পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

و هلاج পড়া ! পড়া ! কবিতার খাত, ডায়েরি, ডিকেন্সের উপন্তাস, সবডেঙ্কে চাবি দিয়া বন্ধ রহিল । ডিসেম্বর মাসে টেষ্ট হইয়া গেল। টেষ্ট-পরীক্ষার ফল অকণের তেমন ভাল হইল না । হেডমাষ্টার মহাশয় ডাকিয়! রীতিমত ধমকাইলেন । পরীক্ষার ফি জমা দিয়া অরুণ অপিস হইতে বাহির হইতেছিল,কেরানীবাবু তাহাকে ডাকিলেন, ওহে, তোমাদের ক্লাসের যতীন দত্তের কি হয়েছে বলতে পার ? —না, তার সঙ্গে বহুদিন দেখা হয় নি । —ছোকরা টেষ্টে খুব ভাল মার্ক পেয়েছে, কিন্তু ফি ত জমা দিয়ে গেল না, কাল জমা দেবীর শেষ দিন, খোজ নিও ত । আপিস হইতে যতীনের বাড়ির ঠিকানা জানিয়া লইয়া অরুণ তখনই তাহার বাড়ি চলিল । বাড়িটি কিছুদূরে, গলির পর গলি। একটি ছোট একতলা জীর্ণ বাড়ির সামনে আসিয়া সে নম্বর মেলাইল । যতীন বাড়িতেই ছিল । অরুণকে বিশেষ সাদরে অভ্যর্থনা করিল না । ঘরে এক ভাঙা চেন্নারে বসাইল । =তোমার অথখ করেছে নকি ? স্কুলে যাও নি, কাল পরীক্ষার ফি জমা দেবার শেষ দিন । → আমি জানি, আমি পরীক্ষা দিচ্ছি না । —দিচ্ছ না কি রকম ? তোমার টেষ্টের রেজাণ্ট খুব ভাল হয়েছে । —কি হবে পরীক্ষণ দিয়ে, তার চেয়ে একটা কাজকর্মের চেষ্টা করলে, —বা, পরীক্ষা তোমায় দিতেই হবে । —ন, আমি ঠিক করেছি, আমি দেব না । —না, না, কি পাগলামি করছ । তর্ক চলিল ৷ যতীনের সঙ্কল্প অটল। বাহিরে কে যতীনকে ডাকিল। অরুণকে বসিতে বলিয়া যতীন বাহিরে যাইতেই, পাশের দরজা খুলিয়া এক মহিলা ঘরে আসিলেন, মলিন থান-পরা, কক্ষ কেশ, শীর্ণ দেহ । অরুণ চমকিয় দাড়াইয়া উঠিল । —বস, বাবা, বল, আমি যতীনের মা । pt elસ્વત્રિા ઝા さいこ8ーネ অরুণ কোনমতে ইেট হইয়া একটা প্ৰণাম সারিয়া লইল । —থাক, বল, বাবা, তুমি যতীনের সঙ্গে পড়? —আীত্তের ইt | —আমার হয়েছে দায় । মরণও হয় না । তুমি ত এতক্ষণ বোঝালে, কি বললে, রাজী হ’ল ? —কেন ও ম্যাটিক দিতে চাইছে না ? —টাকা নেই, বাবা টাকা নেই। কি’র টাকা দেয় কোথা থেকে ? আমি বার-বার বললুম, আমার দু-চারখান গয়না এখনও রয়েছে, তুই তাই বেচে ফি জমা দে, তার পর জলপানি পেলে আমায় করিয়ে দিল—তা ছেলে যা গোয়ার—ওর বাবা ঠিক অমন ছিলেন, না হ’লে সাহেবের সঙ্গে ঝগড়া ক’রে এক কথায় দেড়-শ টাকা মাইনের চাকরি ছেড়ে দেন । —আচ্ছ আপনি ভাববেন না । —ই, বাবা, তুমি ওকে বুঝিয়ে বল, এত পড়লি, পরীক্ষাটা দে। কি হবে আমার গয়না । তুমি কিন্তু ব’লে না, আমি কিছু বলছি । যতীনের পদশব্দ শুনিয়া তাহার মা দৌড়িয়া চলিয়া গেলেন। অরুণ বলিল, যতীন, কাল স্কুলে নিশ্চয় এস । হেডমাষ্টার তোমায় ডেকেছেন । পরদিন স্কুলে অরুণ যতীনের জন্ত বহুক্ষণ অপেক্ষা করিল। যতীন আসিল না। অরুণ আপিস গিয়া বর্তীনের নামে ম্যাটিক পরীক্ষার ফি জমা দিয়া দিল। টাকাগুলি সে সরকার-মহাশয়ের নিকট হইতে চাহিয়া আনিয়াছিল । জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, শীতের দিনরাতগুলি পরীক্ষার পড়ায় কাটিয়া গেল। নানা ঐতিহাসিক ঘটনার খ্ৰীষ্টাব্দ, য়ালিজ্যাব্রার ফরমুলা, জিওমেট্রি ভেরি ইম্পরটেণ্ট থিওরেম ইত্যাদি ঘরের দেওয়ালে লিথিয়া দেওয়াল ভরিয়া তুলিল । প্রথম দুই দিন অরুণ ভাল পরীক্ষা দিল । তৃতীয় দিন তাহার একটু জর হইল। জর লইয়াই পরীক্ষাগারে যাইতে হইল। শিবপ্রসাদ একটু ব্রাণ্ডি খাওয়াইয়া দিলেন। নিজে মোটর করিয়া তাহাকে - পরীক্ষাগারে পৌছিয়া দিয়া আসিলেন । ইতিহাসের প্রশ্নের উত্তরগুলি অরুণ যেন স্বপ্নের ঘোরে লিথিয়া গেল ।