পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sire তাহার কাছে গেলে তিনি জলযোগ না করাইয়া ছ:ড়িতেন না। র্তাহার শয়নকক্ষে খাটের নীচে একটা ছড়িতে মিষ্টায় থাকিত, পাচ সাতখান রেকৰীি ও গ্লাস থাকিত । তিনি স্বহস্তে রেকারীতে খাবার সাজাইয়া হাতে দিতেন, কু’জ হইতে জল গড়াইয়া দিতেন এবং স্বহস্তে পান সাজিয়া দিতেন। একদিন আমি তাহাকে বলিলাম, “আপনি নিজে পান সজেন কেন ?” তিনি বলিলেন “আমি যে উড়ে রে । মেদিনীপুরের উড়ে । দেখিল নি, উড়েরা নিজের হাতে পান পেজে খায়।” তিনি একদিন আমাদের বাটীত আসিয়া প্রায় তিন চারি ঘণ্টা বসিয়াছিলেন । সে দিন তাহীকে দেখিবর জঙ্গ আমাদের বাড়িতে বহু লোকের সমাগম হইয়াছিল । তিনি খুব মজলিসি’ লোক ছিলেন। নানা প্রকার গল্প করিয়া খুব হাসাইতে পারিতেন । র্তাহীর গল্প শুনিয়া সকলে হাসিয়া উঠিত, কিন্তু তিনি হাসিতেন না । স্বৰ্গীয় ভূদেব বাবুর সহিত অনেক বিষয়ে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের যেমন মিল ছিল, তেমনই আবার অনেক বিষয়ে পার্থক্যও ছিল । উভয়েই ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের সস্তান, হিন্দুর আচার-ব্যবহারে নিষ্ঠাবান, অগাধ পণ্ডিত এবং অসাধারণ জ্ঞানী ছিলেন, উভয়েই শিক্ষণ-বিভাগে উচ্চ কার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন, কিন্তু বাহ আকৃতি ও প্রকৃতিতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য ছিল। ভূদেব বাবু ছিলেন উজ্জ্বল গৌরবর্ণ, শুভ্ৰশ্মশ্র ও গুম্ফধারী দেখিলে সহসা বৃদ্ধ ইহুদী বলিয়া মনে হইত, আর বিদ্যাসাগর মহাশয় ছিলেন শু্যামবর্ণ, খৰ্ব্বাকৃতি, শ্মশ্ৰ-গুম্ফ এবং মস্তকের চারিদিক মুণ্ডিত, সেকালের সাধারণ ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের মতই বেশভুষা ও আকৃতি । ভূদেব বাবু ছিলেন অত্যস্ত গম্ভীর প্রকৃতি এবং অল্পভাষী— এক কথায় "রাশভারী” লোক, আর বিদ্যাসাগর মহাশয় ছিলেন খুব মজলিসি, আমুদে, সৰ্ব্বদাই নানা প্রকার গল্প করিতেন, সকলকেই একেবারে ঘরের ছেলে করিয়া লইতেন । বিদ্যাসাগর মহাশয়ের কাছে কেহ অনাবশ্যক অতিরিক্ত মৃন্মান প্রদর্শন করিলে তিনি বিরক্ত হইতেন । যেদিন মামি বাবার সঙ্গে প্রথমে তাহার কাছে যাই, সেদিন বিদ্যাসাগর মহাশয় ধুমপান করিয়া বাবার হাতে ছ’কা আগমণর দেখা লোক 8ර්‍මO দিলেন । বাবা হু কাটি লইয়া রাথিয়া দিলে তিনি বলিলেন, “সে কি ? তুমি তামাক খাও না ?” বাবা ধুমপান করিতেন কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সম্মুখে ধূমপান করিতে কুষ্ঠিত হইলেন । বিদ্যাসাগর মহাশয় বাবাকে নীরব দেখিয়া বলিলেন, “বুঝেছি, তুমি তামাক খাও । আমাকে দেখে ‘সমীহ করা হচ্ছে ? অামি ও-সব জ্যাঠামী ভালবাসি না । তামাক খাওয়া যদি অন্তীয় মনে কর, তবে খাও কেন ? যদি অঙ্গায় ব’লে মনে না-কর, তবে আমার সামূনে থাবে না কেন?” এই বলিয়া বাবার হাতে ছক তুলিয়া দিলেন এবং তাছার সম্মুখে ধুমপান করাইলেন । প্রায় এক বৎসর কাল যে মহাপুরুষের সান্নিধ্যলাভের সৌভাগ্য আমার হইয়াছিল, তাহার সম্বন্ধে দুই-এক কথায় কি বলিব ? সেকালের আর এক জন মুণ্ডপ্রসিদ্ধ সাহিত্যিককেও আমি বাল্যকালে দেখিয়ছি । তাহার নাম বাবু, রাজকৃষ্ণ মুপোপাধ্যায়