পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভীরে চোর হইতে উঠিয়া জ্যাঠামশাই বলিলেন–জায়— বারাদায় গিয়া পকেট হইতে দেশলাই বাহির করিয়া বলিলেন—এই নে, পোড়া, নিজে হাতে পোড়–নিজে পোড়ালে চিরকাল মনে থাকবে-ভাবছিল কি ? কি আর ভাবিব ? ফল্‌ করিয়া একটা মৃদু আৰ্ত্তনাদ করিয়া দেশলাই-কাটি জলিয়া উঠিল ; তার পর যত ব্যথা, যত বেদনা, যত গোপন কথা খাতার পাতায় আবদ্ধ ছিল, সব জমাট ধোয়ার আকারে আকাশ-বাতাস প্লাবিত করিয়া দিল। নিজের চোখে সমস্ত দেখিলাম, কিন্তু যখন অসন্থ হইল ঘরে ছুটিা আসিলাম। মনে আছে : বালিশে মুখ গুজিয়া কতদিন ধরিয়া সে কি কান্না ! সেদিন পন্টু বলিয়া মাথায় হাত বুলাইয়া শাস্ত করিবার লোক ছিল না।... তার পর যবনিকা উঠিলে দেখা গেল ; শহরের রাস্তায় আসিয় দাড়াইয়াছি। কি একটা পর্বের উপলক্ষে আমার ছুটি—কৰ্ত্তাদের আফিস। তাড়াতাড়ি বাজার করিয়া ফিরিতেছিলাম ; এক হাতে সংসারের যাবতীয় দ্রব্য। আলু পেয়াজ হইতে আরম্ভ করিয়া কাপড়-কাচা সাবান, সমস্ত । আর এক হাতে আছে ঃ জীবন্ত শিঙ্গি, কই, আর আমাদের মত বাড়তি লোকেদের জন্য কুচো মাছ ! বাজার করিতে করিতে দেরি হইয়া গেছে । তাড়াতাড়ি বউবাজারের রাস্তাটা পার হইতেছিলাম । রাস্ত পার হইতে গিয়া ট্রাম লাইনে কেমন করিয়া এক পাটি জুতা লাগিয়া গেল। অতর্কিত এই বাধা পাইয়া একেবারে সোজা রাস্তার উপর উপুড় হইয়া পড়িয়া গেলাম। হঠাৎ কোথা দিয়া কি হইয়া গেল ; হাতের বাজার হাত হইতে পড়িয়া গিয়াছে। দেখি ; আমার চারি দিকে জালু পেঁয়াজ বেগুন রাস্তার উপর গড়াইতে গড়াইতে চলিয়াছে। দূরে অনেক দূর পৰ্য্যস্ত—যেখানেই চাই, দেখি ; গড়াইতে গড়াইতে অজানার উদ্দেশুে চলিয়াছে পেঁয়াজ আলু আর বেগুনের দল। আর ইহাজেরই পাশাপাশি কই, শিঞ্জি, মাছগুলি জুবিধা পাইয়া बौडिबज्र शरिङ छ्क कब्रिह्मांद्दछ । रङ्कुखौोझ छञ्चत्र éצף কিন্তু আর একটি জিনিষ নজরে পড়ে নাই। উপরে চাহিয়া দেখি ; দু-পাশে ট্রাম, বাস, লরি, সারবন্দী হইয়া দাড়াইয়া গেছে। দুপাশেই গাড়ীর সমুদ্র ; অজস্র চাক, চাকার পর চাকা, চাকার যেন আর শেষ নাই। জনতাবহুল কলিকাতার রাস্তায় হঠাৎ দুর্ঘটনা ঘটিয়া সমস্ত গতিপ্রবাহ এক নিমেষে স্তন্ধ করিয়া দিয়াছে। হঠাৎ সবাই হতবুদ্ধি হইয়া গিয়াছে—রাস্তার সমস্ত লোক, এবং গাড়ী ভরা সবাই আমাকে দেখিবার জন্ত উদগ্রীব। এক মুহুর্তে যেন আমি বিখ্যাত হইয়া উঠিয়াছি। অপরিচিত কাহারা আমাকে তুলিয়া রীতিমত বকিতে স্বরু করিল –খুব বেঁচে গেছ খোক, এমন অসাবধানে রাস্তান্থ চলতে আছে -“তোমার বাড়ি কোথায় ? কোথায় লেগেছে, দেখি ?--ইত্যাদি। তাহারাই আলু, বেগুন, পেয়াজ, মাছ কুড়াইয়া আবার পুটুলি বাধিয়া দিল । হঠাৎ পিছন হইতে কে ডাকিল—পণ্টফিরিয়া চাহিয়া দেখি—রাগুদি ! রাগুদি মটর হইতে নামিতেছে। এখন চেহারাও অনেক বদলাইয়া গিয়াছে। যেন আরও অনেক বড় হইয়াছে, মোটা হইয়াছে, রং ফরসা হইয়াছে ; রাণীর মত দেখাইতেছে। মাথা হইতে পা পৰ্য্যন্ত আমার আনন্দে শিহরিয়া উঠিল । কিছু কথা বলিতে পারিলাম না। রাগুদি কাছে আসিয়া সেই রকম মাথায় হাত দিয়া বলিল—কি রে, লেগেছে খুব ? কি যে হইল, বেশ ছিলাম, রাণুদিকে দেখিয়াই কাদিয়া ফেললাম। —কাদিস নে, নিজে পড়ে কি নিজে কাদতে আছে ?. তার পর আমার হাত ধরিয়া রাখুদি বলিল—জাম্ব— কাপড়টা ছিড়িয়া গিয়াছিল; সেই ছেড়া কাপড়ে দুই হাতে বাজার লইয়া মোটরে গিয়া উঠিলাম। চক্চক্ ককৃঝৰু করিতেছে মোটরটা ; জড়সড় হইয়া একদিকে বসিলাম ! রাগুদি বুলিল—ভাল হয়ে বোস– ভাল হইয়া বসিলাম । রাগুদি বলিল—অত অন্তমনস্থ হয়ে পথে চলতে আছে ? খদি গাড়ী চাপ পড়তিস্ ?