পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSU বিভূতি বুঝিল দোষ তাহারই, তাই আর কোন কথা উঠিবার অবসর না দিয়াই সরিয়া পড়িল । কিন্তু ঝগড়া-বিবাদ দিনরাতই একরকম লাগিয়া আছে । দারিদ্র্যের অস্তরঙ্গ সঙ্গী অশাস্তি, উহাকে মুহুর্তের জন্তও ছাড়িয়! থাকিতে পারে না । অভাবের দিনে যদি মুখ গুজিয়া চুপ করিয়া পড়িয়া থাকা যায়, তাহ হইলে হয়ত একটু শাস্তিও অন্ততঃ পাওয়া যায়, কিন্তু তাহা হইবার উপায় নাই । বিভূতি কোন দিনই কোন বিষয় লইয়া বেশী ভাবিতে পারিত না, একটা কিছু হইলেই সে দিশাহারা হইয়া পড়িত, প্রাণ পালাই-পালাই করিত । এক-এক সময় তাহার মনে হয়, এসব ফেলিয়া ছাড়িয়া একদিকে চলিয়া যায়, যাহা হয় হইবেই, অন্ততঃ সে ত এই ভাবনা-চিস্তার হাত হইতে বীচে। কিন্তু, পরমুহূর্তেই মনে হইত, সে ত নাহয় সংসারের দায় হইতে পলাইয়া নিস্কৃতি পাইল, কিন্তু বিদুর কি হইবে, সোনার, ঐ নিতান্ত কচি পিন্ট-টার । নজের স্বার্থপর কল্পনায় বিভূতি শিহরিয়া উঠিত । 8 হীরু বিশ্বাস দোকানের মালপত্ৰ যাহা কিছু আছে কিনিয়া লইতে চাহিতেছে, কিন্তু পঞ্চাশ টাকার বেশী দিতে চায় না। নিশি গাজুলী কিছুদিন ধরিয়া বলিতেছেন, ‘মহকুমা হইতে নৌকা করিয়া কয়লার চালান আনিয়া জলটুঙ্গি গ্রামে ঘর-ঘর জোগান দিলে মাসে বেশ কিছু থাকে, অবষ্ঠ যদি বুদ্ধি এবং গতর থাটাইয়া চালান যায় 1’ শেষ পর্য্যস্ত কয়লার ব্যবসাঁই আরম্ভ হইল । নৌকা করিয়া বিভূতি কয়লার চালান আনে, নৌকা করিয়াই ঘোরে, সুবিধামত খামিয়া বাড়ি-বাড়ি জোগান দেয়, নৌকাভাড়া, জন থাটাইবার খরচ, কয়লার দাম, সব দিয়া কিছু কিছু থাকে। তবে খাটুনি.আছে। খাটিতে বিভূতির অরুচি নাই। গাঙ্গুলী বলেন, ‘শ্রমেই লক্ষ্মী । শ্রম বিন। ধনলাভ হয় না ।” কয়লার চালান আসে গিরিশপুরের হাট হইতে। পথ কম নয়, জলপথে প্রায় কুড়ি মাইল হইবে । নদী দিয়া বড় ১৩৪২ cनौकांग्र कब्रिब्र भांण श्रांना श्ब्र ; थारणब्र यूएष cनोक मछूठ থাকে, তাহাতে রোঝাই করিয়া বাড়ি-বাড়ি পৌছাইয়৷ দেওয়া হয় । বিভূতি প্রায় সব সময় নৌকাতেই থাকে। গাজুলী বলেন, পৃথিবীতে কাহাকেও বিশ্বাস করিতে নাই, এমন কি নিজের হাতের আঙ্গুলকেও না । খালি বাণিজ্যে বসতি লক্ষ্মী নয়, টাকা আগামাত্র ট্যাকস্থ করার মধ্যেও লক্ষ্মী বসতি করেন বটে । কাজের সুবিধার জন্ত বিভূতি খাওয়-পরা আর মাসে মাসে কিছু দিয়া অনুকুল বলিয়া একটি লোককে রাখিয়াছে। বিভূতি যদিও প্রায় সব সময়েই নৌকায় থাকে, তথাপি হিসাব-পত্র অনুকূলই রাখে। লোকটা বিশ্বাসী। দেখিতে দেখিতে কারবার জাকিয়া উঠিল । মাসের মধ্যে দুই-একবার মুসলমান ব্যাপারীরা কয়লা-বোঝাই নৌকা খালে ঢুকায় বটে, কিন্তু তাহাদের আসা না-আসার, দরদামের কোনই স্থিরতা নাই। আশপাশের দুই-তিনখানা গ্রামের মধ্যে বিভূতিই কয়লার নিয়মিত কারবারি, চাহিদ। আছে কিন্তু মাল দিয়া কুলাইয়া উঠিতে পারে না। চাহিদামত মাল জোগাইতে হইলে কারবার আরও বড় করিয়া বেশী কয়লা আমদানী করা দরকার। কিন্তু টাকা কোথায় ? সংসার-খরচ চালাইয়া আর তাহা হইয় উঠে না। বিভূতি ভাবে, একবার কিছু টাকা পাইলে হয় । হঠাৎ, নিতান্ত অপ্রত্যাশিতভাবেই, টাকা দিবার লোক, জুটিয়া গেল । বর্তমানে গ্রামের চালডালের দোকানের মালিক হীর বিশ্বাসের তেজারতি কারবারও চলে। বিভূতির টাকার দরকার শুনিয়া নিশি গাঙ্গুলীর কাছে সে কথায়কথায় বলিয়া বসিল, “আমি টাকা দেব ; কিন্তু স্বদ চাই ।” গাঙ্গুলীর মুখে কথাটা শুনিয়া বিভূক্তি যেন হাতে চাঁদ পাইল । কিছু টাকা কারবারের পিছনে ঢালিতে পারিলে বঙ্গার জলের মত ঘরে টাকা আসিবে। সুদের জন্ত ভয় কি? এক ভরা কয়লা আনিয়া কোনরকমে সরুইয়ের খালে ঢুকাইতে পারিলে হজমৃদ্ধ আসল শোধ করিতেও তাহার গায়ে বাধিবে না। বিভূতি বলিল, তার জন্ত কি ? মুন দেব, দাও টাকা—’ টাকা আসিল, একটি দুইটি নহে, একশটি । একে-একে