পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਟੋਭਗਲੋ বয়স যেদিন পচিশ পূর্ণ হইবে সেইদিন তোমার এই পুত্র গৃহত্যাগপুৰ্ব্বক সন্ন্যাসধৰ্ম্ম অবলম্বন করিবে। ইহার অস্তথা হইবার সম্ভাবনা দেখি না ।” রান্ত্রি গভীর হইতে লাগিল। বিভূতি সেইভাবেই বসিয়া আছে । ক্রমে তাহার চোখে সব পরিষ্কার হইয়া আসিতেছে, অতীত, বৰ্ত্তমান, সয। পৃথিবী ত তাহাকে গৃহের মুখ হইতে চিরদিনই বঞ্চিত করিতে চেষ্টা করিয়াছে, সে শুধু জোর করিয়া আকৃড়াইয়া ধরিয়া আছে বইত নয় ! একেএকে তাহার সব কথা মনে পড়িতে লাগিল । ছেলেবেলায় মা হারাইয়া শোক দুঃখ কম পায় নাই। পরীক্ষায় অকৃতকার্যতা তাঁহার মেরুদণ্ড ভাঙিয়া দিল । বিবাহে সে মুখী হয় নাই। জীবনে সে যাহা-কিছু করিতে গিয়াছে, যাহা-কিছু করিয়াছে, সবই ব্যর্থতায় ভারাক্রাস্ত হইয়া উঠিয়াছে । বৰ্ত্তমান কৃষিসঙ্কট 39 ভাগ্যের লিখন মিথ্য হইবার নয়, আজ এই কথাটাই বিভূতির বার-বার মনে পড়িতে লাগিল । সেদিন শেষরাত্রে জলটুঙ্গি গ্রামের প্রাস্তসীমা দিয়৷ এক জন পথিক পথ অতিক্রম করিতেছিল । অঙ্গে তাহার গৈরিক, বাহুতে কণ্ঠে রুদ্রাক্ষের মালা এবং আর-আর সন্ন্যাসের অনভ্যস্ত সজ্জা । তাহার চিস্তাক্লিষ্ট পাণ্ডুর মুখে এক অপূৰ্ব্ব শাস্তির ছায় মূর্ব হইয়া উঠিয়াছে, সমস্ত চোেখ-মুখ, সৰ্ব্বাঙ্গ দিয়া তার মুক্তির আনন্দ উছৰ্লিয়া পড়িতেছে। যেন সেই মুহুর্তে তাহীর আত্মী সকল-ভোলার আনন্দে । আত্মহারা হইয়া যাত্রা করিয়াছে কোন ছঃখ-বেদনার অতীত লোকে । গ্রামের প্রাস্তে, পথ যেখানে বাকিয়া সোনারপুরের থালের তীর বাছিয়া দূরে চলিয়া গিয়াছে,সেইখানে পৌছিয়া সে মুহুর্তের জন্ত জলটুঙ্গির দিকে ফিরিয়া দাড়াইয় কি. ভাবিল। তার পর আবার চলিতে লাগিল । বর্তমান কৃষিসঙ্কট শ্ৰীহরিশ্চন্দ্র সিংহ, পি-এইচ ডি ধনবিজ্ঞানের অন্ততম প্রতিষ্ঠাত ফরাসী পণ্ডিত কেনে ( Quesnay ) সাহেব বলেছিলেন, “চাষী গরিব, রাজ্য গরিব ; রাজ্য গরিব, রাজ গরিষ।” আমাদের মত কৃষিপ্রধান দেশের পক্ষে একথা খুবই খাটে । সুতরাং আমাদের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সমস্ত হ’চ্ছে কৃষিসমস্যা । শিক্ষার অভাব, স্বাস্থোর অভাব, শ্রমশিল্পের অভাব, শিক্ষিত যুবকদের চাকুরীর অভাব,—সব বিয়ে অভাবের ত আমাদের অস্ত নেই, তবু কৃষি-সমস্যার কথাটা বিশেষ ক'রে বলছি এই জন্তে যে, এই সমস্যার সমাধান হ’লে শিক্ষার ও স্বাস্থ্যের সুব্যবস্থা সম্ভব হবে । শ্রমশিল্পের উৎপন্ন দ্রব্যসম্ভারের চাহিদা দেশেই যথেষ্ট হবে, রণতরীর ভয় দেখিয়ে বিদেশে বিক্রয়ের প্রয়োজন হৰে না। কৃষির উন্নতিতে, শিক্ষিত, অৰ্দ্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিভ, रूक्रब्रझे कांtछब्र अङांद झएव न । এতই যদি হ’তে পারে তবে কিছুই হচ্ছে না কেন ? তার কারণ, সমস্যাটি বড় জটিল । সরকারী অব্যবস্থার জন্তই হোক, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের জন্তই হোক, কিংবা অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং ঐতিহাসিক অন্তান্ত কারণপরম্পরাতেই হোক, আমাদের দেশের কৃষির এখন চরম দুৰ্গতি । মাথাপিছু জমীর পরিমাণ এত কম, প্রত্যেক কৃষিজীবীর পোষ্য এত বেশী, জমা এমন শতধা বিচ্ছিল্প, ঋণের ভার এরূপ দুৰ্ব্বহ যে, এত দিন ধরে কৃষকেরা যে বেঁচে আছে এই এক পরম আশ্চর্য্য ! এ-সৰ সমস্যার বহুবার বহু প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে।