পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ প্রবাসী বাঙালীর বর্তমান সমস্যা ও তাহার সমাধান 8S কৃতী সন্তানদের সম্মিলিত প্রধত্বে এখনও আমরা প্রবাসে আমাদের জাতীয় মৰ্য্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করিতে পারি। তবে তাহ আর সম্পূর্ণ পুরাতন ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে না । পুরাতন ভিত্তির আংশিক সংস্কারেরও প্রয়োজন হইবে । এ-সম্বন্ধে দুই-একটি সাধারণ উপায় দিগদর্শন উদ্দেশ্রে যে-ভাবে আমি চিস্তা করিয়াছি তাহ। নিবেদন করিতেছি। প্রবাসে আমাদের জাতীয় মর্য্যাদা যথাসম্ভব পুনঃস্থাপিত করিতে হইলে দেখিতে হইবে—প্রথমতঃ, তাহার ভিত্তি কি কি উপাদানে গঠিত হইয়াছিল ; দ্বিতীয়তঃ, তাহার মধ্যে কোন উপাদান সম্পূর্ণভাবে বা আংশিক ভাবে বিনষ্ট হইয়াছে এবং তাহার কারণ কি ; তৃতীয়তঃ, তন্মধ্যে কোন লুপ্ত উপাদানের পুনরুদ্ধার এখনও সম্ভবপর ; এবং চতুর্থত, যে বিনষ্ট উপাদানের পুনরুদ্ধার অসম্ভব তাহার অভাব অন্ত কোন উপায়ে পূরণ করা যাইতে পারে কি না । প্রবাসী বাঙালীর পুৰ্ব্বগৌরবের ভিত্তির প্রধানতঃ পাচটি উপাদান ছিল । প্রথমতঃ, তাহীদের উচ্চতর শিক্ষা ও সংস্কৃতি । দ্বিতীয়তঃ, তাহদের অনেকের রাজকীয় , উচ্চপদ অধিকার, এবং ব্যবহারজীবী, চিকিৎসক, শিক্ষক ও ব্যবসায়ীরূপে ও অন্তান্ত কাৰ্য্য-পরিচালনায় সবিশেষ কৃতিত্ব • প্রদর্শন ও প্রতিপত্তিলাভ । তৃতীয়তঃ, প্রবাসী বাঙালীদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি। চতুর্থত, বাঙালী নেতাদের স্ব স্ব প্রবাসভূমির স্থানীয় প্রাক্তন জনসাধারণের শুভকামনা ও লোকহিতকর অনুষ্ঠানের উদ্দেপ্তে নিঃস্বর্থ পরিশ্রম ও ঐকান্তিকী . প্রচেষ্টা । পঞ্চমতঃ, প্রবাণী বাঙালীদের অনেকের চরিত্রবল, গুtয়পরায়ণতা ও সাধুত । এইরূপে জাতীয় সংস্কৃতির প্রভাবে ও প্রবাসী প্রখ্যাতনামা বাঙালী নেতাদের সাধনা ও চরিত্রবলে বাঙালীর যে জাতীয় গৌরব প্রবাসেও গড়িয়া উঠিয়াছিল অনেকে আশঙ্কা করেন তাহ বৰ্ত্তমানে বিলুপ্ত হইবার উপক্রম হইয়াছে । কিন্তু যদিও তাহ সম্প্রতি কিছু স্নান হইবার লক্ষণ দেখা যায়, আমার বিশ্বাস যে, এই মানিমা সাময়িক অবস্থা মাত্র। চেষ্টা করিলে আমাদের আপাততঃ-নিম্প্রভ জাতীয় গৌরব পুনরায় দ্বীপ্যমান হইতে পারিৰে। আক্ষেপের বিষয়, আমাদের অনবধানত:বশতঃ অনেক fদন হইতে তাহার ভিত্তির এক অংশ অলক্ষ্যে কীটদষ্ট হইতেছিল। কৃতকৰ্ম্ম প্রবাসী বাঙালী নেতৃগণের কীৰ্ত্তি ও বাঙালীর জাতীয় সংস্কৃতির অভিমান কিয়ুৎপরিমাণে সাধারণ প্রবাসী বাঙ্গালীকে স্ফীত করিয়া তুলিয়াছিল এ-কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করা যায় না । প্রবাসী বাঙালীদের নেতারা স্থানীয় অধিবাসীদের শুভকামনা করিয়া আসিতেছেন সত্য, কিন্তু সাধারণ প্রবাসী বাঙালীর মধ্যে অনেকে পরিহাসচ্ছলে অথবা অনবধানতাপ্রযুক্ত সময়ে সময়ে ‘ছাতুথোর’, ‘মেড়া’ প্রভৃতি অবজ্ঞাস্থচক বিশেষণ প্রয়োগ করায় স্থানীয় লোকের অস্তরে ব্যথিত ও ক্লিষ্ট হইতেন। যত দিন বিহারী, হিন্দুস্থানী, উড়িয়া প্রভৃতি অপরাপর জাতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষায় বাঙালীর সমকক্ষ হইতে পারেন নাই, তত দিন এই অবজ্ঞা ও কল্পিতলাঞ্ছনা অগ্রাহ অথবা নীরবে সহ করিতেন এবং প্রবাসী বাঙালী যে আপন যোগ্যতাবলে উচ্চপদ অধিকার করিতেন তন্দ্বারা তদেশের অযথা ‘শোষণ' (exploitation) করা হইতেছে এরূপ মনে করিয়া প্রচ্ছন্ন ঈর্ষ্য অস্তরে পোষণ করিতেন । কিন্তু ক্রমে যখন ইংরেজী উচ্চশিক্ষার প্রভাবে র্তাহাদের কেহ কেহ যোগ্যতায় বাঙালীর প্রায় সমকক্ষ হইয়া উঠিলেন এবং রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্ব স্ব প্রদেশে উচ্চরাজকাৰ্য্য ও রাজনৈতিক ক্ষমতা পরিচালনে সমর্থ হইলেন তখন অতীতের পুঞ্জীভূত অবজ্ঞা ও কল্পিত লtঞ্ছনার স্মৃতি কল্পনসাহায্যে অতিরঞ্জিত হইয়া র্তাহীদের অনেকের মধ্যে বাঙালী-বিদ্বেষে পরিণত হইল । ফলে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কোন কোন বিষয়ে প্রবাসী বাঙালীদিগকে নির্যাতন বা অস্ততঃ Mitratfo otifsw (racial discrimination) exis অন্তায় ব্যবহার গহ করিতে হইতেছে । ইহাতে অক্ষযোগ করিবার বিশেষ কারণ আমাদের নাই । কালের বিধানে এইরূপ ক্ষমতা হস্তাস্তরিত হওয়া অবশুম্ভাবী। আর যে অন্তায় ব্যবহারে আমরা বৰ্ত্তমানে ক্লিষ্ট তাহার জন্ত আমরাও আংশিকভাবে দায়ী এ-কথা অস্বীকার করা যায় না । অধুনা প্রবাসী বাঙালীর পুৰ্ব্বগৗরবের উপরিউক্ত উপাদানগুলির মধ্যে প্রথম তিনটি অtংশিকভাবে বিনষ্ট