পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৬ প্ত প্রবাসনা ; S N58 R অখিল বললে—মাঝে মাঝে মনে হয়, সব ছেড়ে-ছুড়ে দিয়ে যেদিকে দুই চোখ যায় চলে যাই । এ ঝঞ্চাট আর পোয়াতে পারি না । কিন্তু বিষয়ের কীট আমরা, সাfধ্য কি চলে যাই । অখিল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বললে—এই দেখ না, কোথাও কিছু নেই পঞ্চু কামারের একটা হাঙ্গাম ঘাড়ে এসে চেপেছে । মহৎ তাড়াতাড়ি ব্যগ্রভাবে বললে—কেন ভাই সামান্ত একটা ব্যাপার নিয়ে ভায়ে-ভায়ে ঝগড়া করিস্ ? মিটিয়ে ফেল । তুই ইচ্ছে করলেই মেটে । বিষয়কৰ্ম্ম পরিচালনা ক’রে ক’রে বয়সে না হোক বুদ্ধিতে এবং মনে অখিল সত্যিই বুনো হয়েছে । মিষ্টি মিষ্টি হেসে বললে—মেটে ? বেশ আমি রাজী, তুহঁ মিটিয়ে দে । এত অবলীলাক্রমে অপিল কথাটা বললে যে, মহৎ কি বলবে খুজে না-পেয়ে বিমূঢ়ের মত চেয়ে রইল । হঠাৎ তার নজরে পড়ল, পাশের পাচিলের আড়াল থেকে কে যেন একবার উকি দিয়েই মাথাটা সরিয়ে নিলে । কে ওটা ? কিন্তু পাচিলটা অধিলের পেছনে। সে টের পেলে না । তেমনি ভাষে হাসতে হাসতে বললে—এত সহজ নয় রে ভাই, এত সহজ নয় । চেষ্টার আমি ক্রটি করি নি। নইলে ভাইকে কি আর সত্যিই আমি জেলে দিতে চাই ? অখিল উচ্চৈঃস্বরে হেসে উঠল । সুহৃৎ সে হাসির শব্দে একবার চমকে তার দিকে চেয়েই আবীর পাচিলের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে । আবার সেই মাথা । স্বহৃৎ স্পষ্ট দেখলে, নকড়ি ঘোষের মাথা । আপিল যে তার কাছে এসেছে এ খবর এরই মধ্যে নিধিলের কাছে পৌছে গেছে । তার পর হয় নিখিল নকড়ি ঘোষকে আড়ি পাততে পাঠিয়েছে, কিংবা সে নিজের ইচ্ছাতেই এসেছে। নিজের ইচ্ছায় নয়, এত সহিস তার হবে না । নিশ্চয়ই নিখিলই পাঠিয়েছে। সে দ্বাতে ঠোঁট চেপে চুপ ক’রে রইল । অখিল বলতে লাগল—আমাকে কি করতে বলিদ তুই ? পঞ্চু আমার প্রজা । গরিব । কি মীর সে খেয়েছে তুই ত নিজের চোখেই দেখেছিস । হ’লহঁ-বা নিখিল ভাই । গরিব প্রজাকে যদি অন্তের উৎপীড়নের হাত থেকে না বাচাতে পারি, ত কিসের জমিদার আমি ? আমার তাহ’লে বানপ্রস্থ নেওয়াই উচিত । অখিল দেখলে স্বহং খুব মনোযোগের সঙ্গে তার কথা শুনছে। গভীর আবেগের সঙ্গে বলতে লাগল—তবু লিখিল যদি একবার আমাকে বলত, কিংবা তার নিজে এসে বলতে লঙ্গ করে একজন লোক পাঠিয়েও জানতে যে, যা হ’য়ে গিয়েছে হ’য়ে গিয়েছে ব্যাপারটা মিটিয়ে নাও, তোমার গায়ে হাত দিয়ে বলছি আমি তখনই মিটিয়ে দিতাম ! সত্যি বলতে কি, আমি এমনও ভেবেছিলাম যে, নিখিল যদি দিতে রাজী না হয় আমি নিজের পকেট থেকেও পঞ্চুকে দু-দশ টাক দিয়ে, দুটো ভাল কথা বলে বিদায় করতাম । তা নয়, উলটে আমাকেই শাসিয়ে বেড়াতে লাগল, স্থান করেঙ্গে, ত্যান করেঙ্গে 1 দেখ দেখি কfও ! সুহৃং বেশ জানে অখিল মা বলছে তার এক বর্ণও সত্য তবু অধিলের চোখ মুখ দেখে, তার আবেগপূর্ণ কথা শুনে কিছুতে তাঁকে অবিশ্বাস করত পারলে না। কেবল শ্যে চেষ্টা ক’রে বললে—তোর দুটি হতে ধরছি, ভাই, কোন উপায়ে ঘদি পারিস মিটিয়ে ফেল। আমি বলছি, এতে সবই তোর স্থখ্যাতিই করবে । সুহৃদের হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে অখিল বললে— এই বত্রিশ বন্ধনের মধ্যে বসে বলছি, তুমি মিটিয়ে দিতে পার আমি রাজী । মামলাম্ব বে টাকা আমার গেছে তা বাক । ত চাই নে । তুমি তো নিখিলের অন্তরঙ্গ লোক, দেখ না একবার চেষ্টা ক’রে । কিন্তু যদি না পাৱ ? তাহ’লে ? তাহ’লে যে কি, তা হহং জানে। অভিভূতের মত শুধু অখিলের কথার পুনরাবৃত্তি ক'রে বললে—তাহ’লে ? —তাহ’লে তোমাকে সাক্ষী দিতে যেতে হবে । একটি কথাও মিথ্যে বলতে হবে না । শুধু যা দেখেছ তাই । ব্যস। রাঙ্গী ? মুহৎ জবাব দিতে পারলে না । শুধু পাচিলের দিকে একবার চাইলে । কাউকে দেখতে পেলে না। নকড়ি ঘোষ হয়ত চ’লে গেছে, কিংবা এখনও আড়ালে দাড়িয়ে আছেই । কে জানে ? - এমন সময়ে হারাধন পাইক লাঠি ঘাড়ে ক’রে এসে দাড়াল। ছোটবাবুকে দেখে হারাধন সসন্ত্রমে প্ৰণাম नद्म ।