পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন-চরিত ঐরামপদ মুখোপাধ্যায় কালের কষ্টিপাথরে নামের একটু চিহ্ন জাকিয়া রাখিবার অল্প-বিস্তর দুর্বলতা প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই দেখা যায় । যে-নামের সন্মুখে ও পশ্চাতে আসন্ন অন্ধকারের বিভীষিকা— ব্যাকুল দুটি বাহুতে ক্ষীণতম আলোক-চিহ্ন ধরিবার আগ্রহ তার কতই না তীব্র, বহুদিনকার বিশ্বত-প্রায় একটি ঘটনায় সে-কথা আজ বার-বীর মনে হইতেছে । পাড়ার কোন প্রতিষ্ঠাবান প্রতিবেশী একদিন বিশেষ করিয়া ধরিলেন,—তার এক দূর-সম্পৰ্কীয় আত্মীরের জীবনী লিখিয়া দিতে হইবে। আত্মীয়টি ধনী, সুতরাং জীবনী প্রকাশ করিবার অধিকার তার ষথেষ্টই । তিনি থাকেন পশ্চিমের কোন একটা বড় শহরে ; দীর্ঘদিন বাংলা ছাড়া । স্বাস্থ্যের অজুহাতে, কি মন্থনীতির অনুসরণে সে-কথা আমার প্রতিবেশী বলিতে পারিলেন না, কিন্তু তিনি প্রতিজ্ঞ করিয়াছেন, সংসার-সাগরের ঢেউ থাইয়া অনর্থক নাকাল হইবেন না । এইবেলা সময় থাকিতে তীরলগ্ন তরীখানিতে উঠিয়া বসিয়া যাত্রার আয়োজন সম্পূর্ণ করিবেন। গিয়াছেন দেবদেবীবহুল তীর্থস্থানে, সৌধের পাদদেশে সুরধুনী ; নিত্যস্নান, পুঙ্গাপাঠ ও দেবদেবী-দর্শনে খেয়া-পারের আয়োজন ভালভাবেই চলিতেছে । কিন্তু যাত্রার পূৰ্ব্বে এম্পারের যাত্রীদের কিছু না দিলে চিত্তে র্তাহার শান্তি জন্মিতেছে না। আত্মপরায়ণ সাধুর মত পৃথিবীকে বঞ্চিত করিয়া নিজের দুঃসাধনার দ্বারা ব্রহ্মের সামৗপ্যলাভকে তিনি পরম স্বার্থপরের কাজ মনে করেন, তাই এ-পারের অধিবাসীদের উপহার দিবার জন্ত আত্মজীবনীর প্রয়োজন । वर्ष उँॉब्र व८थहेहे जां८छ्, नांहे णिनि-कूलणउीं । তাহাতেও কিছু যায় আসে না। এমন বহু দৃষ্টান্ত তাহার সমুখে আছে—সামান্ত পত্রের দুটি ছত্র লিখিতে ঘৰ্ম্মাক্তকলেবর বনী-জ্বলালও হলেখক ৰলিয়া সাহিত্য-জগতে অমর হইয়। রহিয়াছেন। দরিদ্র লেখকের সন্ধানে তাই আত্মীক্ষকে লিথিয়াছেন, সামান্ত কয়েকটা টাকার জন্ত নামের মোহ ষে অনায়াসে তাগি করিতে পারে ! আত্মীয়টি বুদ্ধিমান। কবে এক সময়ে বিশেষ অনুরোধে পড়িয়া তার কোন এক কন্সার বিবাহে কয়েকটি পদ্য লিখিয়া দিয়াছিলাম—সে-কথা তিনি ভোলেন নাই। হাতের কাছে অনুগৃহীত লেখক, দরিদ্র, অতএব নামেই বা তার প্রয়োজন কি ? কিছু অর্থ ব্যয় করিলেই. সুতরা তিনি আসিয়াছেন । বলিলেন—দেখুন চিঠি, এখন উদ্ধার করুন আমায়। চিঠি পড়িলাম। র্যাহার জীবনী লিখিব তিনি লেখেন নাই, লিখিয়াছেন তাহার স্ত্রী । লিখিয়াছেন – “বাবা, এই ত শরীর, কবে আছি—কবে নাই ; উনিও দিন দিন অপটু হইয়া পড়িতেছেন। এত-কটি চালের ভাত••• ইত্যাদি—( আহার-তত্বের কথা - ছাড়িয়া আসল কথা পাড়িয়াছেন ) আমার ইচ্ছা ওঁর জীবনী একটা ছাপাই । লেখা হবে পয়ার ছন্দে ( অর্থাৎ পদ্যে )। যেমন কৃত্তিবাসী রামায়ণ বা কাশীরাম দাসের মহাভারত আছে অতখানি বড় করিতে পারিলেই ভাল হয়। খরচ অবশু যা পারি পাঠাইব ; তুমি যদি একটু চেষ্টা করত:••• " অতঃপর কুশল প্রশ্ন ও আশীৰ্ব্বাদে সুদীর্ঘ পত্রের সমাপ্তি। পড়া শেষ হইলে তিনি বলিলেন—পড়লেন ত? কিছু "ইয়েও-দেবেন বলেছেন। দেখুন না চেষ্টা ক’রে যদি লেগে যায় ত মন্দ কি ! আমার সাংসারিক অভাবের এই ইঙ্গিতটুকু অবশু গারে মাখিলাম না । একটু ভাৰিয়া বলিলাম—লেখা যায়, কিন্তু, খাটতে হবে অনেক । মানে অনেক কিছু সংগ্রহ করতে হবে। তার জন্ম থেকে আজ পর্ব্যস্ত যত কিছু ছোট-বড় ঘটনা কোনটাকেই বাদ দেওয়া চলবে না ।