পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র fৰৰিৰ প্রসঙ্গ—আদর্শ গৃহস্থের দশরোন্নাল-লাঠিয়ালের ব্যয় tசல்டு: বার বার নিরন্ন লোকদের চিত্র ছাপিতে লজা বোধ হয় কিন্তু প্রকৃত অবস্থা বুঝাইবার অন্ততম উপায় বলিয়া অগত্য ইহা ছাপিতেছি। ভারত-গবন্মেণ্টের আয়ব্যয় ভারত-গবন্মেন্টের বা কোন প্রাদেশিক গবষ্মেন্টের আধুব্যয়ের আলে চনা করিয়া কোন গবন্মে ণ্টকেই জনমত অনুসারে চালাইতে পারিব, এরূপ দুরাশা পোষণ করি না । কেবল সংক্ষেপে ব্যাপারটা বুঝিবার ও বুঝাইবার চেষ্টা করিতে পারি মাত্র । ১৯৩৬-৩৭ সালে, সরকারী রেলগুলার অায় বাদে, ভারত গবন্মেণ্টের আয় ৮৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা হইবে বলিয়৷ অনুমিত হইয়াছে। সরকারী রেলগুলার ব্যয় বাদে, অন্য মোট ব্যয় হইবে আনুমানিক ৮৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা । উদ্ধৃত্ত থাকিবে আনুমানিক দুই কোটি পাঁচ লক্ষ টাকা। এই উদৃত্ত হইতে এরুপ সিদ্ধান্ত করা যায় না যে, ভারতবর্ষের মানুষদের আর্থিক অবস্থা ভাল । যে-দেশে গবন্মেণ্ট প্রজাদের মত অনুসারে চলিতে বাধ্য নহে, তাহা দরিদ্র হইলেও, তথায় বেশী করিয়া ট্যাক্স বসাইয়া ও আদায় করিয়া রাজকোষে সচ্ছলতা ও উদৃত্ত দেখান যাইতে পারে। অবস্থাটা ভারতবর্ষে এই রূপ। তদ্ভিন্ন, গবষ্মেণ্টের প্রাদেশিক অংশগুলি হইতেও ইহা দেখান যায়। প্রায় সমুদয় প্রদেশিক গবন্মেণ্টের ১৯৩৬-৩৭ সালের আয়ব্যয়ের হিসাবে ঘাটতি দেখা যাইতেছে। যথা, আগ্ৰা-অযোধ্যায় ৭৪ লক্ষ, বঙ্গে ৪১ লক্ষ, পঞ্চাবে ১৬ লক্ষ, বিহারে ১১ লক্ষ, মধ্যপ্রদেশে ৮ লক্ষ। বোম্বাইয়ে ৪১ হাজার টাকা উদৃত্ত দেখান হইয়াছে সিন্ধুদেশকে বোম্বাই প্রেসিডেন্সী হইতে পৃথক করিয়া দিয়া। কিন্তু এই সিন্ধুদেশেরই ঘাটতি পূরণের জন্ত তাহাকে এক কোটি আট লক্ষ টাকা ভারত-গবন্মেণ্টের তহবিল হইতে দিতে হইবে। অতএব, বোম্বাই প্রেসিডেন্সীর সামান্ত উদ্ধৃত্ত ভাস্তিজনক মরীচিকা । ভারত-গবন্মেণ্ট উদ্ধৃত্ত দেখাইতেছেন প্রধানতঃ দুই উপায়ে—(১) অনাবশ্যকরূপ অধিক ট্যাক্স আদায় করিয়া এবং (২) প্রাদেশিক গবষ্মেণ্টসমূহের নিকট হইতে,বিশেষতঃ বজের নিকট হইতে, এত অধিক টাকা লইয়া যে তাহারা নিজ নিজ ব্যয় নিৰ্ব্বাহে অসমর্থ হইয়া পড়িয়াছে। ভারত-গবন্মেন্টের সামরিক ব্যয় সামরিক ব্যয়কে ডিফেন্সের অর্থাৎ দেশরক্ষার ব্যয় বলা হয়। “দেশরক্ষাৰু ব্যয় নামটি স্বাধীন দেশসমূহের পক্ষে