পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র অন্ত এক জনকে বলে যাক না, জামায় তেল, সাবান, রেড, এইগুলো দিক বের করে।” “আচ্ছ, সে হচ্ছে--তুই যা শীগগির, যেন আবার মেলা তাড়াহুড়ে ক'রে স্ব-ত নিয়ে আসিস্ নি•••ওই আস্কক মশাই, ভাল সেলসম্যান।--সিগারেট খান ?" পকেট হইতে একটি সিগারেট-কেস বাহির করিয়া সামনে ধরিল। একটা সিগারেট বাহির করিয়া মুখে দিলাম ; ছোকরা নিজেও একটা ঠোঁটের মাঝে আলগা করিয়া ধরিয়া কেতাদুরন্ত ভাবে দেশলাই জালিয়া আমার সামনে ধরিল। তাহার পর নিজেরটা ধরাইয়া, এক মুখ ধোয় ছাড়িয়া বলিল, “স্বোক্‌ ইজ, মাই প্যাশন ।” একেবারে আপ-টু-ডেট্‌ ! লক্ষ্য করিলাম, সিগারেট খাইতে খাইতে খুব চকিত এবং সংযতভাবে দু-এক বার পাশের জিনিষগুলির উপর দৃষ্টিপাত করিল এবং নিতান্ত অন্তমনস্কভাবে কি যেন ভাবিতে লাগিল ; তাহার ভাবটা দেখিলে সন্দেহ হয় যেন কি একটা কথা বলিতে চাহিতেছে অথচ যেন জো পাইতেছে না। নিতান্ত চুপ করিয়া থাকার অস্বস্তি কাটাইবার জন্ত বলিলাম, “ও জিনিষগুলো বুঝি আপনি পছন্দ করবার জন্তে আনিয়েছেন ?” মুখের ধোয় ছাড়িতে ছাড়িতে মাথা নাড়িয়া জানাইল— হ্যা। সঙ্গে সঙ্গে যেন হঠাৎ মনে পড়িয়া গেল এই ভাবে বলিল, “ঠিক কথা, এই ত আপনাকে পাওয়া গেছে, দিন ত মেহেরবানি ক’রে আমার গোটাকতক জিনিষ পছন্দ করে। বলবেন বোধ হয়—"কেন আপনি নিজে কি পছন্দ করতে পারেন না ?..পারি কিন্তু জানেনই ত—টু হেডস আর বেটার দ্যান ওয়ান ।” আমার মুখে এরূপ একটা অশোভন আপত্তি ধরিয়া লওয়ায় আমি একটু লজ্জিত হইয়াই বলিলাম, “সে কি কথা ?—আমার দ্বারা যদি সামান্ত সাহায্য হয় ত আমি दिळलय यांनन्मिउद्दे श्व * “সে আমি বাঙালীদের জানি, তাদের সম্বন্ধে আমার ধারণাও খুব উচ্চ। আচ্ছ, এই সাবানের কথাই ধরা पाकू---” সাবানের বাক্ষগুলি একে একে সরাইয়া দিয়—”এই ত विध्ञांझ כאשר ভিনোলিয়া, ইর্যাসমিকৃ, হিমানী, স্বাসকো, পামঅলিভ, ক্যালকাটা সোপওয়ার্কস, মাইসোর—আরও এই সব কি কি রয়েছে, আপনি কোনটা রেকমেও করেন ?” আমি বলিলাম, “মাফ করবেন, বিলিতীগুলির সম্বন্ধে আমি কিছু বলব না। তবে,--” ছোকরা ভিনোলিয়, পামঅলিভ, ইরাসূমিক-এর বাজগুলি সঙ্গে সঙ্গে পাশে সরাইয়া রাখিয়া বলিল, “নিন, বলুন এবার। মানে, ভিনোলিয়া দাবি করে যে আমন সফটু আর ডেলিকেটু স্কিন অন্য সাবানে দিতে পারে না। তা যাক গিয়ে ; এদিকে আবার স্বরাজও ত চাই মশাই ?•••এখন এগুলোর মধ্যে আপনার কোনটে পছন্দ ? এক কোম্পানীরই পাঁচ-সাত রকম আছে।---আচ্ছ, আপনি সায়েন্স না আটর্স ? বলিলাম, “সায়েন্স।” “আই-এস্-সি ?” “ন, এইবারে এম.এসসি পাস করেছি।” ছোকরা গভীর শ্রদ্ধার সহিত আমার দিকে চাহিল, তাহার পর বলিল, “তবে ত কথাই নেই—দি ম্যান ফর ইটু। আচ্ছ, সাবানে গায়ের রং ইম্প্রুভ করতে পারে? ধরুন...” সেকেণ্ড-কয়েক একটু চিস্তা করিয়া লইল, তাহার পর “ধরুন—এই ধরুন, কেউ যদি পাড়াগাঁয়ে—মনে করুন, এই তের-চোদ্দ বছর বয়স পৰ্য্যস্ত কাটিয়ে থাকে—জানেনই ত, পাড়াগায়ের ধুলোকাদ, মেঠো হাওয়া এসবের মধ্যে রং ত আর ঠিক থাকে নী-ত এখন যদি সে রেগুলারলি সাবান মেখে যায় ত রংটার জলুস বাড়বে বলে আপনাদের সায়েন্স গ্যারাটি দিতে পারে ?” কোথায় ব্যথা, এবং আমার এত খাতিরের কারণটাই বা কি এত ক্ষণে বুঝিলাম। বলিলাম, “কি জানেন ? সায়েন্স যে গায়ের রং আর সাবানের কথা ধ’রেই কোনখানে বলেছে তা মনে পড়ে না; তবে সাবান জিনিষটা লোমকূপগুলো বেশী পরিষ্কার রাখে, বাইরের ময়লাও জমতে দেয় না, কাজেই গায়ের চামড়ার স্বাস্থ্যটা থাকে ভাল ; সেই থেকেই...” ছোকরা গালে হাত দিয়া খুব মনোযোগ-সহকারে কথাগুলো শুনিতেছিল ; সোজা হইয়া বসিয়, তর্জনীটা একটু নামাইয়া বলিল, “দেয়ার ইউ আর, হয়েছে। আচ্ছা, তা যদি হয় ত একবার ক'রে সাবান মাখলে ষে-পরিমাণে উন্নতি