পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ہوتي هسty প্রবাসী $రితికా হয়ত শেষ জীবনে তিনি শাস্তি পাইবেন, যদি কন্যাকে তিনি মুখী দেখিয়া যাইতে পারেন। মমতাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ছেলেটি কি করে ? মমতা কম্পিতকণ্ঠে বলিল, “বি-এ পাস করেছেন। ওঁর বাবা ল পড়তে বলেছিলেন, কিন্তু উনি দেশের কাজ করতে চান, তাই করছেন।" যামিনী মনে মনে হাসিয়া ভাবিলেন মেয়ে সব খবরই জোগাড় করিয়াছে দেখি। মাত্র একবার দেখা হইলে কি হয় ? বন্ধু ছায়ার সাহায্যে যাহা কিছু জ্ঞাতব্য সবই জানা হইয়া গিয়াছে। মমতা যামিনীর মেয়ে বটে, কিন্তু জমিদার সুরেশ্বরেরও মেয়ে । তাহার মত একেবারে সংসারজ্ঞানহীনা হইতে পারে না । কিন্তু এখন আর বেশী কথা বলাইয়! মমতাকে আরও বিচলিত করিয়া তুলিতে তিনি চাহিলেন না। ঘরের আলোটা যাহাতে তাহার চোখে না লাগে এমন ভাবে দরজার জাড়ালে সরাইয়া দিয়া তিনি বাহির হইয় গেলেন। স্ববিধামত অমরকে ডাকিয়া ভাল করিয়া আলাপ করিতে হইবে । কিন্তু সুরেশ্বর যে আসিয়াই ইহাদের উপর খড়গহস্ত হইয়া উঠিয়াছেন, ইহাই ত বিপদ । রাত্রের খাওয়া-দাওয়ার সময় আসিয়া পড়িল । এখানে সন্ধ্যারাত্রির পরই চারি দিক এমন গভীর নীরবতায় পরিপূর্ণ হইয় ওঠে যে ঘুমাইয়া পড়া ছাড়া আর কিছুর কথা মনেই আসে না। চাকরবাকর কলিকাতায় রাত বারোটা একটা পৰ্য্যন্ত হৈ চৈ করে, এখানে কিন্তু সাতটার মধ্যে সকলকে খাওয়াইয়া দিয়া নিশ্চিন্ত হইবার জন্ত তাহারা ব্যস্ত হইয় পড়ে। ভাগ্যক্রমে স্বরেশ্বরের সকাল সকাল খাওয়াই নিয়ম, তাই তাহারা খানিকট বাচিয়া গিয়াছে। মমতা সকলের সঙ্গে খাইতে উঠিয়া জালিল। তবে খাইল না প্রায় কিছুই, কথাবার্তাও বিশেষ কিছু বলিল না। সুরেশ্বর খাইতে খাইতে বলিলেন, “কালই সকালে বেরুব ভাবছি। ও মেঘ কিছু না, দেখলে ত? একটু জোরে হাওয়া দিতেই উবে গেল। সকালে উঠে কাপড়-চোপড় তিন দিনের মত গুছিয়ে নিতে হবে। রবিবারেই ফিরে আসব। খোকা যেতে চাস নাকি সঙ্গে " সুজিত বলিল, “তা যেতে পারি।” বেড়াতেই যখন সে আসিয়াছে তখন যতটা বেড়ান যায় ততই ভাল। আর প্রজারাও যুবরাজকে চিনিয়া রাখুক, পরে ইহারই হুকুম মত ত তাহাদিগকে চলিতে হুইবে ? মমতা হঠাৎ বলিল, “আমরা এখানে আর সব জড়িয়ে কত দিন থাকব বাবা ?” সুরেশ্বর বলিলেন, “এক মাসের বেশী ত নয়ই। তোমার, থোকার সব পড়া কামাই হচ্ছে । নিতান্ত দায়ে পড়ে আস, না হ’লে এই বাজে সময়ে কেউ আসে ? ওদিকে দেবেশেরও বিলাত যাবার সময় হয়ে এল, গিয়ে তাদের সঙ্গে সব কথাবার্তা ঠিক করে ফেলতে হবে।” মমতার মুখ একেবারে পাংশুবর্ণ হইয় গেল। অবশু সেটা তাহার মা ছাড়া আর কেহ লক্ষ্য করিল না । গলা দিয়া কোন খাদ্যই আর তাহার পার হইল না। স্বজিত ও সুরেশ্বরের তখনও খাওয়া শেষ হয় নাই। কাজেই টেবিলে তাহাকে বাধ্য হইয়া বসিয়া থাকিতে হইল । মিনিট দশ পরে আবার সে জিজ্ঞাসা করিল, “বাবা, এখানকার প্রজাদের অবস্থা কি রকম দেখলে ?” সুরেশ্বর বলিলেন, “মন্দ কি ? যেমন থাকে ছোটলোকের অবস্থা তেমনই আছে।” মমতা যেন আজ মরিয়া হইয়া উঠিয়াছিল, বলিল, “এদের অবস্থার খানিকট উন্নতি করা একান্ত দরকার। কত দেশে কত কিছু করা হচ্ছে গরিবদের জন্তে, আমাদের দেশেই কেন হবে না ?” স্বরেশ্বর হঠাৎ সাধু সাজিয়া বলিলেন, “সে সব দেশে কত কোটীপতি, লাখপতি আছে, তারা সখ ক’রে পরের উপকার ক'রে বেড়ায়, আমাদের দেশে সকলেরই প্রায় এক দশা, কে কাকে দেখে ।” মমতার আজ সাহসের সীমা ছিল না। সে বলিল, “তা কি ঠিক বাবা ? আমাদের অবস্থা আর ঐ যে গ্রামের মাছুযগুলো না খেয়ে, কাপড় না পরে, মাঠে ঘাটে পড়ে মরছে, তাদের অবস্থা এক রকমই ।” স্বরেশ্বর এইবার স্ত্র কুঞ্চিত করিলেন, বলিলেন, "পৃথিবীর সব মানুষ ত ঠিক এক অবস্থায় থাকতে পারে না। উচু, নী. থাকবেই, সমাজের সংসারের কল্যাণের জন্তেই এ নিয়ম |