ডিত করার ফলে তাঁর ভয। তার সংস্কৃতি খণ্ডিত হবে, এই বিপদের সম্ভাবনায় বttালী উদাসীন থাকতে পারে নি। বt&lলী-চিত্তের এই ঐক্যবোধ সাহিত্যের যোগে বt tলীর চৈতন্তকে ব্যাপক ভাবে গভীর ভাবে অধিকার করেছে। সেই কারণেই আজ ব15ালী যতদূরে যেখানেই যাক্ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বন্ধনে বাংল: দেশের সঙ্গে যুক্ত থাকে। কিছুকাল পূৰ্ব্বে বt৫ালীর ছেলে বিলীত গেলে ভাষায় ভালে ও ব্যবহারে যেমন স্পৰ্মীপূর্বক অবাঙালীত্বের আড়ম্বর করত এখন ৩ নেই বললেই চলে,—কেন না বাংলা ভধtয় যে সংস্কৃতি অ{জ উজ্জ্বল তার প্রতি শগ্ধ ন! প্রকাশ কর এবং তার সম্বন্ধে অনভিজ্ঞতাই আজি লঙ্গার বিসর হয়ে উঠেছে ।” ইঙ্গর পর রবীন্দ্রনাথ প্রবাস শবা প্রয়োগ সম্বন্ধে যাহা বলেন, তাহা সাতিশয় প্রণিধানযোগ্য । “রাষ্ট্ৰীয় ঐক্য সাধনার তরফ থেকে ভারতবর্মে বঙ্গেতর প্রদেশের প্রতি প্রবাস শব্দ প্রয়োগ করায় আপত্তি ধাকতে পারে । কিন্তু মুখের কথ। বাদ দিয়ে বাস্তবিকতাব যুক্তিতে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যে অকৃত্রিম আয়ীয়তার সাধারণ ভূমিকা পাওয়া যায় কিন। সে তর্ক ছেড়ে দিয়েও সাহিত্যের দিক থেকে ভারতের অঙ্ক প্রদেশ বt tলীর পক্ষে প্রল।স সে কথা মালতে হবে । এ সম্বন্ধে আমাদের পার্থক। এত বেশী যে অন্ত প্রদেশের বর্তমান সংস্কৃতির সঙ্গে বাংল সংস্কৃতির সামঞ্জস্তসাধন অসম্ভব। এ ছাড় সংস্কৃতির প্রধান সে বাহন ভাষা, সে সম্বন্ধে বাংলার সঙ্গে অঙ্ক প্রদেশীয় ভাগার কেবল ব্যাকরণের প্রভেদ নয়, অভিব্যক্তির প্রভেদ। অর্থাৎ ভাবের ও সত্যের প্রকাশ কল্পে বাংল। ভাষা নানা প্রতিভাশালীর সাহায্যে যে রূপ ও শক্তি উদ্ভাবন করেছে অন্ত প্রদেশের ভাষায় তা পাওয়৷ যায় ন', অথবা তার অভিমুখিত অষ্ঠ দিকে, অথচ সে সকল ভাষার মধ্যে হয়তে নানা বিষয়ে বাংলার চেয়ে শ্রেষ্ঠত আছে। অন্তপ্রদেশবাসীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বাঙালীর সদরের মিলন অসম্ভব নয় । আমরা তার অতি স্বম্বর দৃষ্টান্ত দেখেছি—যেমন পরলোকগত অতুলপ্রসাদ সেন।