পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ごcm丁● প্রবাসী বাঙালী ও স্বাস্থ্যরক্ষণ ২২৫ -বাঙালীরাই শিক্ষা করেন, এবং প্রবাসের বিভিন্ন প্রদেশে তাহা দেখাইয়া তদেশবাসীকে মুগ্ধ করিয়াছিলেন। স্বনামখ্যাত বাঙালী রামচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতবাসীদের মধ্যে প্রথমে ইংরেজ বিমানপোতারোর্থীদের মত বিমানআরোহণ ও ছত্রসহবোগে ভূমিতলে অবতরণ করিয়া সকলকে চমৎকৃত করেন । প্রাতঃস্মরণীয় সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের কনিষ্ঠ ভ্রাতা শ্ৰীযুক্ত জিতেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কিরূপে মুষ্টিযুদ্ধে লগুনে তাহার সহাধ্যায়ী ছাত্রগণকে পরাস্ত করিয়াছিলেন তাহ অনেকেই বিদিত আছেন । সম্প্রতি বিখ্যাত অম্বু গুহের পৌত্র শ্ৰীযুক্ত গোবর (যতীন্দ্রচরণ) গুহ সুদূর বিদেশে তাহার শারীরিক শক্তির পরিচয় দিয়া বিশ্ববিজয়ী বীর গামার প্রায় সমকক্ষ হইয়া বাঙালী অন্ত দেশীয় অপেক্ষা হীনবীৰ্য্য নহেন তাহা প্রমাণ করিয়াছেন । কিন্তু এখন ভুবনবিখ্যাত ওলিম্পিক ক্রীড়ায় বাঙালীর অস্তিত্ব নাই বলিলেই হয় । এখনকার মত তখন কেহ প্রবাসে বাঙালীকে “নাঙ্গা শির” “ভুখা বাংগালী” বলিয়া উপহাস করিতে সাহস করিত না । কি ধীশক্তি, কি শারীরিক শক্তিতে ও সাহসে সৰ্ব্ব বিষয়েই বাঙালী এককালে প্রাধান্ত দেখাইয়া এখন যে পশ্চাৎপদ হইতেছেন, তাহার কারণ অনুসন্ধান করিলে স্বাস্থ্যহীনতা একটা কারণ বলিয়া নিরূপণ করা যায়। কেহ কেহ অযথা অন্ত দেশীয়দের পরশ্ৰীকাতরতা, অকৃতজ্ঞতা এবং তাহদের প্রাদেশিক সংকীর্ণতার উপর দোষারোপ করিয়া নিজেদের ক্রটি নিবারণ সম্বন্ধে উদাসীন থাকেন । মানসিক উৎকর্ষের ভিত্তি শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং স্বাস্থ্যহীনতার সঙ্গে দরিদ্রতার যে নিগৃঢ় সম্বন্ধ তাহা স্বতঃসিদ্ধ। দারিদ্র্যদেব যদি গুণরাfশনাণী হয়, তবে স্বাস্থাহীনতা কেবল গুণরাশিনাশী নহে, সৰ্ব্বপ্রকার মুখসম্পদবিনাশী এবং দৌৰ্ব্বল্যের হেতু । মানুষ, কি যে-কোন প্রাণীই হউক, যদি দুৰ্ব্বল হয় ভবে তাহার হিংসাৰেষ অলসতা দাম্ভিকতা প্রভৃতি নীচ প্রবৃত্তির প্রাবল্য হয় তাহা নিশ্চয় । কি করিয়া আবার বাঙালীরা আপনাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করিয়া, কাৰ্য্যক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় নষ্টগৌরব উদ্ধার করিতে পারেন তাহা अक८णब्रहे ठिळुॉब्र बिषङ्ग । সেকালের গৃহস্থ-পরিবারে প্রতিগ্রাসে মাছের মুড়া’ o <-س-- R2 খাওয়ার উপদেশ আছে, তাহাতেও সরল গ্রাম্য লোকদের বুদ্ধিমত্তা ও খাদ্যবিজ্ঞানের জ্ঞান বিশেষ ভাবে প্রকাশ পায় । ছধ ভাত ও মাছের মুড়ো যে বাঙালীর আদর্শ খাদ্য তাহা সকলেই স্বীকার করিকেন । আধুনিক সভ্যতাভিমানী বাঙালীরা যদি সেকালের পাটনী ও চাষাভূষার ধীশক্তি ও দূরদর্শিতার সহিত খাদ্যের ব্যবস্থা করেন তবে বাঙালীর তাহাদের নষ্ট স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করিয়া সৰ্ব্ববিষয়ে শীর্ষস্থান অধিকার করিতে সমর্থ হইবেন একথা বলা বাহুল্য । বৈজ্ঞানিকের প্রতিপন্ন করিয়াছেন, উপযুক্ত খাদ্য খাইলে শরীর সুস্থ থাকে ও বলশালী হয় । খাদ্যের ভিতর ভিটামিন নামক জীবনীশক্তি-সঞ্চারক পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়াছে। খাদ্য হইতে ঐ জীবনীশক্তিপ্রদ পদার্থ নির্গত হইয়া গেলে বা নষ্ট হইলে সে খাদ্য সৰ্ব্বতোভাবে শরীররক্ষার উপযোগী হয় না এবং তাহ খাইলে বেরিবেরি রোগের উৎপত্তি হয় । বেরিবেরি রোগের প্রাদুর্ভাব বাঙালীর ভিতরই অধিক । ইদানীং বাঙালীর খাদ্য ভিটামিনবিহীন হওয়াতেই বাঙালী নষ্টস্বাস্থ্য, দুৰ্ব্বল ও দরিদ্র হইয়া পড়িতেছেন। ভাত বাঙালীর প্রধান খাদ্য ; ফেন ফেলিয়া দিলে চালের ভিটামিন নির্গত হইয়া যায়। তার পর মাছের মুড়া—পুটিমাছের পর্যন্তও—প্রতি গ্রাসে পাওয়া এবং দুধ, স্বপ্নেরও অগোচর হইতেছে। এখন শাকপাত, ফলমুল, নানাবিধ টাকটা তরিতরকারী ঘি ও দুধের পরিবর্তে ফেনহীন ভাত, অল্পমাত্র ভাজা মুগের ডাল, শুষ্ক আলুর ঝোল ভেজাল সরিষার তৈলমাথা আলুভাত, একটু বড়ি বা বেগনের ভাজা বড় এবং প্রস্তরচুর্ণমিশ্রিত সাদা ময়দার লুচি সাধারণ বাঙালীর উদর পূরণ করে। অধিক তাপে খাদ্যদ্রব্যের ভিটামিন নষ্ট হইয়া যায়, সেই জন্ত স্বতে বা তৈলে ভাজ। জিনিষ মুখপ্রিয় হইলেও স্বাস্থ্যের পক্ষে অপকারী। ভেজাল সরিবার তৈল খাদ্যহিসাবে তাল নয়, কেননা উহ। বেরিবেরি রোগের উৎপাদনে সহায়তা করে । এইরূপ অখাদ্য-বর্জন সহজেই করিতে পারা যায়, কিন্তু বাঙালীর অভ্যাসদোষে ও অলসতাবশতঃ জানিয়া-শুনিয়াই আপাতঃমধুর খাদ্যের সমর্থন করেন এবং ‘জানামি ধৰ্ম্ম নচ মে প্রবৃত্তি জানাম্য ধৰ্ম্ম নচ মে নিবৃত্তি’ এই বুলির