পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V8b বসলে আমারই কতকগুলো জামাকাপড় মেরামত করতে । বল তোমাকে কি শাস্তি দেওয়া যায় ?” সকালের ব্যাপারটা মনে পড়িতেই অরুণার অভিমান শতধা হইয়া উঠিল । কহিল, “আমার সেবাকে তুমি তে। অত্যাচারই মনে কর তাই—” “ন গো, তা মনে করি নে। আমাদের বাগানে রোজ সকালবেলায় সই যে একটুখানি গোলাপী রঙের স্থলপদ্ম ফোটে দেখেছ তো ? তোমার সেবীকে আমি ঠিক তাই ভাবি, কেবল কুষ্ঠিত হই নিজের অধোগ্যতা ভেবে ।" "তুমি কেবল কাব্য ক’রে কথা বলতেই শিখেছ, তা-ই বদি না হবে তাহলে সকলবেলায় আমাকে না-জানিয়ে মায়ের মহলে যেয়ে চা খেয়ে এলে, আর যা তোমার পক্ষে খুব অপকারী সেই সব খেলে । একবারও ভাবলে না আমি এই নিয়ে কত ভেবেছি, কত পড়েছি । জানো শরীর ভাল রাখতে হ’লে আমাদের কোন কোন শ্রেণীর ভিটামিন কতথানি ক’রে খাওয়া দরকার । ধর আধ-সেদ্ধ ডিমের মধ্যে শাকসব্জী সেদ্ধ, অপরিষ্কার মোট আটার রুটির মধ্যে—” সস্তোষ একটুখানি হাসিয়া কহিল, “মা তোমার মত বিদুষী নন, অত হাইজিনও জানেন না, অত পড়াশোনাও নেই, তবুও তিনি যে মা একথাটা ভুলে ঘাচ্ছ কেন ? আমি র্তার যত্ন-করে-র"াধা থাবার না খেলে ঠীর মনে কতখানি লগত তা কি বুঝতে পার না ?” অরুণা অক্ষুট স্বরে বলিয়া ফেলিল, “ আর জেনেই বা কি করব, অজ্ঞ সেকেলে মেয়েমানুষদের মনের ধারা বদলানো যায় না, কিন্তু তুমি---” - সস্তোষের চোথের কোমলতা শুকাইয়া উঠিল, অরুণার ধ্ৰুত হাতখান সে ছাড়িয়া দিয়া কহিল, “আর আমি কি, আমিও সেই অজ্ঞ সেকেলে মেয়েমানুষের ছেলে । অরুণী, নিজের মনের মাঝে একটু বিনয় রেখে যদি বুঝতে শিখতে মানুষকে ভtহলে বুঝ:ত---” অরুণ কঁদি-কঁদ হইয়া কহিল, “মায়ের বিষয়ে কোন কথা হ’লেই তুমি যেন থেপে ওঠ । তোমার সমস্ত যুক্তি বুদ্ধি লোপ পেয়ে যায়। কিন্তু আমি তার উপর কখনও কোন ফুৰ্ব্বব্যহার করি নি। আমি কেবল বলতে চাইছিলুম, যতই স্নেহ থাক তার সঙ্গে জ্ঞান আর শিক্ষার দরকার । প্রবাসী $NరిgR এই যে সেবারে তোমার টাইফয়েডর সময় দু-জন নাগ আর আমি দিবারাত্রি তোমার কাছে থাকতুম ! ঘণ্টায় ঘণ্টায় ওষুধ, ফলের রস, টেম্পারেচারের চাট সমস্তই আমি নিয়মিত ক'রে যেভুম। অত মনের উদ্বেগ সত্বেও । বিস্তু তোমার মা দিন আর রাত চব্বিশ ঘণ্টা অনাহারে উপবাসী হয়ে ঠাকুর-ঘরে আর তুলসীতলায় পড়ে থাকতেন। কোনই কাজে আসতেন না ।” সন্তোষ কাছারির পোষাক বদলাইতে বদলাইতে কহিল, “তুমি বুঝতে পারবে না অরুণা ।” “কি বুঝতে পারব না ?” “এই বা নিয়ে আমার সঙ্গে তর্ক ক’য়ছ। তুমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি পেয়ে মেয়েদের মধ্যে ফ’ষ্ট’ হয়ে বি-এ পাস ক’রেছ । তার পরে যদি এম-এ পড়তে, তার পরে যদি পি-আর-এস হ’তে তবুও বুঝতে পারতে না । কিন্তু একদিন হয় তো বুঝবে---” “তাই না কি ? কৰে বুঝব?” সহসা অরুত্রিম হাস্তে অরুণার মুখ উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল । বলিল, “বাও যাও, আর ঝগড়া করতে হবে না। কোন দিকে যে আমাকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছ এইবারে অনেকটা বুঝতে পারছি।” “বুঝতে পরিছ ? আচ্ছা দাড়াও, আরও ভাল ক’রে বলছি।” তাহার কানের কাছে মুধ লইয়া গিয়া মিষ্টস্বরে কহিল, “কৰে বুঝতে পারবে জান, যেদিন মা হবে।” অরুণা এবারে সত্যসতাই অভিমান ভুলিয়া গিয়া হাসিয়া ফেলিয়া কহিল, ”আচ্ছা, থাম। কিন্তু চা খাবার অতই যদি লোভ, একটিবার মুথ ফুটে আমাকে বললেই পারতে। এবেল তুমি আসবার আগেই আমি লিপ্টন থেকে সবচেয়ে ভfল চা আনিয়ে রেখেছি, যখন ও-জিনিষ না খেয়ে থাকতেই পারবে না, তখন যতদূর সম্ভব ভাল ক’রে তৈরি করে দিই। তুমি হাত মুখ ধুয়ে পাথর তলায় একটুখানি বসে, আমি পাঁচ মিনিটে হাজির করে निधिह ।” ు মিনিট-পনর পরে স্বামীর সম্মুখে চা ও খাবাবে