পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vße প্রবাসী ১৩৪২ “নর্ডিক” জাতি-স্থলভ blond অর্থাৎ নুগেীর চেহারার একটা আদর আছে—নীল চোখ, সোনালী চুল, লম্বী ছিপছিপে চেহারা। কালে চুলওয়ালা মেয়ে আর পুরুষদের কাছে এই সোনালী চুল একটা কাম্য বস্তু ; অনেকে তাই রঙ ক'রে চুল সোনালী রঙের ক’রে নেয় । নর্ডিক জাতের ছোট ছেলেপুলেদের মাথার চুল অনেক সময়ে সাদা হয়, flaxen বা শনের রঙের চুল একে বলে ; বড় হ’লে এই শনের মুড়ে চুল সোনালী হ’য়ে যায়। হঙ্গেরীয় নীচুনী জনকয়েক হাইড্রোজেন পরিক্সাইড লাগিয়ে চুল সাদা ক’রে বেড়াচ্ছে । এদের পোষাকআসকি চলনের ঢঙ সমস্ত দেখে এরা কি শ্রেণীর মেয়ে তা বুঝতে বেশী দেরী লাগে না । আমাদের সেকেও ঈকনমিক ক্লাসে সীতার কেটে নাইবার জন্ত একটা চৌবাচ্চ ক’রে দিয়েছে । একটা খোলা ডেকের অৰ্দ্ধেকটা নিয়ে, কাঠের পাটাতন জুড়ে একটা খুব বড় বাক্স বা সিন্দুক হ’য়েছে, এটা প্রায় একমানুষ-সমান উচু, আর এতে ঘোষাৰ্ঘেষি না করে কুড়িপচিশ জন লোক দাড়াতে পারে । এই সিন্দুকটার ঢাকনা নেই ; এইটেই হ’ল চৌবাচ্চ ; এইটের ভিতরে একপ্রস্থ খুব মোট তেরপল দিয়ে চে-ক দেওয়া হ’য়েছে আর তার পরে পাইপে ক’রে সমুদ্রের জল এনে এটা ভৰ্ত্তি করা হ’য়েছে । এই হ’ল swimming pool. গরমের দিন, সারা দিনই প্রায় সাতারের পোষাক প'রে মেয়ে পুরুষ এই জলে দাপাদাপি মাতামাতি ক’রছে ; দেহের সৌষ্ঠব দেখাবার অবকাশ প্রচুর এতে, কিন্তু এই নীচুনীর দল, আর তাদের অনুগত পুরুষেরা, আর অন্ত মেয়ে আর পুরুষ যাত্রী জনকতক স্নানের ব্যাপারটাকে একটু অশোভন ক’রে তোলে। অবশ্য ইউরোপীয় জীবনে এ জিনিষ খুবই সাধারণ, তাই এদের করিও চোখে তেমন লাগে না । জাহাজে ছোট ছেলেমেয়ে গুটিকতক আছে, তাদের মধ্যে একটি চীনে খোকা আর একটি নরউইজীয় খুর্কী, এদের দেখলে সবাই আদর করে। চীনে শিশুটি পাঁচ ছয় মাসের মাত্র, টেবো-টে:বা গাল, মোটাসোটা, চোখ নয় যেন দুটি রেখা টানা ; ,কোলে নিলেই কোলে আসে ; ইটালীয়ান খালাসী, ভারতীয় মেয়ে বারা যাচ্ছে তারা, অন্ত যাত্রী, সবাই পেলেই একটু আদর করে । একটি ছোট চীনে মেয়ে এর ঝি বা আয়ার মত আছে, থোকাকে কোলে নিয়ে ডেকে উঠলে হয়। নরউইজীয় খুকীটি একটি আস্তর্জাতিক শিশু ; এর বাপ নরউইজীয়, মা রুষ ; বাপ আর মায়ের ভাষা আলাদা, কিন্তু দু-জনে ইংরিজিই বলে, শিশুটিও তাঁর বাপ-মার কাছে কেবল ইংরিজি শিখছে। বাপ-মা, জু-জনেই অতি সুন্দর চেহারার—বাপ একেবারে থাটি Nordic বা উত্তর-ইউরোপীয় ঢঙের, দীর্ঘকায়, ছিপছিপে গড়ন, সোনালী চুল, নীল চোখ, সুন্দর মুখশ্ৰী ; মা-টও তেমনি দীর্ঘাকৃতি, তৰঙ্গী-স্বামী স্ত্রী দু-জনের চেহারায় মানিয়েছে সুন্দর ; আর ধরণ-ধারণ দেখে মনে হয়, খুব সুধী স্বামী স্ত্রী এরা ; মেয়েটিও তেমনি ফুটফুটে ; বছর-ধানেক কি বছর-দেড়েক বয়সের হবে । মেয়েটির নাম Rita—রীতা, টল্‌তে টলুতে ডেক দিয়ে যখন চলাফেরা করে, তখন সকলেই ওকে কোলে ক’রে চটকাতে, আদর করতে চায় । আমি কাগজে জন্তু-জfনওয়ারের ছবি একে দিয়ে এর সঙ্গে একদিন ভাব ক’রে ফেললুম ; তখন আর ছাড়বে না, খালি বলে, আরও একে দাও। কতকগুলি রুষ মেয়ে আর পুরুষও যাচ্ছে, এরাও বেধি হয় নাচের দলের । সাধারণতঃ এরা প্রত্যেকে তিনটেচারটে ক’রে ভাষা জানে, কাজেই একটু পরিচয় না হ’লে কে কি তা জানা যায় না। এদের বিষয়ে জানতে, এদের সঙ্গে ভাব করতে অবস্ত ইচ্ছা হয়, কিন্তু এরা যে শ্রেণীর, যে স্তরের লোক তাতে এদের সঙ্গে মিশতে একটু বাধোবাঁধো লাগছে । জাহাজের এই শ্রেণীর যাত্রীদের মধ্যে লক্ষ্যণীয় মানুষ প্রায় কেহই নেই। এক অতি মোটা রোমান কাথলিক পাদ্রী যাচ্ছে ; এই গরমে সৰ্ব্বাঙ্গে একটা কালে রঙের পশমের কাপড়ের বৃহদtয়তন আলখাল্পীয় ঢেকে স্মেকিংকমের একটা কোণে বসে থাকে। লোকটা কি ক’রে পাদরীর কাজ চালায় তা জানতে কৌতুহল হয় ; চোখেমুখে জ্যোতি নেই, নোংরা, মুখে অনেক দিন আস্তর কামানোর দরুন খোচা-খোচা দাড়ী । গলায় একটা শিকল, তা থেকে একটি রূপায় তৈরী ছোট কুশ, তাতে যীশুর মূৰ্ত্তি । পাদরীটি জাতে পোলীয় শুনে আলাপ