পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

2ъзв শিক্ষার সংস্কার হওয়া একান্ত দরকার এই কথা বলিতেছেন । এই সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাবোধের সঙ্গে সঙ্গে কেবলমাত্র স্ত্রী-পুরুষের কর্মস্থল ও মানসিক গতির বিভিন্নতার দিকে দৃষ্টি রাখিয়া স্থলবিশেষে উভয়ের শিক্ষার বিশেষ ব্যবস্থাও করিতে হইবে। স্ত্রীপুরুষের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ, ইহা আজ তর্কের বিষয় না হইয়া, সমাজের ঐক্য ও সমাজের সর্ববিধ উন্নতির জন্য উভয়ের শক্তিরই বিভিন্ন দিক দিয়া সমানই যোগ্যতা ও আবশ্যকতা রহিয়াছে, ইহাষ্ট চিস্তার বিষয় হওয়া বাঞ্চণীয়। উভয় শক্তিরই সমান আবশ্বকতা ও যোগ্যতা—এই বোধ না হইলে দুৰ্ব্বলশক্তি নিজের বিশিষ্টত রক্ষা করিয়া জগতে প্রতিষ্ঠালাভ করিতে পারে না এবং প্রবলশক্তিও অপব্যবহারে নিজেকে পঙ্গু করিয়া ফেলে। সমাজের মঙ্গলসাধনক্ষেত্রে স্ত্রীপুরুষ উভয়ের শক্তিকেই এই জন্য তুল্য আসন দিতে হইবে। নানা কৰ্ম্মোপলক্ষে শহরে যাহারা বাস করিবার সুযোগ লাভ কবিয়াছেন, তাহদের পরিবারের মেয়েরা অতি সহজেই— ছোট বড়, নিম্ন উচ্চ, সাধারণ শিল্প,—যে-কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহিত সংযুক্ত হইয়া নিজেদের শিক্ষার ব্যবস্থা করিতে পারেন। কিন্তু যাহাদের সে স্থযোগ নাই, দূর পল্লীতেই র্যাহীদের আজীবন বাস করিতে হইবে, তাহাদের শিক্ষালাভের স্বব্যবস্থা করাই আমাদের পক্ষে মহা সমস্তার বিষয় হইয়া উঠিয়াছে। অথচ সমস্ত দেশ এই পল্লীতেই— পল্লীর জীবনমরণ সমস্যার উপরই দেশের ভাবী উন্নতি অবনতি নির্ভর করিতেছে। শহর নানাবিধ মুখসম্পদে, জ্ঞানবিজ্ঞানে যতই কেন উজ্জল হইয় উঠুক না, গ্রামের অর্থবিত্তশিক্ষাদীক্ষাসম্পন্ন লোকসমূহকে যতই সে নিজের কবলে টাঙ্গুক না কেন, যদি তাহ দেশের প্রাণের সঙ্গে যোগ রাখিতে না পারে, তবে তাহা বিকারগ্রস্ত রোগীরই মত নিজেই নিজের মৃত্যুর কারণ হইবে । সেই জন্য ঘরে বাহিরে, শহরে গ্রামে শিক্ষা ও উন্নতির যোগসূত্রটি স্থাপন করা চাই । পুরুষের সঙ্গে যেমন নারীর, তেমনই শহরের সঙ্গে গ্রামের শিক্ষা ও উন্নতি একই যোগে হওয়া চাই । 鲁 গ্রামের প্রতিটি সমস্তাই একে অষ্ঠের সহিত এমনভাবে জড়িত, যে একের আলোচনায় অপরটিও চোখে ভাসিয়া উঠে। সেই জন্তই আজ আমাদের আলোচনার বিধয় গ্রামের هاډ د ۹ م (؟ গ্রামের সমস্যা ঃ স্ত্রীশিক্ষা ? 0 A سty মেয়েদের মধ্যে কি ভাবে শিক্ষা বিস্তার করা যায় হইলেও, সাধারণ ভাবে গ্রামের কথাই মাখা তুলিয়া দেখা দিবে। আমাদের মনে রাখিতে হইবে যে গ্রামের মেয়েদের প্রকৃত উন্নতি ও শিক্ষা সমগ্র গ্রামের উন্নতি অবনতির উপরই নির্ভর করে ; কারণ সমগ্র জীবনের পরিপুষ্টি ও সার্থকতাতেই থও জীবনেরও সফলতা। দেশ যেমন অর্থে দরিদ্র, তেমনই মনেও দরিদ্র। সেই জন্ত বাংলার গ্রামে যে সামান্ত কতকগুলি বালক-পাঠশালা বা ততোধিক কম মধ্য-ইংরেজী বিদ্যালয় রহিয়াছে, তাহাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছোট মেয়েরাও পড়িবার সুযোগ পায় না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের একত্রে পড়িতে দিবার মত সাহস এখনও আমাদের দেশে হয় নাই । সেই জন্য ধীরে ধীরে পল্লীতে কিছু কিছু বালিকা-পাঠশালা হইতে আরম্ভ করিয়াছে। অথচ যোগ্য শিক্ষয়িত্রী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই না-থাকায় এই সব পাঠশালা কোনও উন্নতি লাভ করিতে পারিতেছে না। বালিকা-পাঠশাল দেশে অত্যন্ত কম থাকায় এবং মেয়েদের এক স্থান হইতে অন্য স্থানে চলাচলের নানা অসুবিধা ও বাধা থাকায় শিক্ষয়িত্রী ও ছাত্রীদের অন্য কোন পাঠশালার উন্নতি অবনতির সঙ্গে বা অন্য পাঠশালার শিক্ষয়িত্রী ও ছাত্রীদের সঙ্গে পরিচিত হইবার স্বযোগ ঘটে না—-শহরের বিদ্যায়তনের সঙ্গে পরিচয় ত দুরের কথা। যে-সমস্ত পাঠ্যবিষয় শিক্ষা-বিভাগ হইতে নিদিষ্ট হইয়াছে, সেই সমস্ত বিষয়ের জ্ঞান শিক্ষয়িত্রীদেরও তেমন না থাকায় তাহার ছাত্রীদের মনে কোন রকমের কৌতুহলের সৃষ্টি করিতে পারেন না । গ্রামের পাঠশালাগৃহগুলি সুন্দর ও প্রশস্ত না হওয়ায় এবং সেখানে লাইব্রেরী, খেলাধুলা বা মামোদপ্রমোদেরও কোন ব্যবস্থা না থাকায়, এই শিক্ষাস্থানগুলি মেয়েদের মনে কোন দিক দিয়াই আকর্ষণের স্থল হয় না। অভিভাবক-অভিভাবিকারা মেয়েদের শিক্ষাসম্বন্ধে উদাসীন হওয়ায় গৃহেও মেয়েদের মনে বিদ্যালাভের কোন আগ্রহের স্বষ্টি হয় না । অধিকাংশ শিক্ষিত গ্রামবাণী গ্রাম ছাড়িয়া শহরে বাস করায় গ্রামের আবহাওয়াও শিক্ষাসম্বন্ধে কোন উৎসাহের সৃষ্টি করে না । মাঝে মাঝে উপরিতন বিভাগ হইতে এই সব বিদ্যালয় পরিদর্শনের যে ব্যবস্থা রহিয়াছে, তাহা এত সাময়িক ও শাসনের রঙে