পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ZgT ট্র্যাজেডি মনে হয় । নিজেকে ৰে হারিয়েছে, নিজেকে যে স্কুলেছে, তার চেয়ে বড় ক্ষতি আর কি হতে পারে ? “ভাবলাম সাড়া দিয়ে তোমার মূল্যবান সময় নষ্ট করি কেন ? প্রয়োজন ছাড়া ত আর আমাকে দরকার নেই।” শুনে আমার দিকে চাইলেন, বুঝতে চেষ্টা করছিলেন, ব্যঙ্গ না সত্য ? কারণ ওরকম কথা বলা আমার স্বভাব নয়। এত দিন তার কোন কথায় আমি কথা বলি নি। না করেছি বিদ্রুপ, না দিয়েছি বাধা । তাই বোধ হয় একটু-থাক সে কথা । আমার দিকে চেয়ে তিনি আমার কথাটা বুঝতে চেষ্টা করছিলেন। চিত্তের কোমলতা হারিয়ে এদের বুদ্ধিও কঠিন হয়ে গেছে। তিনি তার আঁকা ভ্রন্থটি ( জানি না কেন বিশ্বশিল্পীর আঁকার ওপর ফিনিশিং টাচ দিতে গেছেন, কারণ তিনি ও-কাজটা বাকী রাখেন নি, অতি যত্নে, অতি নিপুণভাবে ভ্র-ছুটি এঁকেছিলেন।--বোধ করি প্রকৃতির ওপর কলম-চালানই এ যুগের ত্রত ) ওপরে তুলে কোমলতাহীন স্বরে, যেন কোন ইনসিওরেন্সের এজেণ্টের সঙ্গে কথা কইছেন এমনি স্বরে বললেন, "দরকার না থাকলে তোমার কাছে বসে নষ্ট করার মত সময় আমার নেই। এসেছিলাম জানতে আজ মিসেস সিনার য়্যাট হোমে আসছ ত? দেখছি এখনও ত রেউীষ্ট হও নি, তার পর আবার যাবে ক্লাবে । নইলে আমার সঙ্গেই যেতে পারতে। যাক, তাতে কিছু এসে যাবে না, তুমি তোমার কারেই এস। আমার ওয়েট করার মত সময় নেই, আরও দু-একটা এন্‌গেজমেন্ট আছে।” বলে একবার নিজের শুভ্ৰ, স্বগোল হাতখানায় বাধা রিষ্ট-ওয়াচটা চোখের পাশ দিয়ে দেখে নিলেন । ভারী অস্বস্তি লাগছিল, তাই বললাম, “আমি আজ কোথাও যেতে পারব না। কিন্তু ঐ উৎকট সামাজিকতার খোলসটা ফেলে দাও না। ওগুলো আমার বিষাক্ত ধোয়ার মত লাগছে, দম যেন বন্ধ হয়ে আসছে।" কিছুক্ষণ ও হতবুদ্ধির মত চেয়ে রইল। বুঝলাম কথাগুলো মাথার মধ্যে ঢুকছিল না। তার পর কুপিত বিস্ময়ে বললে, “তোমার কথাগুলো ঠিক বুঝলাম না। What on earth do you mean f ffrwfl cwt.** TUR এটা শরতের মেঘ b~$$ নয়, এটুকু মনে রেখো। মাথাটা কি কোটেই ফেলে এসেছ আজ ? যাকৃ—ও সব বাজে কথা শোনবার মত— well, I have no time to spare, Bosn-of. আসছ ত ?” হাসি পেল। ডাকলাম। সেই বহুদিন আগে যখন কৃত্রিমতার আবরণে আমাদের প্রাণটা ঢাকা পড়ে নি, সহজ ছিলাম, তখন যেমন ডাকতাম, আজও তেমনই করেই ভাকলাম, “নন্দ ” স্বনন্দার প৷ আটকে গেল। যেন পথ চলতে চলতে কত যুগ পূর্বের ফেলে-আসা হারানো জিনিব খুজে পেয়েছে, যেন বহুদিন-বিস্তৃত স্বর মৰ্ম্মবীণায় বেজে উঠেছে, তাই সশঙ্ক অবিশ্বাসে কিছুক্ষণ নিশ্চল হয়ে থেকে, আমার দিকে ফিরে চাইলে । আবার স্পষ্ট স্বরে ডাকলাম, “নন্দ, আজ তোমার ভদ্রতা নাই-বা রাখলে ? আমার শরীরটা ভাল নেই, একটু কাছে ব'সো না স্ব ! বহুকাল ত আসা ছেড়ে দিয়েছ।" স্বনন্দা থমকে গেল। বাইরের সামাজিকতা ও কাঠিন্তে তার মনটা এমন অসাড় হয়ে গেছে যে আমার অকৃত্রিমতা ও কোমলতা সেখানে বুঝি সাড়া জাগায় না। আমার ‘নদী’ সকলের তথা সোসাইটির বহুপরিচিত স্ব-খ্যাত মিসেস চ্যাটাজী’র তলায় চাপা পড়ে গেছে। নিষ্ঠুর সোসাইটির যন্ত্রে আমার নন্দ “মিসেস চ্যাটাজীতে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। তবু মিসেস্ চ্যাটাঙ্গীর মধ্যে যে তত্তাহত, আত্মবিশ্বতা স্বনন্দ লুকিয়ে ছিল, সে আঘাত পেয়ে পলকের জন্তে জেগে উঠে কাছে এসে কপালে হাত দিয়ে বললে, “কি হয়েছে তোমার আজ বল ত ? নিশ্চয়ই মন খারাপ হয়েছে ? কে বুঝি—” তার কথা শেষ হবার আগেই তার হাতটা হাতের মধ্যে তুলে নিলাম, মনে হ’ল,--না, আজিও আমি মরি নি, নন্দাকে পেলে আজও আমি দশ বছর আগেকার মতই সুখী হ’তে পারি। তাই তার মুখের দিকে চেয়ে বললাম, “ন, কিছুই আমার হয় নি। আজ শুধু তোমায় চাইছি নন্দ । তোমার ছদ্মবেশটা খুলে এস আমার কাছে।” আমার স্বনন্দ সত্যই সুন্দরী ছিল। মনে পড়ে গেল, তাকে দেখে দেখে আমার কিছুতেই তৃপ্তি হ’ত না। তাই যখন-তখন তার দিকে চেয়ে থাকতে বড় ভাল লাগত। হয়ত