পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩২ অপরাধে পিতার লাঞ্ছনা অহরহ দেখা যায়। বরং এইটিই প্রথা হয়ে দাড়াচ্ছে । কিন্তু সে কথা যাক । আর পাঁচ জন দুৰ্ব্বল লোকের মত পঞ্চুও এ অপমান নীরবেই সহ করত । কিন্তু করতে দিলে না ছোট তরফের অখিল বাৰু । উৎপীড়িতের প্রতি প্রতিবশে নয়, কিছুকাল আগে দহের দখল নিয়ে নিখিলের কাছে যে লাঞ্ছনা ভোগ করেছিল পঞ্চুকে অবলম্বন ক’রে সেই অপমানের সে প্রতিশোধ নিতে চায় । পঞ্চকে দিয়ে অখিল মামলা দায়ের করালে । কিন্তু বিপদ হয়েছে একটাও তার সাক্ষী নেই। হারাধন পঞ্চুকে পিছনের জঙ্গলের রাস্ত দিয়ে নিয়ে আসে । কেউ দেখেছে, কেউ দেখে নি । বারা দেখেছে নিখিলের ভয়ে হোক, খাতিরে হোক, তার চুপ ক’রে আছে। একমাত্র লোক যার এই ঘটনা দেখা অস্বীকার করার উপার নেই সে সুহৃৎ । অখিল অবশ্য কতকগুলো মিথ্যে সাক্ষী জোগাড় করেছে ( পাড়াগায়ে মিথ্যে সাক্ষী জোগাড় করা সবচেয়ে সহজ ) কিন্তু তাদের ওপর ততখানি ভরসা করা যায় না । এর পেশাদার ধুরন্ধর সাক্ষী হলেও ভাল উকিলের জেরার মুখে নাও টিকতে পারে । সেজন্তে অধিলের চোখ পড়েছে সুহৃদের ওপর । তাকে যদি পাওয়া যায় সে যত টাকা লাগে খরচ করতে প্রস্তুত । এই উদেখা নিয়ে পঞ্চ সকালবেলায় যুদ্ধদের সঙ্গে দেখা করতে এল । ভক্তিভরে সুহৃদের পায়ের ধুলো নিয়ে লোকট - হাউ হাউ ক’রে কেঁদে উঠল । তার গায়ের ক্ষত স্থানে স্থানে মিলিয়ে আসছে। কয়েক জায়গার তখনও দগ্‌দগ করছে । দেখে মুঙ্কদের দম্ব হ’ল । বললে,—বোস পঞ্চু । পষ্ণু বদলে বটে, কিন্তু কান্না থামালে না। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল। তাকে কি ব’লে সাস্বনা দেবে ভেবে না পেয়ে সুহৎ নি:শব্দে দাড়িয়ে রইল । একটু প্রকৃতিস্থ হয়ে পঞ্চু বললে—আমি তো খুনই হয়েছিলাম দাদাঠাকুর । আপনি না থাকলে জীবনই যেত । পঞ্চু কাপড়ের খুটে চোখ মুছলে । স্বস্থাৎ শান্তকণ্ঠে বললে—সবই অদৃষ্ট পঞ্চ । যা হয়ে शिरब्रुइ, श्रिम्न tिब्रप्श् । ७ निम्न व्ोल्न शीर्षोल्ने Fil II SNరి8R পঞ্চ তথাপি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কঁদিতে লাগল। সুহৃৎ আবার বললে-বরং কিছু টাকা নিয়ে মিটিয়ে ফেল । হাজার হোক, গ্রামের জমিদার । রাগের মাথায় যদি একটা অন্তায় ক’রেই থাকে, তাই ব’লে তার মুখ হাসাতে হবে ? পঞ্চ, তথাপি চুপ ক’রে রইল । সুহৃৎ বললে, সে না দেয়, আমি দোব। বুঝেছ পঞ্চু ? গ্রামের জমিদার তো বটে ; দোষ-ত্রুটি সবারই হয় । আবার কাল তুমি বিপদে পড়লে, ওই সব চেয়ে আগে ছুটে আসবে বুঝলে না ? মিটিয়ে ফেল । পঞ্চুর মুখ দেখে মনে হ’ল, সে যেন একটু নরম হয়েছে। উৎসাহিত হয়ে মুহৎ আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল । কিন্তু পঞ্চু করজোড়ে বললে—আজ্ঞে সে পথ আর নেই দাদাঠাকুর, ভেতরে ভেতরে অনেক কাও হয়েছে । বাধা দিয়ে মুহৎ বললে—কিছু কাও হয় নি পঞ্চু । আমি বলছি, মিটিয়ে ফেললে তোমার ভালই হবে । পঞ্চ কীৰ্ত্তনীয়ার ঢঙে একটা হাটু গেড়ে বসে বললে— আপনি বিদ্যাশে থাকেন দাদাঠাকুর, খপর তো রাখেন না । এর মধ্যে অনেক গুড়-মধু আছে । পঞ্চ টিপে টিপে হাসতে লাগল। মুহৎ বুঝলে, পঞ্চু মামলার রস পেয়েছে। ওকে ঘোরানো শক্ত। মুহৎ কিছু বিরক্ত এবং কিছু উৎসুক দৃষ্টিতে ওর মুখের দিকে চেয়ে রইল । গলা থাটো ক’রে পঞ্চ বললে ( যেন সুহৃৎকে অভয় দেবার জন্তে )–এর মধ্যে ছোটবাবু আছে দাদাঠাকুর । দু-হাতে টাকা খরচ করছে। আমার হাসপাতালের সব খরচ উনিই দিয়েছেন। এখান থেকে গাড়ী ক’রে গেলাম, এলাম, সব ঔর খরচ —পঞ্চু হেসে বললে, মায় একজোড় চটিজুতো । 鲇 দেখা গেল পঞ্চু বেশ আছে । গ্রহারের ক্ষত বাইরে এখনও শুকোয় নি বটে, কিন্তু ভেতরে তাঁর চিহ্ন মাত্র নেই । গ্রামের সকল কথার কেন্দ্র এখন সে । যারা তার সঙ্গে কথা পৰ্য্যস্ত বলত না, তারাও এখন তাকে ডেকে বসিয়ে তামাক খাওয়ায়, পাচটা কথা জিজ্ঞাসা করে । ঘন ঘন ছোটবাবুর সঙ্গে মেলামেশা করার ফলে তার চাল পর্য্যন্ত বদলে গেছে ।