পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९©० SN°@之 —পষ্ণুকে একেবারে চোখে-চোখে রেখেছে। পাছে বড় তরফ টাকাকড়ি দিয়ে মিটিয়ে ফেলে। ব’লে বেড়াচ্ছে, বড়বাবুকে জেল দিয়ে তবে অন্ত কাজ । —কাকে কাকে আসামী করেছে ? —শুনছি তো বড়বাবুকে আর হারাধন পাইককে । মতি-মিথ্যে জানি নে বাপু । স্বহং চৈন্তিত মুখে বললে—ছ । গৃহিণী স্বামীর পাতে আর একটু মাছের তরকারী দিয়ে বললে—আবার বলছে তোমাকেও নাকি সাক্ষী মেনেছে । এই আশঙ্কাই মুহৃৎ করছিল । ভাতের গ্রাস তার হাত থেকে পড়ে গেল । বিস্মিত ভাবে বললে—আমাকে ? গৃহিণী ঝঙ্কার দিয়ে বললেন—বলছে তো তাই । মুখপোড়ার সব পারে । তোমার বাপু ওখানে যাওয়ার দরকার কি ছিল ? স্বহৃৎ খবরটা শুনে বিলক্ষণ জমে গেল । নিস্তেজভাবে বললে—ইচ্ছে ক’রে কি আর গিয়েছিলাম, আমি যে ওইথানেই ছিলাম। নিখিলের সঙ্গে যখন গল্প করছি তখনও কি জানি, পঞ্চুকে ধ’রে আনতে পাইক গেছে ? নিখিলের মুখ দেখে মনে হচ্ছিল বটে, কেমন যেন অন্তমনস্ক । কিন্তু এত কাও হবে তা ভাবি নি । তা হ’লে ত তখনই মিটিয়ে দিতাম । আমি না থাকলে ত পঞ্চুর শেষই হয়ে গিয়েছিল । হারাধনটা তো কম দুযমন নয় । —বেশ করেছিলে । এখন চাকরি ছেড়ে দিয়ে সদর আর ধর কর । ঢকু ঢক্‌ ক’রে খানিকটা জল খেয়ে মুহৎ বললে— ই্যা । সাক্ষী দেবার জন্তে আমি কঁদেছি কি না । নিথিলের বিরুদ্ধে আমি দোব সাক্ষী ! ওদের কি মাথা খারাপ হয়েছে ভাই আমাকে মেনেছে সাক্ষী ? সাক্ষী দোব ! আমার তো আর খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই! —তা ওর। যদি মানে ? কোর্টে দাড়িয়ে তুমি মিথ্যে কথা বলবে ? উত্তেজিত ভাবে সুহৃৎ বললে—দরকার হ’লে তাও বলব, তবু নিখিলকে বিপদে ফেলতে পারব না । মনে নেই, ওর ভগ্নীপতি এই চাকরিট না ক’রে দিলে আজি কোথায় দাড়াতাম ? আজি জমি করেছি, জায়গা করেছি, পুকুর বাগান কিনেছি, গ্রামের পাচ জনের এক জন হয়েছি, কিন্তু সে-দিনের কথা মনে ক’রে দেখদিকি ! সে ভদ্রলোক সাহায্য না করলে এমন চাকরি পেতাম ? তখন আমি কলকাতার জানতামই বা কি, আর চিনতামই বা কি ! আমার শরীরে কি মানুষের রক্ত নেই যে যাব নিখিলের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে ? নিধিলের ভগ্নীপতির উপকারের কথা মুহৎ কিছুতে ভুলতে পারে না । সে অনেক দিনের কথা । মুহৎ তখন সবে এটুলি পাস করেছে। সেই বছরই তার বিয়ে হয়েছে। তার বাপের যা সাংসারিক অবস্থা তাতে মোটা ভাত-কাপড়টা কোন রকমে চ’লে যায় । কিন্তু সেই বারই হ’ল অজন্ম । জমির ঘনি বিক্রি ক’রে যাদের সংসারের সব খরচ চালাতে হয় তারা পড়ল বিপদে । এই বিপদে পড়ে সুহৃৎদের এমন অবস্থা হ’ল যে, দিন আর চলে না । তাঁর বাপের শরীর নানা দুশ্চিস্তায় ক্রমেই গুকিয়ে যেতে লাগল। মেজাজ খিটখিটে হ’ল । কথার কথায় সুহৃদের অপমানের আর সীমা থাকে না । এই প্রকার দুঃসময়ে বিধাতার বরের মত এলেন নিখিলের ভগ্নীপতি । কিন্তু বহুপ্রকারে তার থেfশামোদ ক’রেও সুহৃদের বাবা পাত্তা পেলেন না । তিনি সোজা জবাব দিলেন, চাকরি খালি নেই। অবশেষে সুহৃদের মা গিয়ে ধরলেন একসঙ্গে তার স্ত্রী ও শাশুড়ীকে । র্তাদের অনুরোধ ঠেলতে না পেরে অবশেষে তিনি সুহৃৎকে সঙ্গে নিয়ে যেতে রাজি হলেন । কিন্তু হ্রহদের তখন এমন অবস্থা যে ট্রেন-ভাঁড়াটি পৰ্য্যস্ত নেই। যাওয়া আর হয় না । শেযে ভদ্রলোক নিজেই ট্রেনভাড়া দিয়ে তাকে নিয়ে যান, এক মাস নিজের বাসায় রেখে এই চাকরিটি জুটিয়ে দেন । এই কথা সুহৃৎ কোন দিন ভোলে নি । নিখিল তার বন্ধুও নয়, সমবয়সীও নয়। কোন রকমু আত্মীয়তাই নেই। তবু কলকাতা থেকে বাড়ি এসে একবার অন্তত তার ওখানে গিয়ে কুশল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করাই চাই । তাদের বাড়ির কারও অসুখ-বিমুখের খবর কাক-মুখে শুনলেও ফুটো ফল নিয়ে আসে । দুটো কপি বাড়ি আনলে তার একটা ওদের বাড়ি দেয় পাঠিয়ে। তার কৃতজ্ঞতায় ওরা অবশুই খুশী হয়, এবং প্রজার কাছ থেকে যে-ভাবে নজর নেয় সেইভাবেই কৃতজ্ঞতার উপহারও