পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tూ\o প্রবাসী SN98R —পড়াশোনা করতে কে চায়, আমি ছেড়ে দেব উঠিল। ক্রমান্ধকারময় গৃহে উমার রহস্যময়ী মূৰ্ত্তির দিকে • পড়াশোনা । চাহিয়া অরুণের চোখে জল ভরিয়া আসিল । —উমা, যাবার আগে এত মন খারাপ করে না, তুমি छॉन —চুপ কর অরুণ, ভাল লাগে না আমার । —তুমি একটু শোও, একটু বিশ্রাম কর, অথবা চল, গঙ্গার ধারে বেড়াতে যাবে, গাড়ীট রয়েছে। —আমি কোথাও যেতে চাই না, তুমি বাস । শোন, সত্যিই আমি তোমাকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। তোমার নিমন্ত্রণ ছিল, আর খাবার টেবিলে একবার গেলাম না। কেন জান, আমার কেমন কান্না পাচ্ছে। আমার ভয় চচ্ছিল, তোমাকে দেখে হঠাৎ আমি হয়ত কেঁদে ফেলব। এটা আমার মনের অবসাদ জানি । কিন্তু সবার সামনে সত্যি যদি কেঁদে ফেলি, সবাই কি ভাববে বল ত । শোন, তোমার সঙ্গে হিসাবনিকাশ ত করা হয় নি । —কিসের হিসেব ? —বা, তোমায় কি কি জিনিষ কিনতে দিয়েছিলাম, দাম ত দিই নি। —ভারী ত জিনিষ । —না, কত টাকা পাবে ? হিসেব করেছ ? —হিসেব করি নি আর এখন করতেও পারছি না। —করেও বিশেষ লাভ হ’তন, আমার হাতে কিছুই টাকা নেই। তুমি আরও সব কি জিনিষ এনেছ, এক গাদা—বই রোম রোলার জন ক্রিসটোফার আমি আনতে বলি নি । —ওটা আমার উপহার । —আর বাকী জিনিষের দামগুলি ? —ভয় নেই, তোমায় দিতে হবে না, Book of Friendshipa es un mēr i —অর্থাৎ আমার নামে খরচ ত । --এ বইতে জমা ও খরচের মধ্যে প্রভেদ নেই। —বড় মজার হিসেবের খাতা ত । যাক, একদিন ত হিসেব করতে হবে । —আজি সে কথা নাই ভাবলে । —যত দিন ক্রেডিট পাওয়া যায়, মন্দ কি ! বাহিরে সন্ধ্যার মান আলো । আমগাছের পিছনে চাদ ( ૭ર ) পূজার পূৰ্ব্বেই উমারা কলিকাতা ছাড়িয়া দিল্লী চলিয়া গেল। কেবলমাত্র উমার সহিত নয়, মামীম, চন্দ্রা, অজয়, রায়-পরিবারের সকলের সহিত অরুণের এমন ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ হইয়া গিয়াছিল যে তাঁহাদের ছাড়িয়া জীবন যাপন করা সে কল্পনা করিতে পারিত না । উমারা যত দিন চলিয়া যায় নাই, তাহাদের কলিকাতা-ত্যাগের কথা সে মনের এক কোণে ঠেলিয়া রাখিয়া দিত, ভাবিত, শেষ পৰ্য্যস্ত হয়ত যাওয়া হইবে না, হয়ত হেমবাবুর আবার অসুখ করিবে অথবা গবর্ণমেণ্ট হইতে হুকুম আসিবে, খ্ৰীষ্টমাসের পর কাজে যোগ দিতে হুইবে । উমারা সত্যই চলিয়া গেল । কিন্তু তাহাদের বিরহকাতরতায় জীবন যতখানি শূন্ত, পৃথিবী যতখানি অন্ধকার হইয়া উঠিবে ভাবিয়াছিল, তেমন কিছু হইল না। স্বীয় মানসিক অবস্থা দেখিয়া অরুণ বিম্মিত, একটু লজ্জিত লইল। আকাশ তেমনই নীল, স্বৰ্য্যালোক তেমনই উজ্জল, মানবজীবন তেমনই আনন্দময় রহিয়াছে। অরুণ অনুভব করিল, তাহার হৃদয় যেন অত্যন্ত বেদনাসহিষ্ণু, নিৰ্ম্মম হইয়া গিয়াছে। নরম লোহা পুড়াইয়া পিটিয়া যেমন তীয় স্থা ইস্পাত তৈয়ারী হয়, তেমনই তাহার হৃদয়কে আঘাতের পর আঘাত দিয়া কে যেন কঠোর করিয়া দিয়াছে । কিন্তু এ কঠোরতা জীবনের প্রতি ব্যঙ্গ, বিদ্বেষ নয়। সে জীবনকে আরও গভীরভাবে বুঝিতে, সত্যদৃষ্টিতে দেখিতে চায় । কখনও সে আনমনা হইয়াউমাদের বাড়ির পথে চলিয়া যায়, শূন্ত বাড়ির দিকে চাহিয়া থাকে, বুকে একটা ব্যথা খচ, করিয়া বাজে। কখনও বা বই পড়িতে পড়িতে বা পথে চলিতে চলিতে সে ভাবে উমা এখন কি করিতেছে, উমাও কি এখন তাহার কথা ভাবিতেছে। অন্তর উদাস হইয় ওঠে। এ বেদন জালাময় নয়, স্বপ্নমধুর। এ বেদনায় সত্তার নবজন্ম হয়। বাস্তববাদী বিশ্লেষণ-কুশল নাস্তিক তার্কিক অক্লশকে পিছনের অন্ধকারে ঠেলিয়া দিয়া