পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

द्वश्वं প্রবাসী ৰাঙালীর বর্তমান সমস্যা ও তাহার সমাধান 8いご এ-পর্য্যস্ত অক্ষুণ্ণ রাথিয়াছেন, সম্ভব হইলে তাহ আরও উজ্জ্বলতর করিতে হইবে। প্রবাসের জনসাধারণের শুভকামনা করা ও তাহীদের হিতকল্পে পূৰ্ব্বনেতৃগণের প্রবর্তিত অনুষ্ঠানগুলির শ্ৰীবৃদ্ধিসাধন করা এবং তদুদেশ্যে অধিকতর ফলপ্রদ উপায় অবলম্বন করা নিতাস্ত অবিশ্রাক হইয়াছে । এতাবৎকােল প্রবাসী নেতারাই সাধারণতঃ এই পরহিতব্ৰতে মনোযোগ দিতেন ; সাধারণ প্রবাসী বাঙালী এ-সম্বন্ধে বিশেষ চিন্তা করিতেন না বা করিবার অবসর পাইতেন না । কিন্তু আমার মনে হয়, বর্তমান সময়ে শিক্ষিত প্রবাসী বাঙালী মাত্রেরই সুবিধা ও অবসর করিয়া লইয়া এই সম্বন্ধে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। এইরূপ কৰ্ম্মীর সংখ্যা এবং কৰ্ম্মক্ষেত্রের পরিসর বৃদ্ধি করিতে পারিলে প্রচুর সুফলপ্রাপ্তির আশা করা যায় । স্থানীয় লোকদের সহিত সম্ভাব বৃদ্ধির নূতন উপায় উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করিয়াছি । কিরূপ নুতন বা অতিরিক্ত উপায় অবলম্বন করিলে সুফল ফলিতে পারে তাহা বিভিন্ন প্রদেশে ও বিভিন্ন স্থানে পারিপাশ্বিক এবং সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করিয়া তত্ৰত্য বাঙ্গালী সমাজের নেতৃগণকে নির্ণয় করিতে হইবে। এই সম্বন্ধে দুই-একটি সাধারণ উপায় যাহা আমার মনে হয় তাহ নিবেদন করিতেছি 1. বলা বাহুল্য, প্রবাসী ও স্থানীয় উভয় সমাজের সমভাব-ও-চিন্তা-সম্পন্ন ব্যক্তিদের সম্মিলন ও সহযোগিতা পরস্পরের মধ্যে সম্ভাব বৃদ্ধির অন্ততম প্রশস্ত উপায় । এই প্রসঙ্গে দুই প্রকার সহযোগিতার কথা সকলেরই মনে হইবে । প্রথমতঃ, উভয় সমাজের লোকসেবকেরা সঙ্গবদ্ধ হইয়। জতিনির্বিশেষে লোকসেবার উপায় উদ্ভাবন ও কৰ্ম্ম পরিচালন করিতে প্রবৃত্ত হইলে স্বতঃই একত্ববোধ প্রবুদ্ধ ও বৃঢ়ীভূত হয়। দ্বিতীয়তঃ, উভয় সমাজের সাহিত্যসেবীদের সম্মিলিত সংসদ এই উদ্দেশ্যে বিশেষ ফলপ্রদ হয়। সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক ও সুকুমারুকলা-" সেবীদের একত্র সম্মিলনে প্রাদেশিক ভেদ বা জাতিভেদ জ্ঞান অস্তৰ্হিত হয়, এই সত্যের উপলব্ধি আমাদের সকলেরই আছে । এই জন্ত উভয় সমাজের সাহিত্যসেবিগণ সম্মিলিত হইয়া সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন প্রভৃতির আলোচনা ও তত্বানুসন্ধানে পরস্পরের সহায়তা ও সহযোগিতা করা উভয় সমাজের মধ্যে সম্ভাববৃদ্ধির একটি প্রকৃষ্ট উপায় । বিশেষতঃ, নৃতত্ব, সমাজতত্ত্ব ও জাতীয় ইতিহাসের অনুশীলন এই উদ্দেশু সাধনের পক্ষে অতীব উপযোগী । ইহাতে কেবল যে পরস্পরের মধ্যে সম্ভাব বৃদ্ধি হইবে তাহা নহে, পরস্পরের অভিজ্ঞতা ও সংস্কৃতি হইতে পরস্পরের দীন ও প্রতিদানে প্রবাসী বাঙালী সমাজ ও প্রাক্তন অধিবাসী সমাজ উভয়ই উপকৃত ও সমৃদ্ধ হইবেন । ব্যায়াম প্রভৃতি অন্তান্ত বিষয়েও দুই সমাজের মধ্যে সভৰবদ্ধ হইয়া উন্নতির চেষ্টা, সৌহার্দ্যবৃদ্ধি ও ঐক্যস্থাপনের সহায়তা করিতে পারে । আস্তপ্রাদেশিক সম্ভাব বৃদ্ধির পক্ষেও বৃহত্তর বঙ্গের মধ্য দিয়া বৃহত্তর ভারত গঠনের পক্ষে নৃতত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব, ও জাতীয় ইতিহাসের তত্ত্বানুসন্ধান কিরূপে সাহায্য প্রদান করিতে পারে সেই সম্বন্ধে দুই-এক কথা নিবেদন করিয়া এই প্রবন্ধ শেষ করিব । দুইটি পরিবারের মধ্যে কুটুম্বিতা বা বিশেষ আত্মীয়তা স্থাপন করিতে হইলে, পরস্পরের কুলশীল ও পারিবারিক ইতিহাস অনুসন্ধান করার রীতি আমাদের মধ্যে প্রচলিত আছে । এই নিয়ম পালন যে পরম কল্যাণকর ইহা অামরা স্ব স্ব পারিবারিক অভিজ্ঞতা হইতে উপলব্ধি করিয়া থাকি । দুইটি পরিবারের মধ্যে আত্মীয়তা সম্বন্ধ স্থাপন করিতে হইলে এই নিয়ম যেমন প্রযোজ্য, দুইটি সমাজের মধ্যেও সেই সম্বন্ধ স্থাপন করিতে হইলে তাঁহা সমভাবে প্রযোজ্য, ও অতীব শুভফলপ্রদ হইবার কথা । প্রবাসী বাঙালী যদি স্থানীয় প্রাক্তন অধিবাসীদের সমাজের কুলপঞ্জী বা জাতীয় ইতিহাস ও সমাজতত্ত্ব, জাতীয় চরিত্র ও প্রকৃতি, রীতি-নীতি, সংস্কার, ধৰ্ম্মবিশ্বাস ও আচার-ব্যবহার ও জীবনের ও সমাজের আদর্শ সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞানলাভ করিতে পারেন, তাহা হইলে পরস্পরের সৌহার্দোর পথ সুগম হইতে পারে । প্রাদেশিক সমাজতত্ত্ব ও জাতীয় ইতিহাস আলোচনা করিয়া স্থানীয় সমাজের সহিত বাঙালী সমাজের কোনূ কোন বিষয়ে ঐক্য বা সাদৃপ্ত আছে ও কোন কোন বিষয়ে পার্থক্য আছে তাহ সম্যক হৃদয়ঙ্গম করিতে