পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭8ર তিন বার খেলা হ’ল ; যাদের নম্বরের ঘোড়া পাশার দানের জোরে আগে উৎরে গেল, তাদের মধ্যে সব টিকিটের টাকাটা (জাহাজের খানসামাদের জন্ত শতকরা দশ ক’রে কেটে নিয়ে ) বেঁটে দেওয়া হ’ল । দাড়ীওয়ালা জামান-হুইসটির বড় সাধ, একবার সে-ও একটা ঘোড়ার নম্বর ধ’রে । কিন্তু কোনও কারণে সে বডড ইতস্ততঃ করতে লাগল, টিকিট কিনি, কি না কিনি । যেন অনুচিত কাজ করতে যাচ্ছে, এই ভাবে টিকিটের টেবিলের কাছে একবার ক’রে যায়, আবার কি ভেবে হ’টে আসে । তাঁর এই অনিশ্চিত ভাব, আর সঙ্গে সঙ্গে একদাড়ী মুখের মধ্যে সংশয় আর ভয় মেশানো এক অপূৰ্ব্ব ভঙ্গী, এটা আমাদের ক'জনের কাছে বড়ই মজার লাগছিল । দুটো রেস সে এই ভাবে টিকিট না কিনে কাটিয়ে দিলে, কিন্তু যথন দেখলে যে প্রথম দুটো রেসে যারা জিতলে তারা এক শিলিং বা তিন লির দিয়ে একব'র ৩৫ লির অার একবার ২৭ লিরা করে জিতলে, তখন তৃতীয় রেসের বেলা আর থাকতে পারলে না, দমক একথানা টিকিট কিনে ফেললো। বোধ হয় তার দিকে চেয়ে আমাদের হাসিটা আর বাঙলা অ’র হিন্দীতে আমাদের মন্তব্যটা একটু জোরেই হ’চ্ছিল, তাই সে আমাদের দিকে একটু মিট-মিট ক’রে তfকাতেও লাগল । শেষে এই রেসের ফল যখন জানানে! হ’ল, তখন দেখা গেল, তার পয়সাটা নষ্টই হয়েছে । তাঁর জন্ত হাসির মধ্যেও অামাদের একটু দুঃখ হচ্ছিল । ঈকনমিক সেকেণ্ডের ভারতীয় যাত্রীদের মোটামুটি তিন শ্রেণী-ত ফেলা যায়—এক, যারা বয়সে বৃদ্ধ, মাতব্বর, বিলেতে যাচ্ছেন বেড়াতে বা দেখতে, সঙ্গে সঙ্গে কোনও বিষয়ে নেতুিন আলো পেতে ; এ রকম জন ফু-তিন আছেন, তার পর আমাদের মতন, আধা বয়সের, হয়তো একটা বিশেয উদ্দেশু নিয়ে চলেছি, ইউরোপেল হালচাল অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে একটু পর্যালোচনা ক’রে দেখাও যাবে ; আর তিন-নান বয়সের ছাত্র। যারা পরীক্ষা দেবে—তা অতি তরুণ থেকে অধিবুড়ে পর্যন্ত, ইউনিভাটির ছোটখাটাে ডিগ্রি বা ডিপ্লে'মা থেকে বিজ্ঞান কি চিকিৎসাশাস্ত্র কি অর্থনীতিতে উচ্চকোটির গবেষণা ক’রে নাম করা যাদের উদ্দেশ্য ৷ মেয়েদের মধ্যে কতকগুলি ছাত্রী-পদবাচ্য, প্রৰণসী SNరిg|R আর বাকী স্বামী বা পিতা বা ভ্রাতার সঙ্গে ইউরোপে তীর্থদর্শনে চলেছেন । এদের মধ্যে, ভারতীয় ধাত্রীদের সভায় দ্বিতীয় পর্যায়ের লোকেদেরই পসার বেশী, কারণ এর বেশীর ভাগই “পারদর্শী”—অর্থাৎ কিনা সাগরপীরের দেশ দর্শন ক’রে এসেছেন । আমাদের এই দলে বসে বসে আড্ডা দেওয়া, রাজা উজীর মারা হয় খুব, তবে খুব গভীর কথা উচু কথা নিয়ে জটলা করার স্থান এই শস্তীর সেকেও ক্লাসের বৈঠকগুলি ঠিক নয়। এখানে বড় দরের সমস্ত নিয়ে ওজনদার মন্তব্য হয় না, তবে দিলখোলা হাসি আর জীবনের নানা বিযয় অবলম্বন ক’রে টিপ্পনী কাটা আছে । একটা বিষয়ে আমরা ভারতীয় যাত্রীরা বেশ আরামের সঙ্গে চ’লেছি,—এই জ্বtহাজে পোষাকের কড়াকড় নেই। ইউরোপের লোকেরা অনেক বিষয়ে বেশ সংস্কারমুক্ত, কিন্তু পোষাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারে তাঁর বড়ই গতানুগতিকতার অনুসরণ করত। বিগত লড়াইয়ে তাদের মধ্যে পরিচ্ছদ বিষয়ে কতকগুলি সংস্কার এনে দিয়েছে । শর্ট বা হাফপ্যাণ্ট তার মধ্যে একটি, নরম কলার আর একটি। পোষাক বিষয়ে কানুন মেনে চ’লতেই হবে, না হ’লে সেটাকে আমাৰ্জ্জনীয় সামাজিক পাপ ব’লে ধরা হবে, এ রকম ধারণা এখনও ইংরেজের মধ্যে কিছু কিছু আছে। পোষাকের কড়াকড় বজায় রাখা, বিশেষতঃ সন্ধ্যার নিমন্ত্রণ-সভায় অভিজাত বা পদস্থ ইংরেজের কাছে তার জাতিধৰ্ম্মের এক অনপনেয় নিশানা । ইংরেজ ফৌজী অফিসার, বড় পদের অস্ত কৰ্ম্মচারী,—স্বদেশে বিদেশে যেখানেই থাকুক না কেন, হ-তিন জন একত্র পাকলেই আর তার জন্ত লড়াই হাজামা হুজুতের মতন অন্ত কোনও বাধা না ঘটলে, ঈভনিং ড্রেসের ফোট। আর ছাপ সৰ্ব্বঙ্গে মেখে তবে নৈশ তোজে বসবে,— নইলে জাত যাবে। সৰ্ব্বাঙ্গে বিভূতি মেখে ফোটা কেটে ছাপ মেরে খালি ভারতীয় গোড়া হিন্দুই বসে থাকে না ; এ ছাপ ফোট বিভূতি কাপড়-চোপড়ের কড়াকড়ি নিয়মকে অ'শ্রয় ক’রে অন্ত জগত বা অন্ত ধৰ্ম্মের লোকেদের মধ্যেও দোর্দণ্ড প্রতাপে—বোধ হয় আমাদের ছাপ-ফোট বিভূতির চেয়ে আরও জোরের সঙ্গে—রাজত্ব ক’রছে । বিগত মহাযুদ্ধ এসে সব ওলটপালট করে দিলে। কম কাপড়ের,