পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশক্ষণঢ় অামার দেখা লোক وتك صوانية এক জ্ঞাতি ভ্রাতা অক্ষয় বাবুর সতীর্থ ও বন্ধু ছিলেন, তিনি অক্ষয় বাবুর প্রতিবেশী, তাহার বাটীতে আমি সৰ্ব্বদাই যাইতাম, সেই স্বত্রে অক্ষয় বাবুর সহিত আমার পরিচয় হয়। বঙ্গালা লেখার প্রতি আমার বাল্য কাল হইতে বেffক ছিল বলিয়া অক্ষয় বাবু আমাকে স্নেহ করিতেন । আমিও আমার সেই জ্ঞাতি ভ্রাতার বাটীতে গেলেই অক্ষয় বাবুর বাটত যাইতাম । সেই সময় আমি প্রায় গঙ্গাচরণ বাবুকে দেখিতে পাইতাম । গঙ্গাচরণ বাধু সবজজ ছিলেন ; আমি যখন ত:হরি ব:টীত যাইতাম, তখন তিনি পেন্সন লইয়া ব:টীত বসিয়া ছিলেন। গঙ্গাচরণ বাবুর দেহের বর্ণ খুব কাল ছিল আর ধবধপে সাদা খুব বড় গোফ ছিল । বন্ধুমহলে গঙ্গাচরণ বাৰু খুব সুরসিক, উপস্থিত বক্তা ও অমুদে বলিয়া পরিচিত ছিলেন । তাহার রসিকতা সম্বন্ধে চুচুড়ার প্রাচীনগণের মুখে এখনও অনেক গল্প শুনিতে পাওয়া যায়। দুই একটি গল্পের কথা বলিলে পাঠকগণ র্তাহার স্বভাবচরিত্র-সম্বন্ধে কতকটা আভাস পাইবেন। এক দিন কলিকাতা হইতে এক ভদ্রলোক অক্ষয় বাবুর সঙ্গে দেখা করিতে চুচুড়ায় গিয়াছিলেন। তিনি অক্ষয় বাবুর বট চিনিতেন না, জিজ্ঞাসা করিয়া কদমতলায় উপস্থিত হইলেন এবং একটা বাটীর বাহিরের রোয়াকে একজন কৃষ্ণকায় পক্ক গুম্ফ ভদ্রলোককে বসিয়া থাকিতে দেখিয়া fজজ্ঞাসা করিলেন, “মহাশয়, অক্ষয়চন্দ্র সরকারের বাড়ি কোথায় ?” সেই বৃদ্ধ বলিলেন—“কই এখানে অক্ষয়চন্দ্র সরকারের কোন বাড়ি আছে বলিয়া ত জানি না ।” আগন্তুক র্তাহার কথা শুনিয়া বলিলেন, “আমাকে এক জন ভদ্রলোক বলিলেন যে, এই গলির ভিতর পুকুরের পূর্ব পাড়ে রেয়োকওয়াল বাড়ি। এইটাই ত পুকুর-পাঁড়ে সেই রোয়াকওয়ালা বাড়ি—তবে তিনি কি ভুল বলিলেন?” বুদ্ধ বলিলেন, “এ বাড়ি ত আমার । আপনি সেই ভদ্রলোককে জিজ্ঞাসা করিয়া আয়ন দেখি, অক্ষয়চন্দ্র সরকারের বাড়ি এইটা কি না ?” বুদ্ধের কথা শুনিয়া আগন্তুক পূৰ্ব্বোক্ত ভদ্রলোকের নিকট গিয়া বলিলেন, “আপনি যে বাড়ির কথা বলিলেন, সেই বাড়িতে এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক বসিয়া আছেন। তিনি বলিলেন সেই বাড়ি তাহার, অক্ষয় বাবুর বাড়ি কোথার, তাহা তিনি বলিতে পারিলেন না” এই কথা শুনিয়া সেই ভদ্রলোক হাসিয়া বলিলেন—“তিনি ঠিকই বলিয়াছেন, সেটার্তাহীরই বাড়ি, তিনি অক্ষয় বাবুর পিতা গঙ্গাচরণ বাবু। আপনি গিয়া গঙ্গাচরণ বাবুর বাড়ির সন্ধান জিজ্ঞাসা করুন।” আগন্তুক তখন পুনরায় সেই বুদ্ধের নিকট আসিয়া বলিলেন, “মহাশয় গঙ্গাচরণ সরকার মহাশয়ের কি এই বাড়ি ? আমি তাহার পুত্র অক্ষয় বাবুর সহিত সাক্ষাৎ করিতে কলিকাতা হইতে আসিতেছি ।” এই কথা শুনিবামাত্র বৃদ্ধ সাদরে তঁহিকে অভার্থিত করিয়া বৈঠকখানায় লইয়া গেলেন এবং একজন ভৃত্যকে অক্ষয় বাবুকে সংবাদ দিতে বলিলেন। অক্ষয় বাবু আসিলে বৃদ্ধ বলিলেন, “অক্ষয়, এই ভদ্রলোক কলিকাতা হইতে আসিয়াছেন । আমাকে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন—অক্ষয়চন্দ্র সরকারের বাড়ি কোথা ? এ পড়িায় তোমার যে কোন বাড়ি আছে, তা ত জানি না, তাই বলিলাম আমি জানি না।” পরে সেই আগস্তুকে বলিলেন—“যত দিন আমি বঁচিয়া আছি, তত অক্ষয়চন্দ্র সরকার দিন এ বাড়ি আমার, মৃত্যুর পর এই বাড়ি অক্ষয়ের হইবে।” একদিন গঙ্গাচরণ বাবুর এক পুরাতন বন্ধু তাহার সঙ্গে