পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

33 سي مسوا প্রবাসী $N98R তাকাইবার একটা উগ্র ইচ্ছাকে প্রাণপণে দমন করিতে করিতে সে দ্রুত গতিতে চলিতে লাগিল। পথে যামিনীর সঙ্গে দেপা হইয়া গেল। যামিনী সারা দুপুর কত যে চিন্তা করিলেন তাহার ঠিকঠিকানা নাই। মেয়েকে অমরের হাতে সমর্পণ করিতে তাহার অনিচ্ছা নাই। সে ভদ্রঘরের ছেলে, স্বস্থ সবল, লেখাপড়াও শিথিয়াছে। রোজগারের চেষ্টায় না ঘুরিয়া যখন এমন করিয়া দেশের কাজে লাগিতে পারিয়াছে, তখন ঘরে হয়ত মোটা ভাত, মোট কাপড়ের সংস্থান আছে। তাহাই ঢের । ● কিন্তু অমরের মন তিনি জানিবেন কিরূপে ? মমতা যে তাহাকে হৃদয় দান করিয়া বসিয়া আছে, তাহা কি সে জানে ? জানিলেও নিজের মনে তাহার কি কোন প্রতিধ্বনি জাগিয়াছে ? সুরেশ্বর প্রাণ থাকিতে এ বিবাহে মত দিবেন না, তাহার শত্রুতার সম্ভাবনাকে স্বীকার করিয়া লইয়াও কি সে আগ্রহ করিয়া মমতাকে গ্রহণ করিবে ? যে-আশায় তিনি দরিত্রের হাতে মেয়েকে সম্প্রদান করিতে চাহিতেছেন, তাহ তাহার পূর্ণ হইবে ত? ইহার চেয়ে শত গুণ বেশী দরিত্র প্রতাপকে একদিন যামিনী নিজে আকুল আগ্রহে বরণ করিতে চাহিয়াছিলেন, কিন্তু সেও প্রতাপের প্রাণঢাল ভালবাসার গুণেই । অতখানি ভালবাসা কি অমর তাহার কন্যাকে দিতে পারিবে ? কে এ কথার উত্তর দিবে ? মমতা নিজে কিছুই জানে না। যামিনীকেই সন্ধান লইতে হইবে। সৌভাগ্যক্রমে স্বরেশ্বর এখানে নাই, না হইলে মমতার কাও দেখিয়া কি প্ৰলয় যে তিনি বাধাইয়া বসিতেন, তাহার ঠিকানা নাই। যামিনীকে এই দুই-তিন দিনের অবসরে মমতার সমস্ত জীবনের আর নিজের অবশিষ্ট জীবনেরও ব্যবস্থা করিয়া লইতে হইবে। মমতার বিবাহ হইয়া গেলে স্বরেখরের গৃহে যামিনীর আর স্থান হইবে না, তাহা এক রকম ধরিয়া जGष्ट्रीं शीघ्रं । রোদ পড়িতে আরম্ভ করিল। নিজেই বেড়াইবার ছলে বাহির হইয়া হাড়িপাড়ার দিকে যাইবেন, না ঘরোয়ানকে দিয়া অমরকেই ডাকাইয়া পাঠাইবেন, যামিনী তাঁহাই ভাবিতেছেন, এমন সময় এক জন চাকর জাসিয়া খবর দিল ষে কলিকাতার সেই ছোকরাবাবুদের দলের এক জন উহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছে। যামিনী বিস্থিত হইয়া বারান্দায় বাহির হইয়া আসিলেন। অমরই দাড়াইয়া আছে। যামিনীকে দেখিয়া সে অগ্রসর হইয়া আসিয়া প্রণাম করিল। যামিনী বলিলেন, “ও আপনি ? ওঁর কাছে কি এসেছিলেন ? উনি ত এখানে নেই ?” অমর বলিল, “না মা, আমি আপনারই সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।” স্বজিতের ঘরটা খালি ছিল, যামিনী অমরকে লইয়: সেইখানেই বসাইলেন। চাকরদের চায়ের জোগাড় করিতে বলিয়া দিলেন। অমর বলিল, “আপনার মেয়ে আজ আমাদের অনেক মাছ তরকারি সব দিয়ে এসেছেন। কালও পাঠাবেন বলছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে যদি স্বরেশ্বর বাবুর সঙ্গে রাগারগি বেধে যায়, সেটা বড় খারাপ হবে। আমাদের চলেই যাবে এক রকম করে, এতটুকু অসুবিধাতে আমরা কাজ ফেলে পালাব না । আপনারা আমাদের জন্তে ভাববেন না ।” যামিনী একটু হাসিয়া বলিলেন, “আমি না ভাবলেও মমতা ভাববেই। তার এই গরিব উৎপীড়িত প্রজাদের উপর বড় মায়া। উনি তাদের জন্তে কিছু করছেন না, এতে সে বড় দুঃখ পাচ্ছে । আপনারা তাদের জন্তে এত করছেন, এ জন্যে আপনাদের প্রতিও তার খুব শ্রদ্ধা। আপনাদের কষ্ট সে দেখতে পারে না।” অমর খানিক ক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয় বলিল, “তৰু বারণই করবেন। বেশী কিছু গণ্ডগোল এ নিয়ে হলে, বড় দুঃখের বিষয় হবে না কি ?” যামিনী বলিলেন, “সংসারে থাকলে সব গণ্ডগোল ত এড়িয়ে চলা যায় না ? আপনাকে ত আমি সবে চিনলাম, কিন্তু তবু অনেক দিনের পরিচিতই মনে হচ্ছে ।" অমর বলিল, “আমাকে আপনি বলবেন না, মা।” যামিনী হাসিয়া বলিলেন, “ত না-হয় নাই বললাম। মমতাকে আমি বললে ত শুনবে না সে, তুমিই বুঝিয়ে বল। তার জন্তে আমার ভাবনার অস্ত নেই। ওকে শেষ