ঠিক, কারণ সেই সব দেশে জলে স্বলে আকাশে যুদ্ধের ঘে আয়োজন করিয়া রাখা হয়, তাহা তথাকার স্বাধীনতা ও সম্পদ রক্ষার জন্ত নিয়োজিত হইয়া থাকে। এই নামটি সম্পূর্ণ সত্য সেই সব দেশের পক্ষে যাহারা অন্ত কোন পরদেশের মালিক নহে ও মালিক হইতেও চাহে না । কারণ, তাহদের যুদ্ধায়োজন আর কোন জাতিকে বশে আনিবার বা বশে রাখিবার জন্য প্রযুক্ত হয় না। যে-সকল দেশ স্বয়ং স্বাধীন অধিকন্তু অন্ত কোন কোন পরদেশের প্রভু হইয় তাহাদিগকে অধীন রাখে বা পরদেশ জয় দ্বার সাম্রাজ্য স্থাপন ও বুদ্ধি করিতে চায়, তাহাদের যুদ্ধায়োজনকে আংশিক ভাবে দেশরক্ষার ব্যয় বলা যাইতে পারে—সম্পূর্ণ রূপে নহে ; কারণ, ইহার কতক অংশ পরদেশকে বশে আনিবার ও রাথিবীর জঙ্ক ব্যয় করা হয় । , ভারতবর্ষের যুদ্ধায়োজনকে ঠিকৃ দেশরক্ষার ব্যয় বলা যায় না। ব্রিটেনের বৃহৎ জমিদারী সায়েস্তা রাখিবার এবং তাহা ব্রিটেনের স্বাধিকারে রাখিবার ব্যয় ইহাকে বলা যাইতে পারে । নাম যাহাই দেওয়া হউক, ১৯৩৬-৩৭ সালে এই ব্যয়ের পরিমাণু আমুমানিক কত হুইবে দেখা যাক। মোট রাজস্ব ৮৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ৪৫ কোটি ৪৫ লক্ষ সামরিক ব্যয় ধরা হইয়াছে। ইহার মধ্যেও একটু কৌশল আছে। তাহা বলিতেছি। সরকারী রেঙ্গগুলি দু-রকমের । এক রকমের রেলওয়েকে বলা হয় বাণিজ্যিক, অর্থাৎ তাহদের প্রধান উদ্দেশ্য যাত্রী ও মাল বহিয়া অর্থ উপার্জন । দ্বিতীয় প্রকার রেলওয়েকে বলা হয় ষ্ট্রাটেজিক, অর্থাৎ সেগুলি প্রধানত: ' যুদ্ধের জন্য আবশ্যক। এই দ্বিতীয় প্রকার রেলে এবার : প্রায় দু-কোটি টাকা লোকসান অকুমিত হইয়াছে। এই ঘ-কোটি টাকাও সামরিক ব্যয়ের মধ্যে ধরিয়া মোট সামরিক ব্যয় ৪৭ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা দেখাইলে তবে ঠিক হইত। যাহা দেখান হইয়াছে, তাহাই মোট রাজস্বের অৰ্দ্ধেকর অধিক--শতকরা ৫০৯ ভাগ । মোট ব্যয় হইবে ৮৫ কোটি ৩০ লক্ষ। তাহার মধ্যে সামরিক ব্যয় ৪৫ কোটি ৪৫ লক্ষ । মোট ব্যয়ের অর্ধেকের অধিক—শতকরা ৫৩২ অংশ-হুইবে সামরিক ব্যয় । আদর্শ গৃহস্থের দারোয়ান-লাঠিয়ালের ব্যয় কোন গৃহস্থের বার্ষিক মোট ব্যয় যদি হয় হাজার টাকা এবং তাহার মধ্যে দারোয়ানদের ও লাঠিয়ালদের বেতন ও লাঠির দাম প্রভৃতি বাবতে যদি মোট ব্যয় হয় ৫৩২ টাকা, তাহা হইলে সেই গৃহস্থকে আদর্শ গৃহস্থ মনে করিতে আমরা আইন অনুসারে বাধ্য। পরিবারবর্গের জন্ত আস্তান্ত ব্যয় যত কমই