পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९8९ "ত্ত্বেবেচনাচটং, SN°8女 অতিকষ্টে খানিকটা মনের জোর সংগ্রহ করে ললিত লীলার কাছে চলল। কিন্তু তার ঘরের দরজা পৰ্যন্ত পৌঁছেই আবার তার সমস্ত সাহস অন্তর্ধান করল। ইচ্ছা হ’ল সেইখান থেকেই সে ফিরে আসে, কিন্তু লীলা । তাকে তখন দেখে ফেলেছে । এ অবস্থায় ফিরে আসার উপায় নেই। বাধ্য হয়েই সে ঘরের মধ্যে চুক্ল । লীলা তার দিকে তাকিয়ে একটু ক্ষীণ হাসি হেসে বস্ত বললে, কিন্তু ললিত যেন শুনতেই পায় নি এমন ভাবে এসে লীলার মাথার দিককার জানুলাটা খুলে দিয়ে দাড়িয়ে রইল । লীলা জিজ্ঞাসা করলে, তোমার শরীরটা কি আঙ্গ ভাল নেই—বডডষ্ট শুকনো-শুকনে দেখাচ্ছে যেন ? --না, অস্বর্থ-বিমুখ কিছু করে নি বটে তবে ভাবনাচিন্তা— —শরীরের ওপরও কি অত্যাচার কম হচ্ছে ? আমারই জন্তে তোমার এত কষ্ট দেখলে অন্ত সময় আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারভূম না। কিন্তু অসুখটা হয়ে আমার শরীর মন এমনই দুৰ্ব্বল হয়ে পড়েছে যে স্বার্থপরের মত কেবলই তোমায় দুঃখ দিচ্ছি। তুমি কাছে না থাকলে আমি এক দণ্ডও স্থির থাকতে পারি না । তুমি এখান থেকে কোথাও ঘেও না । ঝি-চাকরে সব কাজ করবেএখন—তুমি এখানেই বিশ্রাম কর । —বিশ্রাম করবার আমার মোটেই দরকার নেই, আমাকে এখনই একবার ডাক্তারের বাড়ি যেতে হবে— চাকরটা ত সব কথা বুঝিয়ে বলতে পারবে না । —ন না, ও ঠিক পারবে। না-হয় একখানা চিঠি লিখে ওর হাতে দিয়ে দtও । তাছাড়া রাত্রে ত ডাক্তার নিজেই আসবে। তুমি কোথাও ষেও না লক্ষ্মীটি। কি মুস্কিল ! ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই সংক্রামিত ঘরে বসে থাকতে হবে ? তার চেয়ে মৃত্যুর বিবরে মাথা গলানও ত নিরাপদ । ললিত অত্যন্ত বিব্রত হয়ে পড়ল, তার মুখ শুকিয়ে উঠল। হঠাৎ মনে হ’ল যেন গলার কাছটা ব্যথা করছে। সেখানটায় একবার হাত বুলিয়ে দেখতে চেষ্টা করলে ফুলেছে কি-না। কিন্তু তার উত্তেজিত বুদ্ধি দিয়ে সে বুঝতে পারলে না এ-সব তাঁর কল্পনা না সত্য। একএকবার ইচ্ছা হচ্ছিল এক ছুটে সেখান থেকে পালিয়ে যায় কিন্তু তাও সে পারলে না। কি করবে ভেবে না পেয়ে .xমসহায়ের মত কেবল এদিক-ওদিক চাইতে লাগল । হঠাৎ তার দৃষ্টি গিয়ে পড়ল টেবিলের ওপর নানা রঙের ওষুধের শিশিগুল যেখানে ভীড় ক’রে দাড়িয়ে ছিল সেইখানে। সেদিক থেকে চোখ না ফিরিয়েই সে লীলাকে জিজ্ঞাসা করলে—তোমার কি এখন খুব যন্ত্রণা হচ্ছে ? লীলা বললে—যন্ত্রণা ত সব সময়ই আছে, তবে মাঝে মাঝে যে-রকম অসহ হয়ে ওঠে এখন তেমনটা নেই। —যন্ত্রণ কমবার ওষুধটা এখন আর একবার খাও না, তা হ’লে ওটুকুও যাবে’খন । —এখন থাক, বিশেষ দরকার হয় পরে খাব । ওটার এমনি বিত্র ঝাঝ— —ন, না, এখনই একবার খাওয়া ভাল—ব’লে স্ত্রীর সম্মতির অপেক্ষ না রেখেই ললিত ওষুধ ঢালতে আরম্ভ করলে । তার হাত এত কঁপিছিল যে ফেঁটাগুলো সে ঠিক ক’রে ঢালতে পারলে না । পাচ ফোটার জায়গায় প্রায় পনরো ফোটা ওষুধ গ্লাসের মধ্যে পড়ল। কিন্তু সেদিকে সে নজর দিলে না, ডাক্তারের সতর্কতার বাণীও বোধ হয় তার মনে পড়ল না । গ্লাসটা সে লীলার দিকে এগিয়ে ধরলে । লীলা তার মুখের দিকে তাকিয়ে বললে—বাস্তবিক তুমি আমার জন্তে এত ভাবে, এত ভালবাস যে আমিও তোমার বোধ হয় অত ভালবাসতে পারি নে। একথা আজ আমার স্বীকার করতে একটুও বাধছে না। আমার একটু উচু ক’রে ধরবে, তা হ’লে ওটা খেতে সুবিধে হবে । এখন আর রোগের ভয়ে ললিত ইতস্ততঃ না ক’রে বা-হাতটা স্ত্রীর পিঠের নীচে দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে একটু তুললে, তার পর ওষুধের গ্লাস তার মুখে ধরলে । ওষুধ খেয়ে লীলা ছাপিয়ে ওঠবার মত হয়ে মুখটাকে বিকৃত করলে। ললিত জিজ্ঞাসা করলে—ওটা খেতে কি তোমার বডডই কষ্ট হ’ল । চেষ্টা ক’রে একটু হাসির ভাৰ টেনে এনে লীলা বললে—কষ্ট ? না কষ্ট আর-কি ! এমন ক’রে তোমার কোলে শুয়ে তোমার হাতে বিষ খেতেও আমার কষ্ট झम्न न !