পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২৮ প্রবাসী ১৩৪২ করতে দাও –বুঝলুম ছেলেটাকে নেশায় ধরেছে, দিনকতক | —তাহ’লে আপনাদের কোন আপত্তি— — অfপত্তি ? বিলক্ষণ ! এ ত আমাদের সৌভাগ্য— শ্ৰীযুক্ত সুবিমল রায় সৰ্ব্বসম্মতিক্রমে নিযুক্ত হইলেন । ঘুরুক 어 সপ্ত ডিঙ্গি মধুকর নয়, মাত্র তিনটি । চদ সওদাগর গিয়াছিলেন বাণিজ্য করিতে, সুবিমল যাইতেছেন—ই এও বাণিজ্য বইকি ? চাদ দিয়েছিলেন সাগর পাড়ি, হবিমল ঘুরিবেন থল নলি বিল আর নদীতে । বাদল শেষ হইয়াছে—নদী ভরা কুলে কুলে । ঙ্গেলের এপন হইতেই কাজে লাগিয়াছে—শিবপুরের জেলেরা পনর হাজার টাকায় কাজল বিল ইজারা লইয়াছে । ইহুীদের সাহস কত । শিবপুরে ত পনর ঘর জেলেই নাই। আর এদের মূলধনই বা কি ? অীর জমিদারটা কি বোকা । “দি মীন-বৰ্দ্ধন কোম্পানী লিমিটেড" বেশী টাকা দিতে চাহিয়াছিলেন, জমিদার রাজী হন নাই, বলেন— আজ তিন পুরুষ এরাই ইজারা নিচ্ছে-- এদের বঞ্চিত করতে চাই নে । – এরা যে টাকা দেবে তার গ্যারটি কি ? --এদের মুখের কথা—আজ পর্যস্ত কথার খেলাপ হয় নি ; এরা মুৰ্থ, ধৰ্ম্ম মানে, আইন জানে না । জমিদারের খাজনা—দিতেই হয় । তিন বছর পার হ’লেই তামাদি—এটা এখনও শেখে নি । বfপ দিতে না পারে ছেলে দেবে। এ বৎসর লোকসান হয় দেবে না, বে-বছর লাভ হয় যুঙ্গ মৃদ্ধ শোধ করবে । রায়-বাহাদুর বেশী হাকিলেন । জমিদfর হtfলয়। বলিলেন—লোভ দেখবেন না ब्रॉभू-वङ्क्ष्ञ, अभि छभिमांब्र-भङ्ॉसन नक्के । এর পর আর আলাপ চলিল না। সুবিমল যাইতেছেন এই কাজল বিলে । বঙ্গরীয় সুবিমল। বজরাটি ইংরেজীতে যাকে বলে— ওয়েল ফানিশ ড । সামনের কামরাটি আপিস ; একটি ডেক চেয়ার, একথানি টেবিল, একটা গ্রামোফোন, একটা হারমোনিয়ম, একটা টাইপরাইটার, দুই প্যাক তাস, একটা ষ্টেভি, একটা কেট্‌লি, তিন-জোড়া চায়ের পেয়াল পিরিচ, একটা টি-পট, এক রীম কাগজ । দ্বিতীয় কামরা শয়ন-কক্ষ--পর্দা-টাঙানো, ভিতরে কি আছে দেখা যায় না । দুই নম্বর একটি বড় ডিঙ্গি—ইহাতে আছেন হরিপদ সেন, স্থবিমলের সঙ্গে এক ক্লাসে নয়, এক কলেজে পড়িতেন, বেণীদূর এগোতে পারেন নি, সম্প্রতি “দি মীন-বৰ্দ্ধন কোম্পানী”র ষ্টেনেগ্রাফার, এক পাড়ীতেই বাড়ি, ভাল গাইতে পfরেন, ভাল টাইপ করিতে পfরেন । তিন নম্বর ডিঙ্গি—রজুই-ঘর বলা চলে, একটি বামুন ও একটি চাকর অাছে। বিশাল বটবৃক্ষ—মহীরুহ। বহুদূর হইতে দেখা যায়। বটগাছকে কেন্দ্র ধরিয়া ক্ষুদ্র একটি চর—চারি দিকে জল, ঘত দুর দৃষ্টি যায়, দূরে দিগন্তরেখায় বুক্ষের সারি । চরে সত জেলে আডড গাড়িয়াছে—সংখ্যায় দুই শত : বলিক, কিশোর, যুবক, প্রৌঢ়, বৃদ্ধ । কেহই স্থির বসিয়া নাই ; কেহ জাল বুনিতেছে, কেহ বাশ চাচিতেছে, কেহ কঞ্চি কাটিতেছে, কেহ বাটুন বাটিতেছে, কেহবা মাছ কুটিতেছে, কেহ বা রান্না করিতেছে, কেহই অলস বসিয়া নাই, ধে ঘার নির্দিষ্ট কাজে ব্যস্ত । স্ববিমলচন্দ্র এই চরে অবতরণ করিলেন । দুই শত জেলে, কৃষ্ণকায়, নিরক্ষর, বাঙfলী—একটা ব্যবসায়ে রত ঃ একমন, একপ্রাণ, তর্ক নাই, দাঙ্গা নাই, মামলা নাই, মোকদ্দমা নাই, আপিস নাই, কেরানী নাই—আশ্চর্য্য! স্ববিমলচন্দ্র ও র্তাহার সহকারী চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছেন, কেহ বলে না—আসুন, বনুন: কেহ প্রশ্ন করে না—কি চান, কাকে চান। সবাই মুখ নত করিয়া আপন আপন কাজে রত। কেহ কেহ বা মুখ তুলিয়া একবার চাহে, কিন্তু সে মুহূর্তের জন্ত মাত্র—আবার যে নার কাজে লাগিয়া যায় । ছোট ছোট বালকগণও ইহাদের দেখিয়া কৌতুহল প্রকাশ করে না । অগত্যা সুবিমলই উপধাচক হইয় এক জনকে বলিলেন— আমি তোমাদের সর্দার মাতব্বরের সঙ্গে একটু আলাপ করব।