পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وقاموالاج যাহা হউক, এইখানে আমরা দেখিতেছি যে আদিম অসভ্য জাতিরাও ছেলেমেয়েদের মধ্যে এক সীমান্ত-রেখা টানিয়া এককে অন্ত হইতে পৃথক করিয়া রাখিতে প্রয়াস পায় । চিরু-মেয়ের নিজ নিজ বাড়িতে বাপমায়ের সঙ্গে থাকে এবং ছেলেরা সন্ধ্যার পরে জলবুকে চলিয়া যায় । ইহ হইতে যদি কেহ ধারণা করিয়া লয় যে চিঙ্ক ছেলেমেয়েদের মধ্যে কোন প্রকারের ধৌন-সংমিলন ঘটে না তাহা হইলে উহ নিতান্ত ভুল হইবে । প্রথমত: চিঙ্ক ছেলেমেয়েরা নাগা কুকি প্রভৃতি অন্তান্ত জাতি ও ছেলেমেয়েদের মত একত্রে জঙ্গলে কাঠ কুড়াইতে যায়, ক্ষেতে কাজ করে এবং অনেক সময় অধিক রাজি পৰ্য্যস্ত নাচ-গান খেলাধুলা করিয়া থাকে। এইরূপ সময় বয়স্থ ছেলেমেয়েদের মধ্যে অবাধে মেলামেশা হইয়া থাকে। ইহা ছাড়াও চিরু ছেলেরা সন্ধ্যার সময় জলবুকে একত্র হইয়া সমস্ত রাত্রি সেখানে অবস্থান করে না। সাধারণতঃ অবিবাহিত চিরু ছেলেরা তাহীদের মহিলা-বন্ধুদের সঙ্গে অনেক রাত্রি পর্য্যস্ত কাটায় । অনেক ক্ষেত্রেই একটু রাত্রি হইলেই ছেলের নিজ নিজ মহিলা-বন্ধুর বাড়িতে চলিয়া যার এবং তাহাদিগকে বাড়ির বাহিরে ডাকিয়া আনিয়া আমোদ-প্রমোদ করে । এইরূপে অনেক সময় মহিলা-বন্ধুদের সহবালে কাটাইয়া গভীর রাত্রিতে জলবুকে ফিরিয়া আসে । - কোমদের প্রথা চিরুদের প্রথা হইতে বিভিন্ন । পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি যে কোমদের মধ্যে বয়স্ক ভাই-ভগ্নীরা রাত্রিতে এক বাড়িতে অবস্থান করিতে পারে না । কিন্তু চিকদের মত কোমরা অবিবাহিত ছেলেদের রাত্রিযাপনের জন্ত জলবুক তৈরি করে না । প্রত্যেক কোম-গৃহে ঘরের দুইটি অংশ থাকে। অবশ্য এই অংশ দুইটির মধ্যে দেওয়াল বা কোন প্রকারের আবরণ নাই । কিন্তু এই দুইটি অংশের একটিকে অপরটি হইতে পৃথক বলিয়া মনে করিয়া লওয়া হয় । এই দুই পৃথক তাগের এক ভাগে বীপ-ম। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েয়া এবং অবিবাহিতা বয়স্থা কন্যা থাকে । অন্য ভাগে গ্রামের অন্য বাড়ির (অনাস্ত্রীয় ) কয়েক জন যুবক আসিয়া রাত্রিতে আশ্রয় গ্রহণ করে । বে-বাড়িতে কোন বয়স্থ অবিবাহিত কন্যা নাই, সে-বাড়িতে N98R গ্রামের কোন ছেলে গুইতে আসে না । অন্য পক্ষে ষেবাড়িতে এক জন অবিবাহিতা বয়স্থা কন্যা আছে, অনেক সময় সে-বাড়িতে চার-পাঁচ জন যুবক আসিয়া আশ্রয় লয় । যদিও অবিবাহিত কন্যার জন্য বীপ-মায়ের অংশে একধারে গুইবার ব্যবস্থা থাকে তথাপি এই ছেলেমেয়েদের মধ্যে অবাধ ধৌন-সংযোগ ঘটিয়া থাকে । এই প্রকারে গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতেই অন্য বাড়ির কয়েক জন যুবক রাত্রিধাপন করে । এক জন যুবক সচরাচর একই বাড়িতে প্রতিদিন শুইতে যায় এবং সে-বাড়ির লোকের তাঁহাকে “সোম্পা” বলিয়া ডাকে ও এই অবিবাহিত যুবক সেই বাড়ির মেয়ে বা মেয়েদিগকে “সম, বলিয়া ডাকে । সামাজিক প্রথানুযায়ী “সোম্পা” বা অবিবাহিত যুবকদিগের তত্ত্বাবধান করা “সম,’’ বা বাড়ির অবিবাহিত মেয়েদের কর্তব্য। সমর সোম্পাদের অনেক কাজ করিয়া থাকে । সকালবেল উঠিয়া সোম্পাদের হাত মুখ ধুইবার জল দেওয়া, তাহাদিগকে তামাক সাজিয়া দেওয়া সম,দের কাজ এবং রাত্রিতেও সোম্পার না-যুমান পৰ্য্যস্ত সন্ন দিগকে সোম্পাদিগের কাছে কাছে থাকিতে হয় । চিরু ও কোমদিগের মধ্যে এই প্রকারের আরও অনেক অদ্ভূত নিয়মকানুন বর্তমান । এই সকল বর্বর জাতির বিবাহ-পদ্ধতিও যে-কোন সভ্য জাতির বিবাহ-পদ্ধতি হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র । তবে আমাদের মত কোমদের মধ্যে কস্তার পিতা ও বরের পিতা একত্র হইয়া সম্বন্ধ স্থির করে। অবগু বাঙালী হিন্দুদের মধ্যে পুত্ৰকস্তার বিবাহ সম্পূর্ণরূপে পিতা-মাতার উপরে নির্ভর করে । তাহারা যে কন্ত বা বরের সঙ্গে বিবাহ ইচ্ছা করেন সেইখানেই বিবাহ হইয়া থাকে অস্ততঃ পল্লীসমাজে কন্স বা পুত্রের মতামতের বিশেষ কোন মূল্য দেওয়া হয় না । কিন্তু এ-বিষয়ে কোমদের কথা অনেকটা আধুনিক বলিতে হইবে । তাহদের মধ্যে কন্ত বা বরের মতামতই প্রধান । যদিও সম্বন্ধ স্থির করার ভার সাধারণতঃ কন্ত বা বরের পিতার উপর নির্ভর করে, তথাপি কন্যা বা পুত্র ইচ্ছা করিলে পিতার স্থিরীকৃত বর বা কনেকে বিবাহ নাও করিতে পারে । কেমিদের পিতা-মাতা পুত্র বা কস্তার বিবাহ স্থির করিবার আগে ভাল করিয়া জানিয়া লন যে