পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রণৰণ জাপানে কয়েক দিন উপরে উঠে গেছে তাইতে একটি ছোট্ট গাড়ী ক’রে ঝুলতে স্কুলতে যখন উপরে উঠতে লাগলাম এবং পায়ের নীচে পৃথিবী ক্রমেই আরও নীচে সরে যেতে লাগল, তখন যে মনটা খুব নিশ্চিন্ত ছিল তা ঠিক বলভে পারি না । সেদিন কুয়াস ছিল, অত উচুতে উঠেও নীচের দৃপ্ত ভাল ক’রে দেখতে পাওয়া গেল না । কোবে থেকে আমরা জাপানের পুরাতন রাজধানী কিয়োটোয় এসে তিন দিন ছিলাম। ওখানে হোজু নদী, বিওয়া লেক, বুদ্ধ-মন্দির, মন্দির-সংলগ্ন জাপানের সৰ্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ ঘণ্টা ইত্যাদি দেখলাম। কিয়োটো থেকে কিছু দূরে নারা’ বলে জায়গাটি দেখে আমাদের খুব ভাল লেগেছে। সেখানে প্রকাও বাগানে আট শত হরিণ ছাড়া আছে, তার ইচ্ছামত যেখানে-সেখানে চরে বেড়ায়, মানুষ দেখে একটুও ভয় করে না। বাগানের মধ্যেই বড় দুটি মন্দির ; একটি হ’ল বুদ্ধদেবের—অত বড় বুদ্ধমূৰ্ত্তি নাকি আর কোনখানে নেই । আর একটি হ’ল শিল্টো— যেখানে জাপানীরা পূৰ্ব্বপুরুষদের ও মহাত্মাদের স্মরণ ক’রে তাদের পুজা করে। শিনটোতে কোনো মূৰ্ত্তি নেই—একটি বেদীর উপর অনেক ফুল, মেমবাতি, ধুপ ও পুজার উপকরণ সাজান, ও মাঝে মাঝে একটি আরসি রাখা । ওরা বলে নিজেদের মুখ সেই আরসিতে দেখে ওরা পূজা করে। তার মানে বোধ হয় সকল মানুষের মধ্যে যে শাশ্বত ভগবান বাস করেন ঠারই পূজা। তার পর আমরা মিয়োনোসিতায় গেলাম, সেখান থেকে বরফে-চাকা ফুজি পাহাড়ের চমৎকার দৃপ্ত পাওয়া ধtয় । ফুজি পাহাড়ের নীচেকার অৰ্দ্ধেক অংশ ক'লে, সেখানে এতটুকুও বরফ নেই-তার পর হঠাৎ একেবারে সাদা বরফ মুরু হয়েছে ; চুড়ার উপরিভাগ পৰ্য্যস্ত একেবারে ধে-ধোওয়া সাদা । আশা করি ছবি দেখে কিছু বোঝা *াবে। আমরা টোকিওতে থাকতে জাপানের বিখ্যাত নিক্‌কো পাহাড় দেখতে গিয়েছিলাম। জাপানে একটা কথা আছে ষে জাপানে এসে যে নিকৃকো দেখে নি সে কিছুই দেখে নি–কিন্তু সত্য বলতে কি, আমার তে নিকৃকে অপেক্ষ ফুজি পাহাড়ের দৃপ্তই বেশী ভাল লেগেছে। তবে আমরা যে-সময়ে নিকৃকো গিয়েছিলাম সে-সময়ে ‘রোপ ওয়ে” বেশী ঠাণ্ডা থাকাতে চার দিকে বরফ জমে ছিল, ঝরণার মুখ তখনও খোলে নি—শুনেছি সেই ঝরণাই হ’ল নিকৃকোর গৌরব । - মিয়োনোসিত থেকে আমরা জাপানের বর্তমান রাজধানী টোকিওতে যাই । টোকিও এখন শুনছি পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রধান নগর হয়ে উঠেছে । তার বড় বড় রাস্তার ছ-পাশে সাজান দোকানের সারি, তার ট্রাম, স্বাস, ট্যাক্সির ভিড়, তার জনসাধারণের ব্যস্ততার পরিমাণ ইউরোপের বড় বড় শহরের সমতুল্য। জাপানের বর্তমান রাজধানীকে ওরা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শহর ক’রে তুলবে, এই ইচ্ছায় ওদের খরচ এবং চেষ্টার অন্ত নেই। পৃথিবীর সকল দেশেই কোন-না-কোন সময়ে উন্নতির যুগ অাসে—জাপানের এখন সেই যুগ। ওরা এখন ঝড়ের বেগে ছুটে চলেছে। পঞ্চাশ বৎসর পূর্কের লামান্ত জাপান আজ নিজের উন্নতির পরিমাণে জগতকে বিস্মিত ক’রে দিয়েছে। কেমন