পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭২২ প্রবাসী SNご8ミ. উদ্যানে বৈকালিক সম্মিলন বেশ উপভোগ্য হইয়াছিল। বিদ্যালয়-গৃহেই মহিলাদের একটি স্বতন্ত্র প্রমোদ-মিলন হইয়াছিল। নৃত্যগীতাদি ও “র কুকরবী”র অভিনয়ে আমি উপস্থিত থাকিতে পারি নাই । অধিবেশনের সমুদয় বৃত্তাস্ত দৈনিক কাগজে যথাসময়ে বাহির হইয়াছে। মূল সভাপতির, মহিলা-বিভাগের নেত্রীর এবং সমুদয় বিভাগীয় সভাপতিদের অভিভাষণ দৈনিক কাগজে বাহির হইয়া গিয়ছে। অভ্যর্থনা-সমিতির সভাপতির পক্ষ হইতে অন্যতম সহকারী সভাপতি ধীমান শ্ৰীযুক্ত নিশিকাস্ত . সেন তাহার অভিভাষণ পাঠ করেন। তাহাও দৈনিকে বাহির হইয়াছে। এই অধিবেশনের উদ্বোধন করিবার ভার ছিল প্রবাসীর সম্পাদকের উপর। র্তাহার সামান্য বক্তব্যেরও কিছু দৈনিক কাগজে বাহির হইয়াছে। স্বভাবতঃ স্বল্পভাষী নীরব কৰ্ম্ম সহকারী সভাপতি ডাঃ জ্ঞানদাকান্ত সেন মহাশয় বিদায় কালে যে হৃদয়গ্রাহী কথাগুলি বলিয়াছিলেন, তাহ কোন কাগজে দেখি নাই। বোধ হয় কেহ লিখিয় লন নাই । মহিল| বিভাগের সভানেত্রীর, তাহার অভ্যর্থনা-সমিতির নেত্রীর, মূল অভ্যর্থনা-সমিতির সহকারী সভাপতির এবং মূল সভাপতি ও বিভাগীয় সভাপতিদিগের বক্তৃতাগুলিও উংকৃষ্ট হইয়াছিল। সেগুলি সমস্তই দৈনিক কাগজে বাহির হওয়ায় বিস্তর লোকের সম্মুখে উপস্থিত হইয়াছে। কোন মাসিক কাগজে এতগুলি অভিভাষণ যথাসময়ে ছাপিবার সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু অভিভাষণগুলি শুধু দৈনিকে মুদ্রিত হওয়া যথেষ্ট নহে। তাহার প্রধান কারণ ছুটি । দৈনিক কাগজ লোকে মুখ্যতঃ সংবাদের জন্য পড়ে, তাহাতে অপেক্ষাকৃত দুরূহ বিষয়ের কোন আলোচনা থাকিলে তাহা তৎক্ষণাৎ পঠিত হয় না ; আবার, যেদিনকার কাগজে তাহ থাকে তাহার পরদিন আবার আর একখান! কাগজ আসিয়া উপস্থিত হওয়ায় আগেকার দিনের কাগজটি পড়িবার অবসর হয় না। সকল পাঠকের পক্ষে একথা না খাটিতে পারে, কিন্তু অনেকেরই পক্ষে খাটে। দ্বিতীয় কারণ, দৈনিক কাগজ সাধারণতঃ কেহ বাধাইয়া রাখে না, বড় বড় অনেক লাইব্রেরীতেও পুরাতন দৈনিকের ফাইল পাওয়া যায় না। স্বতরাং অভিভাষণগুলি কেবল দৈনিকে ছাপা হইলে সেগুলির প্রতি অবিচার হয় এবং র্যাহারা ধীরে অবসরমত মন দিয়া সেগুলি পড়িতে চান, তাহদের স্ববিধা হয় না । ভবিষ্কতে কেহ সেগুলি দেখিতে বা পড়িতে চাহিলে পান না। এই জন্য দৈনিকে প্রকাশ ছাড়া সেগুলি সম্মেলনের রিপোর্টের আলাদা একটি খগুরূপে মুদ্রিত করিতে পারিলে ভাল হয়। কিন্তু সম্মেলনের সব ব্যয় নির্বাহ করিয়া উদ্যোক্তাদের হাতে প্রায়ই এত টাকা উদ্ধৃত্ত থাকে না যাহতে র্তাহারা বিস্তারিত রিপোর্ট ও অভিভাষণগুলি ছাপিতে পারেন। আমরা কলিকাতার অধিবেশনের সব অভিভাষণ, এমন কি ভাল অন্য প্রবন্ধগুলিও, ছাপিতে চাহিয়াছিলাম । কিন্তু অর্থাভাবে তাহা করিতে পারি নাই। নয়া দিল্লীর অধিবেশনের অন্যতম অক্লাস্ত কৰ্ম্মী স্বসাহিত্যিক ঐযুক্ত যামিনীকান্ত সোমের নিকট সংবাদ লইয়া অবগত হইয়াছি, তথাকার অভ্যর্থনা-সমিতি অভিভাষণাদি মুদ্রিত করিতে পরিবেন । ইহা সুথের বিষয়। সম্মেলনের মহিলা-বিভাগের নেত্রী, মূল সভাপতি ও বিভাগীয় সভাপতিদিগের মধ্যে বাংলা দেশ হইতে দু-এক জন লওয়া ভাল। তাহাতে বঙ্গের বাঙালী ও বঙ্গের বাহিরের বাঙালীদের মধ্যে যোগ রক্ষিত হয় এবং ভাবধারা ও চিন্তাধারার আদান-প্রদান হয়। কিন্তু অধিকাংশ সভাপতি বঙ্গের বাহিরের বাঙালীদের মধ্য হইতে ধে লওয়া হয়, তাহাঙ্গ ঠিক । আমি ত কয়েক বারের অধিবেশনে উপস্থিত হইয়াছি ; দেখিয়াছি বঙ্গের বাহিরের যে-সকল বাঙালী মূল বা বিভাগীয় সভাপতি নিৰ্ব্বাচিত হন, তাহাদের বেশ পড়াশুনা ও চিন্তাশীলতা আছে। এ বিষয়ে তাহারা বঙ্গের সমশ্রেণী” শিক্ষিত লোকদের চেয়ে নিম্নস্তানীয় নহেন, বরং কখন কখন র্তাহীদের শ্রেষ্ঠতা অতুভব করিয়াছি । যেখানে যেবার সম্মেলনের অধিবেশন হয়, অধিকা: সভাপতি সেখান হইতে দূরবর্তী প্রদেশের প্রবাসী বাঙালী৮ে মধ্য হইতে নির্বাচিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু যাতায়াতে অনেক সময় লাগে, কষ্ট ও ক্লাস্তি ই’ এবং ব্যয়বাহুল্যও আছে বলিয়া বোধ হয় দূরের লোকদিগ পাওয়া অনেক স্থলেই কঠিন হয়। ইহার কোন প্রতীকা হইতে পারে কি না, চিস্তিতব্য। অতঃপর সম্মেলন যেখানে হইবে তথাকার উদ্যোক্তাদিগে ।