পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ግግm প্রবণসী SNථිGE. কোনো মাড়োয়ারি-বাচ্চাও তোমাকে ঠকাতে পারবে ন,—এ আমি গঙ্গাজল ছুয়ে বলতে পারি। আর যদি রোজগারের কথা তোল, পশুপতি বাবুর কাছে শুনেছি— জগৎ বেশ দু-টাকা কামাচ্ছে । তোমার চার দিকে চট-কলের ফুলি আর কন্যাদায়গ্ৰস্ত কেরানী, সেই টাকা আনিয়ে মোটা স্বদে ছাড়লে একটা হোঁসের মুচ্ছন্দির মোট রোজগার ঘরে বসেই করতে পারবে। হিসেব যখন হাসিল করেছ, তোমার আবার ভাবনা কি-টাকা লাফিয়ে বাড়বে। বুদ্ধির টেস্ট, টাক-রোজগারে।” বিধুমাষ্টার প্রফুল্ল মনে বাড়ি ফিরলেন। ইস্কুলটা যেতে বলেছিল,—র্তার দুশ্চিন্তা গেল । পাচ জনকে হাতে রাখা চাই । শশী বার-বাড়িতে অপেরার রিহাসেল বসিয়ে দিলে । নানা পক্ষী এক বৃক্ষে এসে জুটল। গ্রাম সরগরম। শশী বায়াতবলা বাজায়। বন্ধুর বলে—হাত বড় মিঠে । পথে বেরিয়ে বলে, “কন্ধকাটা হ’লেই ভাল ছিল, মাথানাড়ার চোটে তিন হাতের ভেতর কারুর ঘোষবার জো নেই। আবার ও-চেহারায় পাট দিয়ে যে এড়ান যাবে তার উপায়ও নেই।” মুলোজোড়ে অভিনয় ক’রে এসে শশীকে ম্যালেরিয়ায় ধরল। কোনো ওষুধেই ত বাগ, মানলে না। শেষ রক্তমাংস সব গুড়িয়ে পেটজোড়া পিলেতে দাড়াল। পেট আর কানদুটিই লোকের নজরে পড়ে। পশুপতি খুড়ো এসে পরামর্শ দিলেন,—আগ্রায় জগতের কাছে গেলে এক সপ্তাহে সেরে যাবে, আর শশীর যা-যা জানবার অাছে তাও সহজে আদায় হয়ে যাবে,— কাজ গুছিয়ে আসতে পারবে । শুনে শশীর যাবার উৎসাহ বাড়ল । সেই দিনই অবস্থা জানিয়ে জগৎকে পত্র দেওয়া হ’ল । টেলিগ্রাফে টাকা এল । ম, ছোটলোকের মেয়ে সম্বন্ধে অর্থাৎ বড় বধূ সম্বন্ধে বার-বার সাবধান ক’রে দিয়ে সাশ্রনয়নে—‘এস বাবা’ বলে শশীকে বিদায় দিলেন। סא জগৎ ষ্টেশন থেকে শশীকে নিয়ে বাসায় পৌছতেই, বড়বউ ছুটে গিয়ে শশীর চেহার দেখেই কেঁদে ফেললেন। *এর আগে জামাদের খবর দাও নি কেন ঠাকুরপো ।” স্বামীকে বললেন, “আজই সাহেব ভাক্তারকে এনে দেখান চাই,—সাণ্ডেল-মশাইও সঙ্গে থাকবেন।” শশীর চিকিৎসা, সেবা-শুশ্রষা, পথ্য, রীতিমত চলতে লাগল। ব্যবস্থা সবই প্রথম শ্রেণীর। বড়বউ গৃহ-কৰ্ম্ম ত্যাগ করে, দিনরাত শশীর সেবাতেই রইলেন । রন্ধনাদির জন্ত এক জন ঠাকুরকে রাখা হ’ল । ঔষধে পথ্যে আর সৰ্ব্বোপরি বড়বউয়ের আস্তরিক সেবাযত্নে শশী দেড় মাসের মধ্যে সেরে উঠল। এখন চলল পথ্যের পালা। দিনে রাতে ছয়ট ডিম, এক পাউণ্ড লোফ, পাচ-পো মাংস, এক আউন্স পোর্ট, দুটো লেবু, একটা বেদান ইত্যাদি । যেমন যেমন ক্ষুধা বাড়বে, সেই মত পথ্যও বাড়বে –বড়বউয়ের ইচ্ছা ও আগ্রহ, জগৎ ক্ষুন্ন করলে না। শশীর স্বাস্থ্য ও চেহারার দিন-দিন উন্নতি দেখে বড়বউয়ের আনন্দ ধরে না। জগতের মুখে কিন্তু দিন-দিন চিস্তার চিহ্ন ধরা পড়তে লাগল। বড়বউ আর থাকতে না পেরে, একদিন কারণ জিজ্ঞাসা করায় শুনলেন, “সব মিটিয়েও এখনও তিনশোর ওপর দেন, তার উপর নিত্য বাড়তি খরচ ত দু-টাকার কম নয়। ভাবছি—আমার সত্তর টাকায়, কোন দিক সামলাব ?” বড়বউ বললেন, “ও কথা মুখে আনতে নেই, ঠাকুরপোকে যে ফিরে পেয়েছি এই ঢের। তুমি ভেব না, আমার খান-দুই গহনা কালই বেচে চিন্তামুক্ত হও। শশী ঠাকুরপো লেখাপড়া শিখেছে, হিসেবে সিদ্ধহস্ত, সে শীগগিরই রোজগারে লাগবে। সংসারের জন্তে তার চিন্তা কম নয়। প্রায়ই আমাকে আয়-ব্যয়ের কথা সব খুটিয়ে জিজ্ঞাসা করে। বলে—দাদা ব্যাঙ্কে কত রাখতে পেরেছেন খোজ নিও দিকি । বাড়াবাড়ি খরচ সব কমান চাই—” “বলে নাকি” বলে জগৎ একটু হাসলে। বড়বউ বললেন, “তবে ছোকরা-বয়স কিনা, যাত্রীথিয়েটারের বাই একটু আছে। যাক, তুমি ও নিয়ে ভেব না, বা বললুম তা কালই করা চাই। এই মাসটা বাদে ঠাকুরকে আর রাখব না ; ঠাকুরপোরও সেই মত। আমার নরেশকে ইস্কুলে দিয়ে আসা আর নিয়ে আসার জন্তে জার লোকের দরকার নেই, তাই ভান্ট চাকরটাকে ত জবাব দেওয়াই হয়েছে । এক ছন্ন ইসসারে সব কাজ কতে পারবে।"