পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਾਲ਼ কৃতজ্ঞতার বিড়ম্বন ২৩৩ মুহৎ একটু বিরক্ত ভাবেই বললে—তবে মর। ছোটবাবুর চালে পড়েছ, কিন্তু কাল ওদের ভায়ে ভায়ে ভাব হয়ে যাবে। তখন মরতে মরবে তুমি । পষ্ণু বুঝলে সে কথায় কথায় ভুল পথে চলেছে। ক’রে রইল। ধীরে ধীরে তার চোখে আবার জল জমতে লাগল। সে জল তার লেলি গণ্ড বেয়ে টপ, টপ, ক’রে নীচে পড়তে লাগল । জলভরা চোখ তুলে বললে—আমি গরিব ব'লেই কি বাৰু, আমাকে এত অত্যাচার সইতে হবে ? কোন ভদ্রলোক সাহায্য করবে না ? আপনি ত নিজের চোখেই সব দেখলেন দাদাঠাকুর ? কিন্তু এবারে আর ওর চোথের জলে স্বহৃৎ গললো না । রুক্ষ কণ্ঠে বললে—আমি নিজের চোখে কিছুই দেখি নি পঞ্চু । আমাকে এর মধ্যে টানলে তোমার লাভ হবে না । সুহৃৎ গই গঢ় ক’রে বাড়ির ভেতর চ’লে গেল । ওর দিকে আর ফিরে ও চাইল না | একটু পরে নাপিত এল । রাখু পরামাণিক । বাৎসরিক বন্দোবস্তের নাপিত । শনিবারে সে চুপ সুহৃৎ আসে । সেজন্তে রবিবার এসে কামিয়ে দিয়ে ঘায় ৷ একথাসেকথার পর রাখু বললে—গায়ে ত হুলুস্থল পড়ে গেছে দাদাঠাকুর । —fক রকম ? —পঞ্চু কামারকে নিয়ে । ভয় আমাদেরই দাদাঠাকুর । য"াড়ে ষাড়ে লড়াই লাগে নল-খাগড়ার প্রাণ যায় । —তোমাদের আবার ভয় কি ? সুহৃদের দাড়িতে জল বু লাতে বুলোতে রাখু বললে—ভয় বইকি দাদাঠাকুর । এখনই ত বড়বাৰু বলছেন, আগুন ছুটিয়ে ছাড়ব । খড়ের ঘরে বাস করি দাদাঠাকুর, রাত-বিরিতে কার ঘরে আগুন লাগবে আর তাদের জন্তে আমরামৃদ্ধ পুড়ে মরব। সুহৎ উপেক্ষার দেখাচ্ছে । রাখু একটু থমকে কি ভেবে বললে—তা হবে l তার পর একটু মুচকি হেসে বললে -আপনাকেও ত সাক্ষ্মী মেনেছে শুনলাম - ব’লে তীক্ষ দৃষ্টিতে তার দিকে চাইলে । কিন্তু মুহৎ নিরাসক্ত ভাবে শুধু বললে—হ । ుe=': ' সঙ্গে বললে—ও এমনি ভয় —আজ সকালে পঞ্চু এসেছিল বুঝি আপনার কাছে । সুহৃত তেমনি ভাবে আবার বললে—ছ । কিন্তু রাখু তথাপি দমলে না । বললে—আপনি দেবেন সাক্ষী ? হুঃ ! বড়বাবু সে দিন বলছিলেন, সুহৎ দেবে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী ? সে খাচ্ছে কার ? আমাদের দয়াতেই না সে মানুষের মত হয়েছে ? _. মুহৎ যেন চমকে উঠল । কিন্তু তখনই শাস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলে—নিখিল নিজে বলছিল ? --বলবেন বইকি ? তার ভগ্নীপতির দৌলতেই আপনার কাজটা হয়েছে কি না, সেই কথা আর কি ! সুহৃৎ শুধু বললে—ছ* । রাখু আপন মনেই বলতে লাগল—আমি বললাম, বড়বাবু, তিনি কথখুনো আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবেন না । বাড়িতে দুটো কমলালেবু আনলে একটা আপনার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন । তিনি তেমন লোকই নন । বড়বাবুও বললেন—ই, সে আমাদের খুব অল্পগত । সুহৃদের চোখের দৃষ্টি অর একবার তীক্ষ হয়ে উঠল। কিন্তু সে মুখে কিছু বললে না। . সুমুখ দিয়ে বড় তরফের গোমস্ত নকড়ি ঘোষ যাচ্ছিল । নকড়ি বেঁটে মোটা কালো । মাথায় একসঙ্গে টাক এবং টিকি ! মুখে খোচা খোচা পাকা দাড়ি । গায়ে একটা আধময়লা লংক্লথের পিরাণ। গলায় সরু তুলসীর মালা । নাকে রসকলি । পারে তালতলার চটি। বগলে ছাতি । সুহৃৎকে বৈঠকখানায় দেখে রাস্তা থেকেই দু'হাত কপালে ঠেকিয়ে নকড়ি প্রণাম জানালে । কাছে এগিয়ে এসে বললে—এই যে ! কাল রাত্রে এসেছেন বুঝি ? বড় বাবু বলছিলেন••• - সুস্থাৎ মুখ না ফিরিয়েই বললে—ওটা নিখিল মিটিয়ে নিলেহ পারত। মিছিমিছি খানিকটা কেলেঙ্কারী बांधtcन ! নকড়ি একটা সিড়িতে দাড়িয়ে উপরের সিড়িতে একটা পা-রেখে বললে –আজ্ঞে প্রথম হ’লে মিটুতে । এখন দু-পক্ষেরই জেদ চেপে গিয়েছে। এসপার-ওস্পার না হ’লে আর মিটবে না। আপনি বড়বাবুর সঙ্গে দেখা করেছেন তো ?