পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Re সম্বন্ধে আলোচনা ও গবেষণার কথা শোনা উচিত ছিল, কিন্তু সেরূপ কোন চেষ্টার পরিচয়ই কোথাও পাওয়া যাইতেছে না। এমন কি ট্রেনিং কলেজগুলিতেও কোথাও মাতৃভাষা শিখাইবার স্বর্ভূক্তম প্রণালী আবিষ্কার করিবার চেষ্টা বা অালোচনা চলিতেছে বলিয়া মনে হয় না । অথচ সেখানে method of teaching English Toto afal oil ও আলোচনা হইতেছে। শুধু ইংরেজীর কথাই বা কেন বলি, মাতৃভাষা বাদে ইতিহাস ভূগোল অঙ্ক ইত্যাদি আর সকল বিদ্যা শিখাইবার প্রণালী সম্বন্ধে পঠন-পাঠন সেখানে হয় । ইহার কারণ ইহাই নয় কি যে আমরা মনে করি বাঙালীর ছেলে সহজেই বাংলা শেখে, তাহাকে সে বিদ্যা শিখাইবার জন্ত কোন বিশেষ প্রণালী আবিষ্কার করিবার প্রয়োজন নাই। শিক্ষা লইয়া যাহাঁদের কারবার তাহাঁদেরই যখন এরূপ মনোভাব, তখন বাইরের লোকের মনোভাব যে এইরূপই হইবে তাহাতে বিচিত্র কি ? ইংরেজীর পরিবর্তে যখন মাতৃভাবকে শিক্ষার বাহনরূপে ব্যবহার করিবার প্রস্তাব হয়, তখন প্রতিপক্ষের একদল বলিমাছিলেন যে তাহার দ্বারা ইতিহাস, ভূগোল প্রভৃতি বিষয়গুলি শেখার বাধা ঘটিবে। কাশী-বিশ্ববিদ্যালয়ে আক কিছুদিন ধরিয়া হিন্দী শিক্ষার বাহনরূপে ব্যবহৃত হইতেছে । সেখানকার এক জন শিক্ষককে বর্তমান ছাত্রগণের ভূগোলের সম্যক জ্ঞানের অভাব সম্বন্ধে বলিতে গিয়া শুনিলাম ইংরেজী বাহনৰূপে ব্যবহার না-করার ফলেই এইরূপ ব্যাপার ঘটিতেছে, কিন্তু ব্যাপার কি সতাই তাই ? সহজবুদ্ধিতে মনে হয় যে মাতৃভাষার সাহায্যে অধীত বিদ্যা সহজে আয়ত্তাধীন হয় ; যখন তাহার অন্তথা ঘটে তখন দোষ মাতৃভাষাকে বাহনরূপে ব্যবহার করার নহে, অন্ত কিছুর । মাতৃভাষায় অধিকার যদি সম্পূর্ণ না হয় তষে তাহীর সাহায্যে যে-কোন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা যায় তাহাই অসম্পূর্ণ থাকিয়া যায় । বাংলা দেশেও ছেলেমেয়েদের বাংলা ভাষায় অধিকার সম্পূর্ণ না হইলে বাংলা ভাষাকে শিক্ষার বাহনরূপে ব্যবহার করার উদেখা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হইবে, একথা আজ আমাদের স্মরণ করা প্রয়োজন হইয়া উঠিয়াছে। সুতরাং শিক্ষার ক্ষেত্রে আজ আমাদের সর্বাগ্রে বিচার করা আবগুক কি ভাবে SeBR কোন প্রণালী অবলম্বন করিলে বাঙালী ছাত্রছাত্রীদের মাতৃভাষার জ্ঞান পুর্ণ হইবে । প্রসঙ্গক্রমে মনে পড়িয়া গেল ইংরেজী ভালভাবে নুতন প্রণালীতে শিথাইতে গিয়া বিফল হইয়া চাকা ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ ডাঙ্কার মাইকেল ওয়েষ্ট বাংলা শিখাইবার উপযুক্ত প্রণালী উদ্ভাবন করিবার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। তাহার মতে মাতৃভাষার অধিকার পূর্ণ হয় নাই বলিয়া বহু ছাত্রছাত্রী ইংরেজী ঠিকমত শিখিভে পারে না । কথা উঠিতে পারে বাংলা বখন পড়ান হয় তখন নিশ্চয়ই কোন-না-কোন প্রণালী অনুস্থত হয়, অবশু সেটা হয়ত প্রাচীন ধরণের হইতে পারে । বাংলা যে পড়ান হয় সে-বিষয়ে সন্দেহ করিবার অবকাশ নাই, কিন্তু সেটা যে কি ভাবে পড়ান হয় সেটিও এই সঙ্গে মন করা প্রয়োজন । কিছু দিন আগে পর্য্যন্তও কোনমতে কাজ-সীরা হিসাবে বাংলা পড়ান হইত এবং বাংলা পড়াইবার জন্ত শিক্ষকের পক্ষে সংস্কৃত জ্ঞান ছাড়া অন্ত কোন গুণ থাকা প্রয়োজন মনে করা হইত না । বিহারে ( তখনও বিহার বাংলার অন্তর্গত ছিল ) এক কলেজে পণ্ডিতমহাশয় বিহারী হইয়াও সংস্কৃতজ্ঞের অধিকারের দাবিতে বাংলার অধ্যাপক ছিলেন । আজি যে হঠাৎ এই ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়াছে এরূপ মনে করিবার বিশেষ কোন কারণ নাই । আজও পর্য্যন্ত বিদ্যালয়ের পরীক্ষার ইংরেজীর জন্ত দুইটি প্রশ্নপত্র হয়, কিন্তু মাতৃভাষার জন্ত একটি প্রশ্নপত্রই ( তাহার স্বরূপ বিবেচনা নাই করিলাম ) যথেষ্ট বলিয়া গণ্য করা হয় । সে কথা যাক কিন্তু যখন একথা অস্বীকার করিলে চলে না যে সাধারণতঃ বাংলা কোনমতে কাজ-সীরা হিসাবেই পড়ান হয় ; এই অবস্থায় সেই সঙ্গে ইহাও মানিয়া লইতে হয় ষে যেনতেন-প্রকারেণ বাংলা শিথাইবার পিছনে যদি কোন প্রণালী থাকে তাহা হইলে তাহাও সেই প্রকার ; তাহার কোন নির্দিষ্ট ধারা বা গতি ও সুনির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য नहि । . র্যাহারা বলেন, প্রণালী একটা অাছে তবে সেটা প্রাচীন ধরণের, তাহদের প্রশ্ন করা বায় যে প্রাচীন ধরণের সেই প্রণালীটি কি ? তাহার মধ্যে কোন সুস্পষ্ট ধারা আছে