পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Nつb-8 "dবামী "f6 >NE Ba দেখা করিতে আসিয়া কথায় কথায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “অক্ষয়ের সন্তানাদি কি ?” শুনিয়া গঙ্গাচরণ বাবু বলিলেন— "একটু পরে বলিব।" এই কথা শুনিয় তাহার বন্ধু সবিস্ময়ে বলিলেন, “একটু পরে বলিবে ? তার মানে ?” গঙ্গাচরণ বাপু বলিলেন, “বউমার প্রসব বেদন উপস্থিত হইয়াছে, শীঘ্রই সন্তান হইবে । হইলে বলিব কয়টি পুত্র, কয়টি কণ্ঠা। এখনই বলিলে আলীর পনর কুড়ি মিনিট পরে নুতন করিয়া সংবাদ দিতে হইবে । তার চেয়ে একটু অপেক্ষা করিয়া দেখিয়া বলা ভাল।” বৃদ্ধদিগের মুখে শুনিয়াছি, গঙ্গাচরণ বাবু আর একবার বড় রঙ্গ করিয়াছিলেন। একদিন চুচুড়ীর বাজার গিয়া দেখিলেন এক জয়গায় লটারি বা গুৰ্ত্তি খেলা হই তছে । আমরা বাল্য বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কালে দেখিয়াছি, চন্দননগর, চুচুড়া প্রভৃতি স্থানে শীত কালে প্রায়ই খেজুরে গুড়ের কলসী লটারি হইত, একজন দোকানদার দশ আiন, বার আনা, দিয়া এক কলসী গুড় কিনিস্থ। তাহার উপর একটা ঝুন নারিকেল রাখিয়৷ সেই গুড় ও নরিকেল লটারি করিত । টিকিটের মুল্য দুই পয়সা বা এক আনা । দুই এক ঘণ্টার মধ্যে এক টাকা বা দেড় টাকার টিকিট বিক্রয় হইয়া যাইত । তাহার পর লটারি অরম্ভ হইত। একটি ছোট বালক একটা হাড়ির ভিতর হইতে টিকিট এক এক থানি করিয়া টানিয়া বাহির করিত। টিকিট ক্রয়কারীদের নাম একজন লোক চীৎকার করিয়া বলিয়া যাইত, আর বালক যে টিকিট বাহির করিত, তাহ সাদা হইলে সমবেত জনতা উচ্চৈঃস্বরে “ফরসা” বলিয়া চীৎকার করিয়া উঠিত। বাজারে গুড়ের লটারি হইতেছে দেখিয়া গঙ্গাচরণ বাবু এক আনা দিয়া এক থানা টিকিট কিনিয়া সেই খানেই অপেক্ষা করিতে লাগিলেন । যথা সময়ে লটারি আরম্ভ হইল । একটা নাম ডাকের সঙ্গে সঙ্গে বালক টিকিট বাহির করিতে লাগিল, আর সকলে “ফরসা” বলিয়৷ চীৎকার করিয়া উঠিতে লাগিল। গঙ্গাচরণ বাবুর নাম ডাকের সঙ্গে সঙ্গেই বালকটি একখানা সাদা টিকিট বাহির করিল। তাহা দেখিয়া সকলে চীৎকার করিয়া বলিল, “ফরসা” তাহা শুনিয়াই গঙ্গাচরণ বাৰু বলিয়া উঠিলেন, “আমার এক আনা পয়সা বৃথা নষ্ট হয় নাই। চিরকাল লোকে আমাকে কালে বলিয়া আসিয়াছে, আজ বাজারমৃদ্ধ লোক একবাক্যে বলিয়াছে—‘গঙ্গাচরণ ফরসা ।” গঙ্গাচরণ বাবুর একমাত্র পুত্র, সাহিত্যাচাৰ্য্য বাবু كية إيه অক্ষয়চন্দ্র সরকার মহাশয়ের নাম বাঙ্গীলা সাহিত্যসমাজে সুপরিচিত । আমি পূর্বেই বলিয়াছি যে, আমি চুচুড়ায় আমার জাঠতুত দাদার বাড়িতে গেলেই প্রায়ই অক্ষয় বাবুর বাড়িতে যাইতাম। আমার যৌবনের প্রারম্ভ হইতে এই বুদ্ধ বয়স পর্যন্ত যে কতবার অক্ষয় বাবুর কাছে গিয়াছি, তাহার সংখ্যা হয় না । সুতরাং তাহার সম্বন্ধে দুই-চারি কথায় কিছু বলা অসম্ভব। আমি বাল্যকাল হইতে সাহিত্যচর্চা করিতাম, লিখিতাম, সেই জন্ত তিনি আমাকে বড়ই স্নেহ করিতেন। “হিতবাদীতে” যখন আমি “বুদ্ধের বচন” লিখিতাম, তখন তিনি আমাকে সৰ্ব্বদাই বলিতেন যে “হিতবাদী হাতে পাইলেই আগে দেখি যে তোমার "বৃদ্ধের বচন' আছে কিনা ?” পত্নীর চিকিৎসার জন্ত তিনি কিছু দিন কলিকাতায় মৃঙ্গাপুর ষ্ট্রীটে একটা বাড়ি ভাড়া লইয়া বাস করিয়াছিলেন । এখন সেই বাড়িটা