পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوهنه বা জাতে ঠেলবার লোকও নেই। বাবার রেখে-যাওয়া কিঞ্চিৎ আছে, তাই নেড়েচেড়ে বেশ থাকব। সেই জন্তেই কিছুদিন কলেজে পড়েছিলুম, ইংরেজী নভেল-টভেলগুলো বুঝতে পারি, ব্যাঙ্কের হিসাব কযতে পারি, সেইটুকুই আমার যথেষ্ট। কলেজে কারও সঙ্গে কথা কয়েছি কোনদিন ? চিন্ময় বলিল, সেই ত করেছিলেন মুস্কিল ! কথা কইতেন না বলেই ত কথা কইবার জন্তে সবাই ছট্‌ফট্‌ করত। ভূপ্রাপ্য প্রব্যের দিকেই লোক বেশী আকৃষ্ট হয়, তা জানেন তা ! সে কথা যাকৃ! আপনি যেমন আপনার কথা বললেন, আমিও তেমনি আমার কথাটা বলি। বিয়ে করবার ইচ্ছে আমারও নেই। দশ-পনের বছর আগে বিয়ে করার দরকার লোকের হ’ত ; এখন সে দরকারই কমে গেছে। ষে রকম স্ত্রী-স্বাধীনতার হাওয়া বইছে— সরসী ছিছি করিয়া উঠিল। চিন্ময় বলিল, আমার কথাটা আগে শেষ করি, তার পর ছি ছি করবেন, যা খুশী করবেন। আমি বলছি, আগেকার কালে মেয়েরা ছিলেন পুরুষদের কাছে রূপকথার রাজকন্তের মত। তাদের মেঘবরণ চুল, আর কুঁচবরণ রঙের কথাই শোনা যেত ; চোখে দেখা যেত না । তাই তাদের একটিকে পাবার জন্যে লোকের আগ্রহের সীমা থাকত না । এখন পথে ঘাটে ট্রামে বাসে দেখে দেখে অভিনবত্ব আর কিছু নেই। তাই আকর্ষণও কমে গিয়েছে । আপনি আমার কথাগুলো বুঝতে পারছেন না, না? আর একটু খুলে বলি, তাহলে ? বলিয়া সে একটি সিগারেট ধরাইল ; ধরাইয়া গোটা কতক টান মারিয়া ধোয়া ছাড়িয়া বলিতে আরম্ভ করিল, একটা দৃষ্টান্ত দিই, শুকুন। সেকালে নিয়ম ছিল, স্বামী-স্ত্রীতে দিনের বেলা দেখাই হ’ত না । গভীর রাত্রে দেখাগুনে হ’ত। সমস্ত দিন পরস্পরের মন পরস্পরের দিকে টানত, অহরহ দেখা না-হওয়ায় টানটা গভীর এবং অস্তিরিক থাকত। রাত্রের মিলনটা স্বখের হত। এখন দিনে রাতে উঠতে বসতে খেতে গুতে এ ওর সঙ্গে লেপ্টে থাকেন, ফলে স্ত্রীর মধ্যে যে আকর্ষণের বস্তু, তা ক্রমেই লোপ পেয়ে যাচ্ছে। এরই ফলে পুরুষরা নারীর অভিনবত্ব ভুলে যাচ্ছে, তার খোজই পাচ্ছে না। তাই মেয়েরা হয়ে পড়ছে খেলার বন্ধ, আর পুরুষরাও মেয়েদের কাছে সাধারণ ঘর-কণার জিনিষ হয়ে প্রবাসী ১Neঔই দাড়িয়েছে। এইটেই আমার ভাল লাগে না। আর সেই জন্যেই আমি বিয়ে করব না ঠিক করেছি। কোন কমনপ্লেস্ কাজ—যা সবাই করে, তা করতে আমার ভাল লাগে না । সে ত আপনি কলেজেও দেখেছেন, কোন ছেলেই সাহস ক’রে আপনার সঙ্গে কথা কইতে আসত না, আর আমি— সরসী বলিল, অনেক বেলা হয়ে গেল। এক কাজ করুন, আপনি আমার এখানেই দুটি— চিন্ময় ব্যস্ত হইয়া কহিল, না, না । সেটা বডড কমনপ্লেস্ কাজ ! আমার ভাল লাগে না । ফুলশয্যার রাত্রি। বর ও ক'নে "পেসেন্স’ খেলিয়া কাটাইয়া দিল। দু-একবার ডামি রাখিয়া ব্রীজ খেলাও হইয়াছিল, রাত্রি প্রভাত হইল বলিয়া এ-খেলাটা জমিল না । চা আসিল ও খাওয়া হইয়া গেল । চিন্ময় বলিল, তুমি আমার জীবনের আদর্শটাকে রূপ দিয়েছ, তোমায় কি বলে যে ধন্যবাদ জানাব ! সরসী কহিল, কিছু না বললেই আমি ভাল বুঝতে পারব। আপনাকে না পেলে আমিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হতুম। দু-জনে একমত হইয়া বলিল, ভরিষ্কাদ্বংশীয়েরা বুঝিবে যে জগতে স্ত্রী পুরুষের এবং পুরুষ স্ত্রীর উপর নির্ভরশীল না হইলেও জগৎ অচল হয় না। —আপনি এখন কোথায় যাবেন ? ==মেসে । —কি করবেন ? —ম্লান করব, খাব, তার পর এপ্লিকেশন লিখে আপিসে আপিসে ঘূরব। —শেষেরটা না করলে হয় না ? —দিন-কতক নিশ্চয়ই হতে পারে, পাচ-শ টাকার ব্যালেঞ্চল কিছু আছে । —মাঝে মাঝে আসবেন ? —WS —সকালের দিকে আসবেন । —ন-হয় ছপুরের দিকে। —সকালটাই ভাল। =বেশ ।