পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ एछौबन्रांझब्र Σο2 সাত দিনে অরুণ সাইকেল-চড়া শিথিয় ফেলিল । তাহার স্পোর্টস্-প্রতি দেখিয়া উৎসাহ দিবার জন্ত শিবপ্রসাদ এক নূতন সাইকেল কিনিয়া আনিলেন। ঠাকুরমার আপত্তি টিকিল না। নূতন গাড়ী আসাতে দুই বন্ধু দ্বিচক্রধানে কলিকাতা বিজয় করিতে বাহির হইল। বৈশাখের খররৌদ্রে তাহারা সাইকেলে লম্বা পাড়ি দিতে আরম্ভ করিল—বেহালা, দমদম, কত অজানা পথ, অপরিচিত শহরতলী ; পথ ভুল হইয়। যাইত, পথ হারাইয়া ফেলিত, গাড়ীচাপ পড়িতে পড়িতে বাচিয়া ষাইত ; বরফ-দেওয়া সরবৎ থাইয়া মহা উৎসাহে তাহারা ঘুরিত । একদিন বালীগঞ্জ ছাড়াইয়া গড়িয়াহাটার নির্জন পথে অজয় হঠাৎ সাইকেল থামাইল ; পকেট হইতে এক সিগারেটের প্যাকেট ও দেশলাই বাহির করিয়া অরুণের হাতে দিয়া বলিল, খুলে ধরা দেখি । অরুণ বিস্থিত হইয়া বলিল, এ কি ? তুমি এসব খাচ্ছ না কি ? —ই্যা, হ্যা, খোল না প্যাকেট । সিগারেট টানতে টানতে যখন জোরে সাইকেল চালাবি, দেখবি কেমন মজা লাগে । . --না ভাই । —কি প্যান প্যান করিল। অরুণ একটা সিগারেট বাহির করিয়৷ মুখ পুরিল । আগুন আর ধরিতে চায় না । দুই-তিনটি দেশলাই-কাঠি জালিয়া বহু কষ্টে সিগারেট ধরাইল । দুই টান দিয়া ' কাঁশিতে লাগিল । —ভাই, গলা জীলা করে । —বাজে কথা, ও তোর ভয়, সিগারেট খেলে নাকি গলা জলে ? এত লোক খায় কি ক’রে । অজয় নিজে একটা সিগারেট জালাইয়া দু-এক টান लिंडा । —চল, সিগারেট টানতে টানতে খুব জোরে যাওয়া शूद । কিছু দূর গিয়া অজয় বলিল, হন্ট । অক্কণ বলিল, কি ব্যাপার ? সাইকেল হইতে নামিয়া সিগারেট ফেলিয়া দিল । অক্ষয় বলিল, ঠিক বলেছিল, খেতে মোটেই সুবিধের নয় । গল। খুস্থুল করে। ভাবিস না, আমি খাই। তবে একটা এক্সপিরিয়াল করা গেল । দুই বন্ধু এক গাছতলায় বসিল । দিন-সাতেকের মধ্যে সাইকেল-চড়ায় সখ মিটিয়া গেল। গরমও দিন দিন নিদারুণ হইয়া উঠিতেছে । মামীম আর দুপুরের রোদে বাহির হইতে দেন না । অরুণের জন্ত অজয়েরও ভয় করে । সে বড় অন্তমনস্ক হইয়া সাইকেল চালায়। চালাইতে চালাইতে হঠাৎ থামিয়া যায়। কোন পথিক, পথদ্বপ্তের প্রতি ৰিস্থিত তাবে চাহিয়া থাকে। এইরূপ ভাবে চালাইলে কোন দিন বুঝি গাড়ীচাপা পড়িবে | অজয় বিস্মিত ক্ষুব্ধ হইয়া জিজ্ঞাসা করে, কি হ’ল ? অরুণ লজ্জিতভাবে বলে, কিছু নয়, চল । অরুণ তাহার নবকাব্যের কথা ভাবে । একটি কুলি মাথায় ভারী বাক লইয়া চলিয়াছে, বোঝার ভারে ক্লিষ্ট দেহ আনত, কালে পিঠের পেশীগুলি ফুলিয়া উঠিয়ছে, দেহ ঘৰ্ম্মীক্ত, ক্লাস্তমুখে দৃঢ় ধৈর্য্য। অথবা, বিরাট কালো লোহার কল-চাপানো মহিষের গাড়ী, কলের ভারে গাড়ী সম্মুখে ঝুকিয়া পড়িয়াছে, মহিষগুলি প্রাণপণে গাড়ী টানিতেছে, পথের কোন গৰ্ত্তে চাকা পড়িয়া আটকাইয়া গিয়ছে, মহিষেরা টানিয়া তুলিতে পারিতেছে না, নীরবে চাবুকের মার থাইতেছে, দীর্ঘ চোখে করুণ বিহবল দৃষ্টি। অথবা প্রশস্ত রাজপথের পার্থে প্রকাও অট্টালিকা নিৰ্ম্মিত হইতেছে । কোন ব্যাঙ্কের বাড়ি বা পাটের কোম্পানীর আফিস । কুলির মাটি কাটিতেছে, ইট বহিতেছে, রাজমিস্ত্রি দেওয়াল গাঁথিতেছে, গগনস্পশী লোহার ফ্রেম, লোহার মিস্ত্রি গৰ্ত্ত করিতেছে, আগুন জলিয়া উঠিতেছে । অমনি নানা দৃষ্ঠের সন্মুখে অরুণ হঠাৎ সাইকেল থামাইয়া ফেলে । গরম অসহ হইয়া উঠিল । প্রভাত স্নিগ্ধ থাকে, কিন্তু সমস্ত দিন সুর্য্যরশ্মি অগ্নিবাণের মত ; আকাশ পিঙ্গলবর্ণঃ অপরাষ্ণুে ঈশানকোণে কালো মেঘ ঘনাইয়া আসে, রুদ্রের তৃতীয় নয়নের ক্ষুদ্ধ দৃষ্টির মত বিছাতের বিলকি ; ধূলা